রশ্মি কাকে বলে, আপতিত রশ্মি কাকে বলে, প্রতিসরিত রশ্মি কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

রশ্মি কাকে বলে

উত্তরঃ যদি কোন রেখাংশের একটি প্রান্তবিন্দুর অবস্থান ঠিক রেখে অপর প্রান্তবিন্দুটি ইচ্ছেমত বাড়ানো যায়,তবে তাকে রশ্মি (Ray)বলে।

রশ্মি হলো রেখার একটি অংশ যা একটি প্রান্তবিন্দু থেকে শুরু হয়ে একদিকে অসীম পর্যন্ত চলতে থাকে। অন্যভাবে বলা যায়, রশ্মি হলো একটি বিন্দুর একদম সোজা চলার সঞ্চারপথ যা একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে উৎপন্ন হয়ে অসীম পর্যন্ত চলতে থাকে। একটি রশ্মি অর্ধ রেখা (half-line) বলে সুপরিচিত।

রশ্মির বৈশিষ্ট্য

উত্তরঃ জ্যামিতি তথা গনিতশাস্ত্রে রশ্মির ধারনা ব্যাপক। রশ্মি কাকে বলে এবং রশ্মির বৈশিষ্ট্য সমূহ : –

  • রশ্মির শুরু আছে শেষ নেই।
  • রশ্মির ধারনা রেখা থেকে এসেছে।
  • রশ্মির এক প্রান্তে তীর চিহ্ন দিতে হয় যাতে আরেক প্রান্তে নেই তাই এসব থেকে বুঝা যায় রশ্মির শুরু আছে শেষ নেই।
  • রশ্মির কোন প্রস্থ নেই ।
  • রশ্মির যদিও দৈর্ঘ্য আছে তবু রশ্মির নির্দিষ্ট কোন দৈর্ঘ্য নেই।
  • যে সকল বস্তুর শুরু আছে তবে শেষ নেই সেগুলোর নামের সাথে রশ্মি যোগ করে তাকে বলতে হয় যেমন, সূর্যরশ্মি, আলোকরশ্মি।
  • রশ্মির একটি মাত্র প্রান্তবিন্দু আছে।
  • রশ্মি নির্দিষ্ট স্থান থেকে শুরু হয়।

সরলরেখা ও রশ্মির মধ্যে পার্থক্য

সরলরেখারশ্মি
1. উভয় দিকে চিরকালের জন্য প্রসারিত1. রশ্মি এক বিন্দুতে শুরু হয় এবং চিরকাল এক দিকে চলতে থাকে.
2. এটির কোন শেষবিন্দু নেই এবং একটি বিন্দুর মাধ্যমে লাইনের সংখ্যা আঁকা যায়.2. এটির একটি শেষ বিন্দু রয়েছে এবং একই প্রাথমিক বিন্দু দিয়ে অনেকগুলি রশ্মি আঁকা যায়.
3. এর কোনো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই।.3. এর কোনো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই।
4. যেমন পেন্সিল, শাসক, কাগজ।4. যেমন টর্চলাইট, সূর্যরশ্মি, প্রজেক্টর, তীর।
5. প্রতীক: ———5. প্রতীক:  
সরলরেখা ও রশ্মির মধ্যে পার্থক্য

আপতিত রশ্মি কাকে বলে

উত্তরঃ যে রশ্মি প্রতিফলকের উপর এসে পড়ে তাকে আপতিত রশ্মি (incident ray) বলে। আলোক রশ্মি যে অংশ এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমের বিভেদতলে আপতিত হয়, তাকে আপতিত আলোকরশ্মি বলে।

যে রশ্মি প্রতিফলকের উপর এসে পড়ে তাকে আপতিত রশ্মি বলে।

প্রতিসরিত রশ্মি কাকে বলে

উত্তর: আলোক রশ্মি যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশ করে তখন অন্য মাধ্যমের রশ্মি কে প্রতিসরিত রশ্মি বলে ।

প্রতিফলিত রশ্মি কাকে বলে

উত্তর: আলোকরশ্মির যে অংশ আপতন বিন্দুতে আপতিত হয়ে দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে পুনরায় প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে, তাকে প্রতিফলিত আলোকরশ্মি বলে।

অবলোহিত রশ্মি কাকে বলে

উত্তরঃ বর্ণালিতে ১০-৩ মিটার থেকে ৪ × ১০ মিটার পর্যন্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো হলো অবলোহিত রশ্মি। একে অবলোহিত বিকিরণও বলা হয়। অবলোহিত বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষা সামান্য বড়। তবে একে খালি চোখে দেখা যায় না। সূর্য, কাঠের আগুন, ইত্যাদি অবলোহিত রশ্মি।

অবলোহিত রশ্মির ব্যবহার

  • মাংসপেশির ব্যথা নিরাময়ে;
  • অন্ধকারে ছবি তুলতে;
  • আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে;
  • চর্ম ও বাতের চিকিৎসায় এবং
  • শিল্পকারখানায়।

অতিবেগুনি রশ্মি কি

উত্তরঃ অনেক তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো থাকলেও আমরা শুধুমাত্র দৃশ্যমান অঞ্চলের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোক রশ্মি বা বর্ণালী দেখতে পাই । যার মধ্যে আছে পৃথক সাতটি বর্ণ । যেখানে সবচেয়ে কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হল বেগুনি আলোর এবং সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হল লাল আলোর ।

কিন্তু এই বেগুনি আলোর চেয়ে কিছুটা কম এবং আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোক রশ্মি হল- অতিবেগুনি রশ্মি বা Ultraviolet Radiation. এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ৪০০ ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকে । অতিবেগুনি সীমার আলোক রশ্মির মধ্যে অপেক্ষাকৃত যাদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি, তারা পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ভেদ করার ক্ষমতা রাখে ।

অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার

উত্তরঃ অনেকগুলো স্কেলের আলোক রশ্মি থাকলেও অতিবেগুনি রশ্মির নাম আমরা বেশিবার শুনে থাকি, কারণ এর রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার । যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

  • ২৫০-৩০০ ন্যানোমিটার: ফরেন্সিক বিশ্লেষণ, মাদক সনাক্তকরণ।
  • ২৭০-৩৬০ ন্যানোমিটার: প্রোটিন বিশ্লেষণ, ডিএনএ সংশ্লেষণ, ঔষধ আবিষ্কার।
  • ২৮০-৪০০ ন্যানোমিটার: কোষের চিকিৎসা-শাস্ত্রগত‌ ইমেজিং।
  • ৩০০-৩৬৫ ন্যানোমিটার: পলিমারের সংস্কার এবং মুদ্রণযন্ত্রের কালি।
  • ৩৫০-৩৭০ ন্যানোমিটারঃ মাছি বা পোকা আকৃষ্ট করতে ব্যবহৃত হয় ।
  • ৩০০-৩২০ ন্যানোমিটারঃ আলোক নিরাময় সংক্রান্ত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় ।
  • ৩০০-৩৬৫ ন্যানোমিটারঃ মুদ্রণ যন্ত্রের কালি বা পলিমার সংস্করণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৫০-৩০০ ন্যানোমিটারঃ ফরেন্সিক বিশ্লেষণ কিংবা মাদক শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৭০-৩০০ ন্যানোমিটারঃ প্রোটিন বিশ্লেষণ, ডিএনএ সংশ্লেষণ কিংবা ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৩০-৩৬৫ ন্যানোমিটারঃ জাতীয় পরিচয়পত্র শনাক্তকরণ, বারকোড কিংবা লেবেল শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৩০-৪০০ ন্যানোমিটারঃ ইলেকট্রনিক্সে আলোক সেন্সর তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।

অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব

উত্তরঃ অতিবেগুনি রশ্মির অনেক কল্যাণমূলক ব্যবহার থাকলেও এটি কিন্তু সরাসরি আমাদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকরও ।

  • অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের উপর পড়লে আমাদের ত্বকের ভিতরের কিছু কোষ ভেঙ্গে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় । ফলে ধীরে ধীরে ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হয়ে যায় । যে জন্য যারা সূর্য্যের আলোতে বেশি কাজ করে তাদের ত্বক দ্রুত কুচকে যায়, বলিরেখা পড়ে, ত্বকে দ্রুত বার্ধক্যের ছাপ পড়ে ।
  • ত্বকের আদ্রতা হারানো, মেসতা, ডার্ক স্পট ইত্যাদি হতে পারে এই অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ।

তবে বায়ুমণ্ডলের বেশ কিছু স্তর আমাদের সূর্য্যের এই অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা থাকে ।

প্রতিসৃত রশ্মি কাকে বলে

উত্তরঃ প্রতিফলকে বাধা পেয়ে যে রশ্মি আগের মাধ্যমে ফিরে আসে তাকে প্রতিসৃত রশ্মি বলে।

উপাক্ষীয় রশ্মি কাকে বলে

উত্তর: যেসব আলোকরশ্মী গোলীয় দর্পণের প্রধান অক্ষের সঙ্গে ক্ষুদ্র কোণ-এ মেরুর কাছে আপাতিত হয় তাদের উপাক্ষীয় রশ্মি বলে।

উপাক্ষীয় রশ্মির ক্ষেত্রে গোলীয় দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ ও ফোকাস দূরত্বের মধ্যে সম্পর্ক:-

উত্তর: গোলীয় দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ = r এবং ফোকাস দূরত্ব = f হলে,

উপাক্ষীয় রশ্মির ক্ষেত্রে r = 2f হবে।

তেজস্ক্রিয় রশ্মি কাকে বলে

উত্তরঃ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থেকে যেসব রশ্নি নি:সৃত হয় তাকে তেজস্ক্রিয়া রশ্নি বলে। যেমন গামা রশ্নি। এইসব রশ্নি যদি মানব দেহে প্রবেশ করে,তাহলে বিভিন্ন কোষ টিস্যু অসাভাবিক বৃদ্ধি ঘটায়। এর ফলে ক্যান্সার বা টিউমার হতে পারে। রোগ নির্ণেয় আর চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার হয়,খাদ্য দ্রব্য ও কৃষি তে এর ব্যবহার হয়। যখন সাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় তখন এটি ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়ায়। পরিত্রাণ পেতে এর সাভাবিক ব্যবহার এ যথেষ্ট।

তেজস্ক্রিয় রশ্মি তিন ধরণের : ১ ) আলফা রশ্মি ২ ) বিটা রশ্মি ৩ ) গামা রশ্মি

তেজস্ক্রিয় রশ্মির বৈশিষ্ট্য

  • তেজস্ক্রিয়তা হল নিউক্লিয় ঘটনা, এর সঙ্গে নিউক্লিয়াস বহির্ভূত ইলেকট্রনগুলির সম্পর্ক নেই।
  • 83-এর বেশি পারমাণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট মৌলগুলির তেজস্ক্রিয়তা দেখা যায়।
  • যে মৌলের পরমাণুর নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার অনুপাত 1 : 5-এর বেশি হয় সেই মৌলের তেজস্ক্রিয় ধর্ম দেখা যায়।

গামা রশ্মি কি, আলফা বিটা ও গামা রশ্মির বৈশিষ্ট্য

গামা রশ্মি (gamma ray) এক ধরনের তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ এবং এ রশ্মি আধান নিরপেক্ষ। ফরাসি রসায়নবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী পল ভিলার্ড ১৯০০ সালে গামা রশ্মি আবিষ্কার করেন। একে γ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

গামা রশ্মি একটি তেজস্ক্রিয় রশ্মি। ভারী এবং অস্থিত তেজস্ক্রিয় মৌল গামা রশ্মি নির্গত করে থাকে। এটি নির্গমনের সাথে কোনো প্রোটন, নিউট্রন বা ইলেকট্রনের সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি বা রূপান্তর ঘটে না।

গামা রশ্মির বৈশিষ্ট্য, গামা রশ্মির ধর্ম

  • এটি আধান নিরপেক্ষ।
  • এর বেগ আলোর বেগের সমান।
  • এটি আলফা এবং বিটা হতে বেশি ভেদনযোগ্য।
  • এর ভর এবং আধান নেই।
  • গামা রশ্মি অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
  • গামা রশ্মির কোনো ভর নেই।
  • গামা রশ্মির কোনো চার্জ নেই।
  • গামা রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোকের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তুলনায় অনেক কম।
  • গামা রশ্মি ৩{\displaystyle \times }১০৮ ms−1 বেগে গমন করে।
  • গামা রশ্মি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
  • গামা রশ্মি চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
  • গামা রশ্মি ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  • এরা কোনো পদার্থের উপর আপতিত হয়ে প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে।
  • গামা রশ্মির আয়নায়ন ক্ষমতা আছে। এই ক্ষমতা আলফা এবং বিটা রশ্মির তুলনায় অনেক কম।
  • গামা রশ্মির ভেদন ক্ষমতা আছে। আলফা এবং বিটা রশ্মির তুলনায় এই ভেদন ক্ষমতা অনেক বেশি।
  • এটা আলোকের মতো বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ বলে গামা রশ্মির প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যতিচার, অপবর্তন ইত্যাদি সব আলোকীয় ধর্ম আছে।

গামা রশ্মির ব্যবহার

বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী পল ভিলার্ড ১৯০০ সালে রেডিয়াম বিকিরণ নিয়ে পরীক্ষা করার সময় গামা রশ্মি আবিষ্কার করেন। বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড ভিলার্ডের এই নতুন আবিষ্কৃত বিকিরণের নাম দেন গামা রশ্মি। গামা রশ্মির ভেধন ক্ষমতা অত্যাধিক। একারণে এটি জীবদেহের ভিতরে প্রচুর ক্ষতি সাধন করে (যেমন বিকিরণজনিত অসুস্থতা, ক্যান্সার ইত্যাদি)। চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে গামা রশ্মি ব্যবহার করা হয়।

  • ক্যান্সার চিকিৎসায় গামা রশ্মি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।
  • সিটি স্ক্যান, রেডিও থেরাপি ইত্যাদিতে এ রশ্মি ব্যবহার করা হয়
  • ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে এ রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
  • পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে এ রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
  • মানব দেহে ক্যান্সার আক্রান্ত সেল ধ্বংস করতে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে, বিজ্ঞানগারে গবেষণার কাজে ও ধাতব বস্তুতে ফাটল নির্ণয়ে গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়। 

গামা রশ্মির ক্ষতিকর দিক

গামা রশ্মির প্রভাবে মানুষের নিম্নলিখিত ক্ষতি হতে পারে–

  • এ রশ্মি দেহের কোষ নষ্ট করতে পারে;
  • এ রশ্মির প্রভাবে মাথার চুল পড়ে যায়;
  • এ রশ্মিতে আক্রান্ত মানুষের ক্যান্সার ও টিউমার হতে পারে; এবং
  • অতিমাত্রায় এ রশ্মি মানুষের দেহে পড়লে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

বিটা রশ্মি কাকে বলে

তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত দ্রুতগামী ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট কণার স্রোতকে বিটা রশ্মি বলে । প্রতিটি বিটা কণা প্রকৃতপক্ষে এক একটি ইলেকট্রন।

বিটা রশ্মি বা বিটা কণা আসলে ইলেকট্রন। এটি নিশ্চয়ই একটি বিস্ময়ের ব্যাপার যে নিউক্লিয়াসের ভেতরে থাকে শুধু প্রােটন এবং নিউট্রন কিন্তু সেখান থেকে ইলেকট্রন কেমন করে বের হয়ে আসে? সেটি ঘটার জন্য নিউক্লিয়াসের ভেতরের একটি নিউট্রনকে প্রােটনে পরিবর্তিত হতে হয়।

বিটা রশ্মি কি? বিটা রশ্মির ধর্ম

অর্থাৎ একটি চার্জহীন নিউট্রন পজিটিভ চার্জযুক্ত প্রােটন এবং নেগেটিভ চার্জযুক্ত ইলেকট্রনে পরিবর্তিত হয়, কাজেই মােট চার্জের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকে। সমীকরণের ডান পাশে

ν দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের জগতের রহস্যময় কণা নিউট্রিনাের প্রতিপদার্থকে (এন্টি-নিউট্রিনাে) বােঝানাে হয়েছে, এটি চার্জহীন এবং এর ভর খুবই কম।

নিউক্লিয়াসের ভেতরে থেকে যখন আলফা কণা বের হয় সেটা একটি নির্দিষ্ট শক্তি নিয়ে বের হয় কিন্তু বিটা কণার জন্য সেটি সত্যি নয়। বিকিরণের মােট শক্তির কতটুকু নিউট্রিনাে নিয়ে নেবে তার ওপর বিটা কণার শক্তি নির্ভর করে।

বিটা কণা যেহেতু ইলেকট্রন তাই তার চার্জ নেগেটিভ (ঋণাত্মক আধান) এবং সে কারণে সেটি ইলেকট্রিক এবং চৌম্বকীয় ক্ষেত্র দিয়ে প্রভাবিত করা যায়। এটি যখন কোনাে পদার্থের ভেতর দিয়ে যায় তখন সেই পদার্থের অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষের কারণে সেগুলােকে আয়নিত করতে পারে। আলফা কণার হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের তুলনায় ইলেকট্রন খুবই ক্ষুদ্র তাই ইলেকট্রনের ভেদনক্ষমতা অনেক বেশি এবং সেটি পদার্থের অনেক ভেতর ঢুকে যেতে পারে। কয়েক মিলিমিটার পুরু অ্যালুমিনিয়ামের পাত দিয়ে একটি সাধারণ বিটা কণাকে থামানাে সম্ভব।

বিটা রশ্মির বৈশিষ্ট্য, বিটা রশ্মির ধর্ম

  • এই রশ্মি ঋণাত্মক আধানযুক্ত।
  • এই রশ্মি চৌম্বক ও তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।
  • এটি প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে।
  • বিটা কণিকার ভর একটি ইলেকট্রনের ভরের সমান।
  • ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  • বিটা কণা প্রকৃতপক্ষে দ্রুত গতি সম্পন্ন ইলেকট্রন।
  • এর ভেদন ক্ষমতা আলফা রশ্মির চেয়ে বেশি এবং এটি 0.01m পুরু।

আলফা রশ্মি কাকে বলে

আলফা রশ্মি বা আলফা কণা আসলে একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস। একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসে থাকে দুটো প্রােটন এবং দুটো নিউট্রন, কাজেই এটি একটি চার্জযুক্ত কণা। সে কারণে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্র দিয়ে এর গতিপথকে প্রভাবিত করা যায়। একটা নিউক্লিয়াসের ভেতর থেকে যখন একটা আলফা কণা বের হয়ে আসে তখন তার শক্তি থাকে কয়েক MeV, কাজেই সেটি যখন বাতাসের ভেতর দিয়ে যায় তখন বাতাসের অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষ করে সেগুলােকে তীব্রভাবে আয়নিত করতে পারে। বাতাসে আলফা কণার গতিপথ হয় সরলরেখার মতাে, এটা সােজা এগিয়ে যায়। তবে আলফা কণা যেহেতু হিলিয়ামের নিউক্লিয়াস তাই এটা পদার্থের ভেতর দিয়ে বেশি দূর যেতে পারে।

বাতাসের ভেতর দিয়ে 6 cm যেতে না যেতেই এটা বাতাসের অণু-পরমাণুকে তীব্রভাবে আয়নিত করে তার পুরাে শক্তি ক্ষয় করে থেমে যায়। একটা কাগজ দিয়েই আলফা কণাকে থামিয়ে দেওয়া যায়। জিংক সালফাইড পর্দায় এটি প্রতিভা (phosphorescence) সৃষ্টি করে। আলফা কণা যাত্রাপথে অসংখ্য অণু-পরমাণুকে আয়নিত করে মুক্ত ইলেকট্রন তৈরি করে সেগুলােকে সংগ্রহ করে সহজেই তার উপস্থিতি নির্ণয় করা যায় কিংবা তার শক্তি পরিমাপ করা যায়।

আলফা রশ্মির বৈশিষ্ট্য, আলফা রশ্মি এর ধর্ম

  • আলফা রশি ধনাত্মক আধানযুক্ত। এর আধান 3.2×10-19c
  • এ রশি চৌম্বক ও তড়িৎক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।
  • এ রশি তীব্র আয়নায়ন সৃষ্টি করতে পারে।
  • এর ভর বেশি হওয়ায় ভেদন ক্ষমতা কম।
  • সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রার কয়েক সেন্টিমিটার বায়ু বা ধাতুর খুব পাতলা পাত দ্বারা এর গতি থামিয়ে দেওয়া যায়।
  • একণা ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  • এ রশি জিসালফাইড পর্দায় প্রতিশ্রতা সৃষ্টি করতে পারে।
  • একণা প্রচণ্ড বেগে নির্গত হয়।
  • এটি একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস।
  • এ কণার ভর হাইড্রোজেন পরমাণুর চারগুণ।

আলফা বিটা ও গামা রশ্মির পার্থক্য

তুলনার ভিত্তিআলফাবিটাগামা
মৌলিকপ্রোটনের উপস্থিতির কারণে এটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের অনুরূপ।এটি একটি ইলেকট্রন বা পজিট্রন।এটি একটি ফোটন যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি বহন করে।
প্রতিনিধিত্বαβγ
প্রচারের গতিআলোর বেগের চেয়ে খুব কম।আলোর বেগের চেয়ে একটু কম।আলোর বেগের সমান।
ভর6.65*10-27 Kg9.10*10-31 Kg0
আয়নাইজিং শক্তিবড়কমখুব কম
চৌম্বক এবং বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের প্রভাববিচ্যুতি দেখায়বিচ্যুতি দেখায়কোন বিচ্যুতি নয়
পরিসরবাতাসে 10 সেমিনির্দিষ্ট মি পর্যন্তবাতাসে বেশ কিছু মি
নিউক্লিয়াস থেকে নির্গমনের প্রভাবউপাদানের রাসায়নিক গঠন পরিবর্তিত হয়উপাদানটির রাসায়নিক গঠন পরিবর্তন করেউপাদানের রাসায়নিক গঠনে কোন পরিবর্তন নেই

আবেদন
আনসিলড সোর্স রেডিওথেরাপিতে।উপাদান বেধ নিরীক্ষণপারমাণবিক শিল্পে.
আলফা বিটা ও গামা রশ্মির পার্থক্য

ক্যাথোড রশ্মি কি

ক্যাথোড রশ্মি একটি ইলেকট্রন রশ্মি যা ইলেকট্রনিক উপাদানের বৈদ্যুতিন বৈশিষ্ট্য গঠন ও পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ক্যাথোড রশ্মি প্রণালীগুলির কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে।

ক্যাথোড রশ্মি পরীক্ষা একটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতি যা ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক উপাদানের বৈদ্যুতিন বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। একটি ক্যাথোড রশ্মি ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক উপাদানে বৈদ্যুতিন বৈশিষ্ট্য যেমন পরবর্তী অংশের বৈদ্যুতিন প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষাগুলি পরীক্ষা করা হয়।

একটি ক্যাথোড রশ্মি পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনও উপাদানের বৈদ্যুতিন বৈশিষ্ট্য যেমন ইলেকট্রন প্রবাহের বিভিন্ন প্রকার, তাপমাত্রা, উপস্থিতি ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।

ক্যাথোড রশ্মির বৈশিষ্ট্য

  • ক্যাথোড রশ্মি অদৃশ্য এবং সরলরেখায় ভ্রমণ করে।
  • এই রশ্মি ঋণাত্মক চার্জ বহন করে এবং ক্যাথোড থেকে অ্যানোডে ভ্রমণ করে।
  • এই রশ্মিগুলি ক্যাথোড পৃষ্ঠের লম্বভাবে আবির্ভূত হয় এবং অ্যানোডের অবস্থান দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
  • ক্যাথোড রশ্মি খুব উচ্চ বেগে ভ্রমণ করে (আলোর বেগের 1/10তম)।
  • এই রশ্মিগুলি বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।
  • এই রশ্মি গ্যাসগুলি আয়ন করতে পারে।
  • এই রশ্মিগুলি যে উপাদানের উপর পড়ে তা গরম করে।
  • তারা রাসায়নিক পরিবর্তন তৈরি করতে পারে এবং এইভাবে একটি ফটোগ্রাফিক প্লেটকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • এই রশ্মি পাতলা ধাতব ফয়েল ভেদ করতে পারে।
  • ক্যাথোড রশ্মি উৎপাদনে ব্যবহৃত ইএমএফের উৎস হল ইন্ডাকশন কয়েল।
  • যখন তারা টাংস্টেনের মতো ভারী ধাতুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে তখন তারা এক্স-রে তৈরি করে।
  • ক্যাথোড রশ্মির প্রকৃতি ক্যাথোডের প্রকৃতি এবং ডিসচার্জ টিউবের গ্যাস থেকে স্বতন্ত্র।

রঞ্জন রশ্মি কি

উওর: রঞ্জন রশ্মি বা অজানা রশ্মি বলতে বুঝায় যা আমার প্রথম খালি চোখে দেখতে পারিনা। রঞ্জন রশ্মি হচ্ছে বিশেষ ভাবে আলোর প্রতিফলন যার মাধ্যমে কয়েকটি স্থর বা ফর্দাকে অতিক্রম করে তাহার অবস্থান ও পরিণতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়। রঞ্জন রশ্মী বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন।

রঞ্জন রশ্মি এর ব্যবহার

রঞ্জন রশ্মি এর ব্যবহার নিম্ন রুপ –

  • রঞ্জন রশ্মি দিয়ে আমারে হাড়ের অবস্থান সম্পর্কে ধারনাদেয়।
  • আমাদের দেহহের হৃদযন্ত্রের অবস্থান এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বুঝাতে সক্ষম।

তেজস্ক্রিয় রশ্মি পরমাণুর কোন অংশ থেকে নির্গত হয়

পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে তিন ধরনের তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়।

১) আলফা রশ্মি।

২) বিটা রশ্মি।

৩) গামা রশ্মি।

আলফা রশ্মি আলফা কণা র স্রোত। আলফা কণা র আধান +2 একক, ভর 4 একক।

বিটা কণা র আধান -1 এবং ভর নেই বললেই চলে।

গামা রশ্মি হল তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ, যার ভর এবং আধান থাকে না।

কোন পরমাণু থেকে একটি আলফা কণা নির্গত হলে পরমাণুটির পারমাণবিক সংখ্যা 2 একক এবং ভর সংখ্যা 4 একক হ্রাস পায়।

বিটা কণা নির্গত হলে পারমাণবিক সংখ্যা 1 একক বৃদ্ধি পায় ভর সংখ্যা একই থাকে।

গামা রশ্মি নির্গত হলে পারমাণবিক সংখ্যা, ভর সংখ্যা র কোন পরিবর্তন হয় না।

আলোক রশ্মি কাকে বলে

কোনো দীপ্তিমান বস্তুর কোনো বিন্দু থেকে আলো যেকোনো দিকে যে ঋজু পথ ধরে চলে, সে পথকেই আলোক রশ্মি বলে। সাধারণত তীর চিহ্নিত সরলরেখা দ্বারা আলোক রশ্মিকে নির্দেশ করা হয়।

আলো চলার পথকেই আলোক রশ্মি বলে। আর আলো সবসময় সরলরেখায় চলে অর্থাৎ কোন আঁকাবাকা নাহ একেবারে সোজা ভাবে চলে।

এক্স রশ্মি কাকে বলে

দ্রুত গতিসম্পন্ন ইলেকট্রন কোনো ভারী ধাতুকে আঘাত করলে, ইলেকট্রনের গতিশক্তি রূপান্তরিত হয়ে এক প্রকার তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ উৎপন্ন করে। এই বিকিরণকে এক্স রশ্মি বলে।

এক্স রশ্মির এককের নাম রন্টজেন (Roentgen)।

এক্স-রশ্মির ব্যবহার

  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে, গবেষণা কাজে, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তার কাজে, চোরা চালান নিরোধে এক্ষ-রে ব্যবহৃত হয়।
  • এছাড়া দেহের ক্ষতিকর সেল, টিউমার ধ্বংস করতে ও হাড়ভাঙা ও দেহের অভ্যন্তরে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ছবি তুলতে এক্সরে ব্যবহৃত হয়।
  • ধাতব পাতে কোনো ফাটল আছে কিনা তা নির্ধারণেও এক্স-রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

রঙ্গিন টেলিভিশন থেকে ক্ষতিকর রশ্মি বের হয়

রঙ্গিন টেলিভিশন থেকে যে ক্ষতিকারক রশ্মি নির্গত হয় তার নাম মৃদু রঞ্জন রশ্মি ।

টিভির পর্দায় ফসফর থাকে , ইলেকট্রন যখন এই ফসফরকে আঘাত করে তখন এখান থেকে মৃদু রঞ্জনরশ্মি নির্গত হয় , এটার পরিমাণ এতই ক্ষুদ্রতর যা উপেক্ষা করা যায় । সাধারণত CRT মনিটর থেকে মৃদু রঞ্জনরশ্মি নির্গত হয় কিন্তু আধুনিক এলসিডি / এলইডি মনিটর থেকে কোন ক্ষতিকারক রশ্মি নির্গত হয় না ।

বিভিন্ন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য

তড়িৎচৌম্বক বর্ণালীতরঙ্গদৈর্ঘ্যের গড় বিস্তার
গামা রশ্মি< ১ ন্যানোমিটার
রঞ্জন রশ্মি১ – ১০ ন্যানোমিটার
অতিবেগুনী রশ্মি১০ – ৪০০ ন্যানোমিটার
দৃশ্যমান আলো তরঙ্গ৪০০ – ৭০০ ন্যানোমিটার
সন্নিকট অবলোহিত৭০০ ন্যানোমিটার – ২.৫ মাইক্রোমিটার
মধ্য অবলোহিত২.৫ মাইক্রোমিটার – ১০ মাইক্রোমিটার
দূরবর্তী অবলোহিত১০ মাইক্রোমিটার – ১ মিলিমিটার
অণুতরঙ্গ (মাইক্রোওয়েভ)১ মিলিমিটার – ১০ সেন্টিমিটার
ক্ষুদ্র বেতার তরঙ্গ  (রেডিও তরঙ্গ)১০ সেন্টিমিটার – ১০ মিটার
দীর্ঘ বেতার তরঙ্গ> ১০ মিটার
বিভিন্ন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | রশ্মি

Q1. রশ্মির প্রান্ত বিন্দু কয়টি

উত্তরঃ রশ্মির প্রান্ত বিন্দু ১ টি।

Q2. জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি কোনটি

উত্তরঃ জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি গামা ( Y) । এর ভেদন ক্ষমতা মহাবিশ্বের যেকোনো কণা বা তরঙ্গের থেকে বেশি।

তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গামা বিকিরণ নির্গত হয়। এটি প্রাণিদেহ বা উদ্ভিদ দেহের মধ্য দিয়ে গমনকালে স্থায়ী ক্ষতি সাধন করে ।

Q3. মহাজাগতিক রশ্মির আবিষ্কারক কে

উত্তরঃ মহাজাগতিক রশ্মি কারো দ্বারা উদ্ভাবিত হয়নি, এগুলি একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনা যেখানে প্রোটন এবং পারমাণবিক নিউক্লিয়ার মতো উচ্চ-শক্তির কণাগুলি আলোর গতির কাছাকাছি সময়ে মহাকাশে ভ্রমণ করে। 

মহাজাগতিক রশ্মির আবিষ্কার অস্ট্রিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ভিক্টর হেসকে দায়ী করা হয়, যিনি 1912 সালে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বিকিরণ অধ্যয়নের জন্য বেলুন ফ্লাইটের একটি সিরিজ পরিচালনা করেছিলেন এবং আবিষ্কার করেছিলেন যে বিকিরণ উচ্চ উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নির্দেশ করে যে এটি মহাকাশ থেকে আসছে।

Q4. লেজার রশ্মি কে আবিষ্কার করেন

উত্তরঃ লেজার রশ্মি আবিষ্কার করেন মাইম্যান, ১৯৬০ সালে । থিওডোর হ্যারল্ড মাইম্যান একজন মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি লেজার এর উদ্ভাবক। মাইম্যানের লেজার পরবর্তীকালে আরো অনেক ধরনের লেজার এর আবিষ্কারে পথ প্রদর্শন করে। এই উদ্ভাবনের জন্য মাইম্যান একটি প্যাটেন্টের অধিকারী হন এবং অনেক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন।

Q5. কোন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি

উত্তরঃ বেতার তরঙ্গ, তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি।

Q6. কোন রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি

উত্তরঃ গামা রশ্মির সর্বোচ্চ ভেদন ক্ষমতা রয়েছে ।

Q7. রঞ্জন রশ্মি আবিষ্কার করেন কে

উত্তরঃ রঞ্জন রশ্মি ইউলহেলম রন্টজেন আবিষ্কার করেন। হেনরি বেকেরেল তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। মেরী কুরি বিরল ধাতু ইউরেনিয়ামের লবণ থেকে রেডিয়াস পলোনিয়াম মৌল দুটি আবিষ্কার করেন।

Q8. মোবাইল থেকে কোন রশ্মি বের হয়

উত্তরঃ মোবাইল থেকে ইউভি রশ্মি বের হয়।

দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার আর নীল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৪৫০ ন্যানোমিটার এবং এর রেঞ্জ ৪১৫-৪৫৫ ন্যানোমিটার। ইলেক্ট্রো-মেগনেটিক (ইউ-ভি) রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১০-৪০০ ন্যানো মিটার‌ পর্যন্ত। ইউভি রশ্মি আমরা খালি চোখে দেখতে পাইনা আর এসব রশ্মি মানব শরীরের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু সীমাবদ্ধতা ও সতর্কতা মেনে ইউভি রশ্মি ব্যবহার করা হয় যেমন আল্ট্রাসনোগ্রাফি, এক্সরে, জীবাণুমুক্ত করণ কাজে, ল্যাবে ইত্যাদি। নীল আলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের হ‌ওয়ায় তা অনেকটা ইউভি রশ্মির মত আচরণ করে এবং তাদের মতোই ক্ষতিকর।

Q9. ক্যান্সার চিকিৎসায় কোন রশ্মি ব্যবহৃত হয়

উত্তরঃ ক্যান্সার চিকিৎসায় গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

Q10. সূর্যালোকের কোন রশ্মির জন্য সোলার কুকার কাজ করে

উত্তরঃ সূর্যালোকের প্রতিফলিত রশ্মির জন্য সোলার কুকার কাজ করে।

Q11. ক্যাথোড রশ্মি কে আবিষ্কার করেন

উত্তরঃ ক্যাথোড রশ্মি আবিষ্কার করেন কার্ল ফার্ডিনান্ড ব্রাউন।

Q12. কোন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম

উত্তরঃ গামা রশ্মির মধ্যে সবচেয়ে কম তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকে এবং তাই বর্ণালীতে তরঙ্গের শক্তি সর্বাধিক থাকে।

Q13. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হয় কোন স্তরে

উত্তরঃ সূর্যের উচ্চ-শক্তি এক্স-রে এবং UV রশ্মি থার্মোস্ফিয়ারে শোষিত হয়।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।