কপোতাক্ষ নদ কবিতা, কপোতাক্ষ নদ কবিতার ব্যাখ্যা, কপোতাক্ষ নদ কবিতা সৃজনশীল উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

কপোতাক্ষ নদ কবিতা, কপোতাক্ষ নদ কবিতা মাইকেল মধুসূদন দত্ত

সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।
সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।
বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে
দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।

আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে
প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে
বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে
বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।
নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে
লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার ব্যাখ্যা

▶সতত, হে নদ, তুমি পড় মাের মনে!

সতত তােমার কথা ভাবি এ বিরলে;

ব্যাখাঃ কপােতাক্ষ নদ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাগরদাড়ি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ। শৈশবের নানা স্মৃতি কবির মনে ভিড় করে। ফলে কবি যখন একান্ত নিরিবিলিতে থাকেন তখন এই নদের কথা ভাবেন। কপােতাক্ষের কথা সবসময় তার মনে পড়ে। প্রবাসে রূঢ় বাস্তবতায় কবি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। কপােতাক্ষের স্মৃতি তাকে ভাবিয়ে তুলেছে।

▶ সতত (যেমতি লােক নিশার স্বপনে

শশানে মায়া-মন্ত্রধ্বনি) তব কলকলে

জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!

ব্যাখাঃ রাতে মানুষ যেমন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে, মায়ামন্ত্র ধ্বনিতে আবেগে আপ্লুত হয়, কবিও অনুরূপভাবে কপােতাক্ষকে নিয়ে স্বপ্নে বিভাের  হন। স্বপ্নের মতাে কপােতাক্ষের সব সুখ-স্মৃতি তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তিনি নদের কলকল শব্দে বয়ে চলা অনুভব করেন। তিনি যেন স্বপ্নের ঘােরে কপােতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। 

▶ বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?

ব্যাখাঃ প্রবাস জীবনে কবি বহু নদ-নদী দেখেছেন, কিন্তু আর কোনাে নদীর জল কপােতাক্ষের মতাে তৃপ্তি দিতে পারেনি। কারণ শৈশব- কৈশােরে কপােতাক্ষই ছিল তাঁর প্রাণসখা। এই নদের সৌন্দর্য অনুভব করে এর জলেই তার স্নেহের তৃষ্ণা মিটেছে। বিদেশের কোনাে নদ-নদীর জলে কিংবা সৌন্দর্যে কবির সে তৃষ্ণা মেটেনি। 

▶ দুগ্ধ-সােতােরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে।

ব্যাখাঃ প্রবাস জীবনে কবি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন তাঁর জন্মভূমির  রূপসৌন্দর্যকে। কবির স্বদেশানুরাগটি মূলত কপােতাক্ষ নদকে কেন্দ্র করে ফুটে উঠেছে। তিনি জন্মভূমির এই নদীর জলকে মাতৃদুগ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। প্রবাসজীবনের স্নেহহীন দুঃসময় কবির মনে যখন গভীর বেদনা সৃষ্টি করেছে, কপােতাক্ষ নদের টলটলে স্বচ্ছ স্রোতধারা তখন কবির কল্পনায় ভূমিমাতার দুধের ফোয়ারা হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে।

▶ আর কি হে হবে দেখা?- যত দিন যাবে,

ব্যাখাঃ কবি স্বদেশ ছেড়ে প্রবাসে গিয়ে শৈশব-স্মৃতিতে কাতর হয়ে পড়েছেন। বাস্তবতায় ফিরে এসে তার মনে জেগেছে নানা সন্দেহ, সংশয়। হাজার হাজার মাইল দূরে থাকা কপােতাক্ষ নদের সঙ্গে পুনরায় তার দেখা হওয়া নিয়েও সংশয়ের শেষ নেই। তিনি কি আবার সেই শৈশব-কৈশােরের স্মৃতি জড়ানাে কপােতাক্ষ নদকে দেখতে পাবেন?

▶ প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে

বারি-রূপ কর তুমি; এ মিনতি, গাবে

বঙ্গজ জনের কানে, সখে, সখা-রীতে

নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেম-ভাবে

ব্যাখাঃ কবি জানেন যে তাঁর শৈশবের নদটি আগের মতােই সাগরকে বারিরূপ (জল) কর দিয়ে যাচ্ছে। প্রজা যেমন রাজাকে কর বা রাজস্ব দেয়, তেমনি কপােতাক্ষ নদও সাগরকে জলরূপ কর বা রাজস্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের কানে কানে কররূপ সেই স্রোতধারা কলকল ধ্বনিতে সাগরের বুকে ছুটে চলছে। কপােতাক্ষ নদ যেন কবিকে স্নেহাদরে বন্ধু ভাবে। প্রেমভাবে যেন তাকে স্মরণ করে। কারণ কবি তাকে গভীর আবেগ, ভালােবাসায় স্মরণ করেছেন।

▶ লইছে যে তব নাম বঙ্গের সংগীতে।

কবি শুধু জন্মভূমির প্রিয় নদকেই স্মরণ করেন না, কপােতাক্ষ নদ যে তার স্বদেশের জন্য হৃদয়ের কাতরতা তাও তিনি বঙ্গবাসীর কাছে ব্যক্ত করেছেন। প্রবাসজীবনেও তিনি গানে, কবিতায়, শৈশবে-কৈশােরের স্মৃতিবিজড়িত নদের কথা লিখেছেন। তাঁর প্রিয় নদের নাম বঙ্গের সংগীতে রূপান্তরিত।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার মূলভাব

‘কপােতাক্ষ নদ’ চতুর্দশপদী কবিতায় কবি যশােরের সাগরদাড়ির পাশ দিয়ে কুলকুল ধ্বনিতে বয়ে যাওয়া কপােতাক্ষের প্রতি তাঁর গভীর প্রেমবােধের পরিচয় দিয়েছেন। বিদেশি সাহিত্যে আত্মপ্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ কবি ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে স্বজনহীন জীবনযাত্রার মাঝে শৈশবকৈশােরের স্মৃতিবিজড়িত মাতৃরূপ কপােতাক্ষ নদকে স্মরণ করেছেন। তিনি সেখানে এ নদের মায়ামন্ত্র ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন।

কবি শুনতে পান কপােতাক্ষের কলকল ধ্বনি। তখন জন্মভূমির শৈশব-কৈশােরের বেদনা-বিধুর স্মৃতি তার মনে জাগিয়েছে কাতরতা। কবির মন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কপােতাক্ষের তীরে ফিরে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। কবি বহু দেশ ভ্রমণ করে, বহু নদ-নদীর জলে নৌকা ভাসিয়ে, জলে পিপাসা মিটিয়েও দুগ্ধ-স্রোতােরূপী কপােতাক্ষের জলের সেই স্বাদ পাননি। কারণ জন্মভূমির এই নদ যেন মায়ের স্নেহভােরে তাকে বেঁধেছে, কিছুতেই তিনি তাকে ভুলতে পারেন না।

তার মনে সন্দেহ জাগে, এই নদের দেখা কি তিনি আর পাবেন? তাই তিনি প্রিয় নদের কাছে মিনতি করে বলেন- যদি কোনােদিন তিনি কপােতাক্ষের তীরে আর ফিরে যেতে নাও পারেন তবু যেন কপােতাক্ষ কবিকে মনে রাখে, বাংলার কোটি মানুষের কাছে তার কথা পৌছে দেয়; তাকে যেন সস্নেহে স্মরণ করে।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার বহুনির্বাচনী প্রশ্ন, কপোতাক্ষ নদ কবিতা MCQ, কপোতাক্ষ নদ কবিতার MCQ

কবি হৃদয়ের কাতরতা কোথায় জানানোর জন্য কপোতাক্ষের নিকট অনুরোধ করেন?

ক. বিদেশিদের নিকট

খ. বঙ্গবাসীর নিকট

গ. সাগরের কাছে

ঘ. মায়ের কাছে

সঠিক উত্তর : ক – বিদেশিদের নিকট

‘সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে?’ কবি কার কথা ভাবেন?

ক. কপোতাক্ষ নদ

খ. মাতৃভূমি

গ. সাগরদাড়ি

ঘ. বঙ্গজননী

সঠিক উত্তর : ক – কপোতাক্ষ নদ

‘সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে’ কবি কোথায় বসে কপোতাক্ষ নদের কথা ভাবেন?

ক. ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে

খ. জার্মানির বার্লিন নগরীতে

গ. ইংল্যান্ডের ডাবলিন নগরীতে

ঘ. ফ্যান্সের প্যারিস নগরীতে

সঠিক উত্তর : ক – ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে

‘সতত হে নদ, তুমি পড় মোর মনে’ — এ চিত্রকল্পে কী ফুটে উঠেছে?

ক. ভ্রান্তিবিলাস খ. স্মৃতি রোমন্থন

গ. আত্মসংবিৎ ঘ. চৈতন্য-উদয়

সঠিক উত্তর : খ – স্মৃতি রোমন্থন

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি স্মৃতিকাতর হয়েছেন কেন?

ক. গভীরভাবে নিজ কর্মের প্রতি অনুতপ্ত হয়ে

খ. শৈশবের নদ কপোতাক্ষের কথা মনে পড়ায়

গ. ফেলে আসা বর্ণিল দিনগুলোর কথা মনে পড়ায়

ঘ. দেশের প্রিয়জনদের স্মৃতি মনে করে

সঠিক উত্তর : গ – ফেলে আসা বর্ণিল দিনগুলোর কথা মনে পড়ায়

কপোতাক্ষের কলকল ধ্বনি শুনে কবির কী হয়?

ক. সংশয় হয় খ. ভয় হয়

গ. দুঃখবোধ হয়  ঘ. ভ্রান্তি হয়

সঠিক উত্তর : ঘ

‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে’—কথাটির অর্থ কী?

ক. আত্মপ্রবঞ্চনার সান্ত্বনা

খ. নিজেকে প্রবোধ দেওয়া

গ. সম্মোহিত হওয়া

ঘ. স্মৃতি রোমন্থনে সুখানুভব

সঠিক উত্তর : ক – আত্মপ্রবঞ্চনার সান্ত্বনা

কবি কাকে ‘ভ্রান্তির ছলনে’ বলেছেন?

ক. নিশার স্বপনকে

খ. কলকল ধ্বনিকে

গ. স্বদেশচেতনাকে

ঘ. কপোতাক্ষ নদকে

সঠিক উত্তর : খ – কলকল ধ্বনিকে

‘আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই।’— উদ্দীপকটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?

ক. আবেগ খ. স্মৃতিকাতরতা

গ. দেশপ্রেম ঘ. অনুরাগ

সঠিক উত্তর : গ – দেশপ্রেম

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি কপোতাক্ষ নদকে কীভাবে স্মরণ করেন?

ক. বন্ধুভাবে খ. বিরক্তি নিয়ে

গ. হতাশ হয়ে ঘ. আশাবাদী হয়ে

সঠিক উত্তর : ক – বন্ধুভাবে

কবি প্রবাসজীবনে কাকে প্রেমভাবে স্মরণ করেছেন?

খ. বঙ্গভূমিকে খ. মা–বাবাকে

গ. বঙ্গবাসীকে ঘ. কপোতাক্ষকে

সঠিক উত্তর : ঘ – কপোতাক্ষকে

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কে কাকে ‘বারিরূপ কর’ দেয়?

ক. সাগর নদীকে খ. নদী সাগরকে

গ. প্রজা রাজাকে ঘ. খাল নদীকে

সঠিক উত্তর : খ – নদী সাগরকে

কপোতাক্ষ কাকে কর দেয়?

ক. সাগরদাঁড়িকে খ. রূপসাকে

গ. সাগরকে ঘ. মহানন্দাকে

সঠিক উত্তর : গ – সাগরকে

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির কোন অনুভূতি আমাদের স্পর্শ করে?

ক. প্রবাসজীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা

খ. স্মৃতির আবরণে দেশপ্রেম

গ. কপোতাক্ষের প্রতি ভালোবাসা

ঘ. দেশের প্রতি মমত্ববোধ

সঠিক উত্তর : খ – স্মৃতির আবরণে দেশপ্রেম

‘লইছে যে নাম তব বঙ্গের সংগীতে।’—এখানে ‘তব’ কে?

ক. কবি খ. কপোতাক্ষ নদ

গ. বাঙালি ঘ. সখী

সঠিক উত্তর : খ – কপোতাক্ষ নদ

‘ভ্রান্তির ছলনে’ শব্দের অর্থ কী?

ক. আশার ছলনায় খ. ভুলের ছলনায়

গ. ছলনা করা ঘ. একান্তে ছলনায়

সঠিক উত্তর : খ – ভুলের ছলনায়

‘চতুর্দশপদী’ কবিতার অষ্টকে কী থাকে?

ক. ভাবের প্রবর্তনা খ. ভাবের ব্যাখ্যা

গ. ভাবের পরিণতি   ঘ. ভাবের শেষ

সঠিক উত্তর : ক – ভাবের প্রবর্তনা

‘বিরলে’ শব্দের অর্থ কী?

ক. একান্ত নিরিবিলিতে  খ. গভীর রাত্রিতে

গ. ভুলের ছলনাতে  ঘ. সুখের স্মৃতিতে

সঠিক উত্তর : ক – একান্ত নিরিবিলিতে

‘বারিরূপ কর তুমি’ এখানে ‘কর’ অর্থ কী?

ক. হাত খ. অংশ

গ. রাজস্ব ঘ. ক্রিয়াপদ

সঠিক উত্তর : গ – রাজস্ব

‘আর কি হে হবে দেখা? যত দিন যাবে’—এ চরণে কবির কোন অনুভূতি ফুটে উঠেছে?

ক. বিষণ্নতা খ. আক্ষেপ

গ. উদ্বিগ্নতা ঘ. অস্থিরতা

সঠিক উত্তর : গ – উদ্বিগ্নতা

‘নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে লইছে যে নাম তব বঙ্গের সংগীতে।’ এখানে ফুটে ওঠা ভাবটি কী?

ক. বিরহের ব্যাকুলতা

খ. সান্নিধ্যের আকুলতা

গ. বিচ্ছেদের প্রতিকূলতা

ঘ. ভালোবাসার আকুলতা

সঠিক উত্তর : খ – সান্নিধ্যের আকুলতা

কপোতাক্ষ নদের স্রোতে কিসের ধ্বনি অনুভূত হয়?

ক. বাঁশির খ. মায়ার

গ. গানের ঘ. ভাষার

সঠিক উত্তর : খ – মায়ার

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ‘এ বিরলে’ শব্দের সাথে অন্ত্যমিল রক্ষাকারী শব্দ কোনটি?

ক. তব কলকলে খ. কার জলে

গ. স্বপনে ঘ. ছলনে

সঠিক উত্তর : ক – তব কলকলে

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় অষ্টকের মূল বক্তব্য কোনটি?

ক. ভ্রান্ত আবেগ খ. নদীর প্রতি মমতা

গ. দেশপ্রেম ঘ. স্মৃতিকাতরতা

সঠিক উত্তর : ঘ – স্মৃতিকাতরতা

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি প্রজা বলেছেন কাকে?

ক. কপোতাক্ষকে খ. সাগরদাঁড়িকে

গ. বাংলাদেশকে ঘ. বাঙালিদেরকে

সঠিক উত্তর : ক – কপোতাক্ষকে

‘আর কি হে হবে দেখা’— ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি কার উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছেন?

ক. কপোতাক্ষ নদ খ. জন্মভূমি

গ. আত্মীয়-পরিজন ঘ. বন্ধু-বান্ধব

সঠিক উত্তর : ক – কপোতাক্ষ নদ

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কে, কাকে বারিরূপ কর দেয়?

ক. সাগর নদীকে খ. নদী সাগরকে

গ. প্রজা রাজাকে ঘ. খাল নদীকে

সঠিক উত্তর : গ – প্রজা রাজাকে

‘সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে’—এ চিত্রকল্পে কী ফুটে উঠেছে?

ক. ভ্রান্তির বিলাস খ. স্মৃতি রোমন্থন

গ. আত্মসম্বিৎ ঘ. চৈতন্য-উদয়

সঠিক উত্তর : খ. স্মৃতি রোমন্থন

আর কি হে হবে দেখা? যত দিন যাবে’— এখানে কবিমনের কোন অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে?

ক. ভয় খ. সংশয়

গ. বেদনা ঘ. মোহ

সঠিক উত্তর : খ. সংশয়

কোন কবিতায় কবির স্মৃতিকাতরতার আবরণে তাঁর দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে?

ক. জীবনসঙ্গীত খ. কপোতাক্ষ নদ

গ. আমার সন্তান ঘ. ছায়াবাজি

সঠিক উত্তর : খ. কপোতাক্ষ নদ

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির কী রকম দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে?

ক. অপ্রতুল খ. অত্যুজ্জ্বল

গ. অপ্রকট ঘ. উচ্ছ্বসিত

সঠিক উত্তর : খ. অত্যুজ্জ্বল

‘লইছে যে তব নাম বঙ্গের সঙ্গীতে’—কবি কার নাম নিচ্ছেন?

ক. জন্মভূমির নদীর

খ. জন্মভূমি বাংলার

গ. সাগরদাঁড়ি গাঁয়ের

ঘ. বঙ্গোপসাগরের

সঠিক উত্তর : ক. জন্মভূমির নদীর

কবি কপোতাক্ষ নদের কছে কী মিনতি করেছেন?

ক. তাঁকে মনে রাখতে

খ . তাঁকে ক্ষমা করতে

গ. তাঁকে আশীর্বাদ করতে

ঘ. তাঁকে ভুল না বুঝতে

সঠিক উত্তর : ক. তাঁকে মনে রাখতে

কপোতাক্ষ নদের কাছে কবির মিনতির মধ্যে তাঁর মনের কোন পরিচয় পাওয়া যায়?

ক. হতাশা খ. গভীর অনুরাগ

গ. তীব্র অভিমান ঘ. হাহাকার

সঠিক উত্তর : খ. গভীর অনুরাগ

কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর, কপোতাক্ষ নদ সৃজনশীল প্রশ্ন, কপোতাক্ষ নদ কবিতা সৃজনশীল উত্তর

উদ্দীপক:- বাংলাদেশের নিজস্ব আকাশ আছে, কিন্তু তা বেড়া দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা নয়, বহির্বিশ্বকে তা দূর দূর করে দূরে তাড়ায় না, তার অনুকূল আলােহাওয়াকে অস্পৃশ্য করে পাশে ঠেলে না। এ আকাশ উদার, কিন্তু এর স্বাতন্ত্রে অন্য কারাে হস্তক্ষেপও সে সহ্য করে না। আকাশ, সূর্য, নদী, গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, পৃথিবীর আর সব দেশের মতাে এখানেও রয়েছে। কিন্তু ঐ সব সর্বজনীন বস্তুপুঞ্জসমৃদ্ধ প্রকৃতি এমন এক বিশেষ গুণে মণ্ডিত, যা একবারে পূর্ব বাংলারই। এ প্রকৃতির বিশিষ্টতা গুণ এ অঞ্চলের অধিবাসীদেরও স্বভাবে ও মানসগঠনে বৈশিষ্ট্য দিয়েছে, যা আমাদের স্বতন্ত্র এক চরিত্র ও মানবিক আদলের উৎস। এখানকার প্রকৃতি ও মানুষ এক অবিচ্ছিন্ন পরিমণ্ডলে সমন্বিত হয়ে একটি স্বকীয় স্বরূপে নির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট।

ক. শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কোন নদের তীরে বড় হয়েছেন?

খ. কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটি সম্পর্কে তােমার মতামত দাও। 

উত্তর

ক। শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কপােতাক্ষ নদের তীরে বড় হয়েছেন।

খ। কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করার কারণ- মাতৃদুগ্ধ যেমন শিশুকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি কপােতাক্ষ নদের জলও কবির তৃষ্ণা দূর করেছে, এ নদের দানে ও ঋণে কবি আবদ্ধ এবং এ নদ তার শৈশবকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

শৈশব-কৈশােরের দিনগুলােতে কপােতাক্ষ নদই ছিল কবির আশ্রয়। তৃষ্ণা পেলে এ নদের জলেই কবি স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতেন। কপােতাক্ষের জল ছাড়া অন্য কোনাে নদ-নদীর জল কবির স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। এ নদ শুধু একটি জলাধার নয়, কবির শৈশব-কৈশােরের সাথিও। কবি কপােতাক্ষকে তাই মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

গ। উদ্দীপকে ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার স্বদেশের বৈচিত্র্যময় দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

আপন রূপ-রূস-গন্ধ নিয়ে প্রকৃতি চির প্রবহমান। প্রকৃতির সৌন্দর্য কখনাে শেষ হয় না। স্বদেশ প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্য মানুষকে বিমােহিত করে। মানুষ নিজের দেশের বনবনানী, মাঠ-ঘাট, গাছপালা, নদী-নালা, পশু-পাখির রূপবৈচিত্র্য ভুলতে পারে না। কারণ সেসবের সঙ্গে তার আনন্দ-বেদনার নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

উদ্দীপকে বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে। এদেশের উদার আকাশ, সূর্য, নদী, গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, আর সব দেশের মতাে হলেও সেগুলাে যে বৈচিত্র্যময় ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ তা তুলে ধরা হয়েছে। পূর্ব বাংলার রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে এখানকার মানুষের গভীর সম্পর্ক ও বৈশিষ্ট্যের দিকটিও এতে প্রতিফলিত হয়েছে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি আলােচ্য কবিতায় তার শৈশবের নদটির কথা বলতে গিয়ে বাংলার রূপবৈচিত্র্যকে নির্দেশ করেছেন, যা তাঁর সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। কপােতাক্ষের জলধারা, সবুজ বাংলার বুক চিরে বয়ে চলা উদ্দীপকের রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে অভিন্ন।

ঘ। “স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি সম্পর্কে আমি একমত।

বাংলাদেশের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এদেশের প্রকৃতির সঙ্গে নদ-নদী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ফলে স্বদেশের কথা, মাতৃভূমির কথা বলতে গিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা নদ-নদীর প্রসঙ্গ টানেন। সেসবের সঙ্গে তাদের জীবনের সম্পৃক্ততার দিক তুলে ধরেন। তাতে স্বদেশ প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য ধরা পড়ে।

উদ্দীপকে পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান উল্লেখ করে এর বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির প্রিয় কপােতাক্ষ নদের শােভা, এ নদের জলের কুলকুল ধ্বনি, এর বয়ে চলার সৌন্দর্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতায় কবির ব্যক্তিহৃদয়ের যে আর্তি প্রকাশ পেয়েছে, তার সঙ্গে এর মিল না থাকলেও স্বদেশ প্রকৃতির যে রূপ কবিকে আকৃষ্ট করেছে, তার সঙ্গে উদ্দীপকটির যথেষ্ট মিল রয়েছে। কারণ কবির স্বদেশ এবং উদ্দীপকের পূর্ব বাংলা এক ও অভিন্ন সৌন্দর্যের প্রতীক।

আলােচ্য কবিতায় কবি প্রবাসজীবনে তার শৈশবের নদীটিকে স্মরণ করেছেন। কবি কপােতাক্ষের সঙ্গে তার গভীর বন্ধন ও ভালােবাসার কথা বলেছেন। এতে নদীমাতৃক বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের প্রতি কবির মুগ্ধতাও প্রকাশ পেয়েছে। সেই দিক বিবেচনায় উদ্দীপকের বিষয়টি ‘কপােতাক্ষ নদ’ কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা পড়েছে।

উদ্দীপক:- ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি। মিছিলটা যখন মেডিকেল কলেজের সামনে আসে তখন এলোপাতাড়ি গুলিতে ছত্রভঙ্গ হয় ছাত্র-জনতা । তপু প্ল্যাকার্ড হাতে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। তপুর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’।

ক. অষ্টককে ইংরেজিতে কী বলা হয়?
খ. চতুর্দশপদী কবিতার অষ্টক ও ষটকের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।
গ. তপুর দেশপ্রেমের সঙ্গে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের দেশপ্রেমের সাদৃশ্য অঙ্কন করো ।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর

ক) অষ্টককে ইংরেজিতে Octave বলা হয় ।

খ) সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতার গঠনপ্রকৃতি অনুযায়ী ও ভাবগত বিবেচনায় অষ্টক এবং ষটকের বৈশিষ্ট্য অনুসারেই এ কবিতার আঙ্গিক পূর্ণতা পায় । সনেটের প্রথম আট চরণ বা অষ্টকে কবিতার ভাবের প্রবর্তনা এবং ষষ্ঠকে তার পরিণতি বর্ণিত হয়। ব্যক্তিগত আবেগের হাহাকারব্যঞ্জক কবিতা সনেটের ষটকের ক্ষেত্রেও প্রথম চার চরণ বিশ্লেষণ এবং শেষ দুই চরণ একটি মীমাংসার ইঙ্গিত বহন করে।

উত্তরের সারবস্তু: সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতার প্রথম আট চরণকে অষ্টক এবং শেষের ছয় চরণকে ষটক বলে সনেটের গঠনপ্রকৃতি অনুযায়ী ও ভাবগত বিবেচনায় অষ্টক এবং ষটকের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ও সুনির্দিষ্ট।

গ) প্রদত্ত উদ্দীপকে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় তপুর জীবনদানের চিত্রও দেশপ্রেমের চূড়ান্ত স্মারক, যা ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের দেশপ্রেমের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ । দেশের সঙ্গে মানুষের আবেগ ও অনুভূতির সম্পর্ক নিবিড়। আধুনিক বাংলা কবিতার প্রবর্তক মাইকেল মধুসূদন দত্তের চতুর্দশপদী কবিতা ‘কপোতাক্ষ নদ’-এ তাঁর সুগভীর দেশপ্রেমের আবেগ বর্ণিত হয়েছে।

আলোচ্য কবিতায় কবির প্রবাসজীবনে শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদ যেন গভীর দেশপ্রেমের অনুষঙ্গরূপে ধরা দিয়েছে।বিদেশি ভাষা কাব্য রচনার মোহে ব্যাকুল কবি মাতৃভূমি, পরিবার, শৈশবের স্মৃতি এবং ধর্ম ত্যাগ করে প্রবাসে যান। বিপুল সাধনার পরও কবিখ্যাতির বদলে নিদারুণ দুঃখ-দুর্দশাই সেখানে সঙ্গী হয়েছিল । পক্ষান্তরে মাতৃভাষায় কাব্য রচনা করে সহজেই তিনি কবিখ্যাতির বরমাল্যে ভূষিত হন । এ অবস্থায় ফ্রান্সের ভার্সাই নগরে বসে কবির যাবতীয় প্রাণাবেগ বিপুলভাবে প্রবাহিত হয় ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়।

অপরদিকে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে সম্মলিত ছাত্র-জনতার সঙ্গে শামিল হলে পুলিশের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারায় উদ্দীপকের তপু। মৃত্যুমুখে পড়ে যাওয়ার সময়ও তার হাতে ধরা ছিল এদেশের কোটি মানুষের সোচ্চার প্রাণের দাবি ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। প্রবল দেশপ্রেমের সুতীব্র প্রেরণা ছাড়া এ রকম আত্মত্যাগ অসম্ভব। তাই প্রেক্ষিত ও উপজীব্য ভিন্ন হলেও তপুর দেশপ্রেমের সঙ্গে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার দেশপ্রেমের গভীর সাদৃশ্য বিদ্যমান ।

উত্তরের সারবস্তু: প্রবাসজীবনে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের যাবতীয় প্রাণাবেগের উদ্ভাসন ঘটেছে তাঁর শৈশবের নদী কপোতাক্ষকে ঘিরে। উদ্দীপকে বর্ণিত তপুর দেশপ্রেম মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সংকল্পে প্রণোদিত। প্রেক্ষিত, প্রসঙ্গ ও পরিণতি এক না হলেও উভয় ক্ষেত্রেই অনুভূতিগত সাদৃশ্য একই।

ঘ) ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় শৈশবের নদের স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে কবির সুগভীর দেশপ্রেম উদ্‌গত হয়েছে, যা প্রদত্ত উদ্দীপকের তপুর মাতৃভাষার প্রতি প্রবল অনুরাগ ও আত্মত্যাগের মধ্যে লক্ষ করা যায়।
দেশপ্রেমের চেতনা একটি অনুভূতিগত ব্যাপার। নানাভাবে নানাদিক দিয়েই এটি প্রকাশিত হতে পারে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রেরণার মধ্য দিয়ে । এখানে কবির দেশপ্রেমের ফল্গুধারা প্রকাশিত হয়েছে শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদকে কেন্দ্র করে।

আলোচ্য উদ্দীপকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্রদের মিছিলের কথা উঠে এসেছে। সেই মিছিলে পুলিশ গুলি বর্ষণ করলে তপুর গায়ে গুলি লেগে সে শহিদ হয়। এখানে ভাষা আন্দোলনে শহিদ তপু রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করার দাবিতে জীবন দিয়ে দেশপ্রেমের মহিমাকে প্রজ্বলিত করেছে। স্বদেশকে হৃদয় দিয়ে অনুভবের এমন দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত আমরা আলোচ্য কবিতার কবির মাঝেও দেখতে পাই। আলোচ্য কবিতাটি কবির প্রবাসজীবনের গভীর স্মৃতিকাতরতা ও অনুতাপে সিক্ত। বিদেশি ভাষায় সাহিত্য সাধনার মোহে বিচলিত কবি শৈশবে নিজ ভাষা, ধর্ম এমনকি মাতৃভূমিও ত্যাগ করেছিলেন।

আত্মোপলব্ধি হলে নানা দুঃখ-বিপর্যয়ে ক্লান্ত কবি আবিষ্কার করেন মাতৃভাষায় সাহিত্যচর্চায় তাঁর গৌরব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । এ রকম অনুতাপে অনুভূতির প্রগাঢ় অতলে তিনি মাতৃভূমির প্রতি গভীর প্রেম ও আকর্ষণ অনুভব করেন। উদ্দীপকটি বিশ্লেষণে দেখতে পাই, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার মর্যাদায় উদ্দীপকের তপু নির্ভীক সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । পরিণামে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। মাতৃভাষার জন্য তপুর এ আত্মত্যাগের চেতনাগত প্রেরণা প্রকারান্তরে দেশপ্রেমেরই নামান্তর। এ দেশপ্রেমের চেতনাই ভিন্নরূপে প্রকাশিত হয়েছে কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়, স্বদেশের প্রতি মমত্ববোধের মধ্য দিয়ে। উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতা এভাবেই চেতনাগত সম্পর্কসূত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ।

উত্তরের সারবস্তু: মাতৃভাষার জন্য ১৯৫২ সালে উদ্দীপকে বর্ণিত তপুর আত্মত্যাগের প্রেরণা প্রকারান্তরে দেশপ্রেমেরই নামান্তর। এ দেশপ্রেমের চেতনাই ভিন্নরূপে প্রকাশিত হয়েছে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায়, শৈশবের নদের অনুষঙ্গে স্বদেশের প্রতি কবির মমত্ববোধের মধ্য দিয়ে। উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতা এভাবেই চেতনাগত সম্পর্কসূত্রে তাৎপর্যপূর্ণ।

উদ্দীপক:- রোমেল এসএসসি পাশ করেই গ্রাম থেকে শহরে চলে এসেছে। এখন ঢাকায় ব্যবসায়-বাণিজ্য করছে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষ করে রাতে যখন সে ঘুমাতে যায়, তখন শৈশবের নানারকম স্মৃতি তার মনে পড়ে। গ্রামের মাঠ-ঘাট-নদী-প্রকৃতি যেন তাকে বারবার ডেকে যায় । ii. আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়— হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায় ।

ক. ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কোন ধরনের সাহিত্যকর্ম?
খ. ‘সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে’— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো ।
গ. উদ্দীপক (i)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো
ঘ. “উদ্দীপক (ii)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব প্রকাশিত হয়েছে”— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো ।

ক) ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসন জাতীয় সাহিত্যকর্ম ।

খ) কবি সর্বদা একান্ত নিরিবিলিতে কপোতাক্ষ নদের কথাই ভাবেন । কপোতাক্ষ নদ হচ্ছে কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত নদী । সুদূর ফ্রান্সে বসবাস করা সত্ত্বেও শৈশবের এ নদীটিকে ভুলতে পারেননি। তাই তিনি একান্ত মুহূর্তে সর্বদা কপোতাক্ষ নদের কথাই ভাবেন । প্রশ্নোক্ত পক্তিটিতে এ বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।

উত্তরের সারবস্তু: কবি সর্বদা একান্ত নিরিবিলিতে কপোতাক্ষ নদের কথাই ভাবেন ।

গ) উদ্দীপক (i)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ফুটে ওঠা কবির স্মৃতিকাতরতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের স্মৃতিচারণা করেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে বহুদূরে অবস্থানকালেও ভুলে থাকতে পারেননি জন্মভূমির প্রিয় এ নদের সাহচর্য। তাই প্রবাস জীবনেও প্রতি মুহূর্তে তাঁর মনে পড়ে কপোতাক্ষ নদের কথা । কপোতাক্ষ নদের জল তাঁর স্নেহের তৃষ্ণা মেটায়। সংগত কারণেই এ নদের স্নেহসুধা কবির কাছে মাতৃদুগ্ধের ধারা বলে মনে হয়েছে। এ সবই প্রবাসী কবিকে স্মৃতিকাতর করে তুলেছে।

উদ্দীপক (i)-এর রোমেল এসএসসি পাশ করেই শহরে চলে এসেছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে ব্যবসায়-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও শৈশবকালীন গ্রামে কাটানো দিনগুলোর কথা তার মনে পড়ে। বিশেষ করে, রাতে ঘুমাতে গেলে গ্রামের মাঠঘাট ও প্রকৃতির কথা তার বারবার মনে পড়ে। একইভাবে, ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবিও কপোতাক্ষকে কেন্দ্র করে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। শৈশবের স্মৃতিবিজরিত এ নদ যেন কবিকে স্নেহডোরে বেঁধে রেখেছে। আর তাই প্রবাস জীবনেও এ নদের স্নেহচ্ছায়ার কথা ভেবে আকুল হয়ে পড়েন কবি। সে বিবেচনায় উদ্দীপক (i)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় ফুটে ওঠা কবির স্মৃতিকাতরতার দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। একইভাবে, উদ্দীপক (i)-এর রোমেলও গ্রামের মাঠ ঘাট ও প্রকৃতির কথা ভেবে আকুল হয় ।

ঘ) ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় স্মৃতিকাতরতার আবরণে কবির অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে, যা উদ্দীপক (ii)-এর কবিতাংশেও একইভাবে পরিলক্ষিত হয় ।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষের প্রতি কবি হৃদয়ের গভীর ভাবাবেগ প্রকাশিত হয়েছে। একসময় কবি স্বীয় স্বপ্ন পূরণের জন্য স্বদেশ ছেড়ে ইউরোপে চলে যান। তবে সেখানে গিয়েও তিনি ভুলতে পারেননি মাতৃভূমি বাংলাকে।

সংগত কারণেই প্রিয় কপোতাক্ষের প্রতি তাঁর মিনতি, কপোতাক্ষ যেন কবির হয়ে তাঁর মাতৃভূমিপ্রীতি ও বাংলায় সাহিত্য সাধনার কথা দেশবাসীর কাছে পৌছে দেয় । উদ্দীপক (ii)-এর কবিতাংশে মাতৃভূমির প্রতি কবির গভীর অনুরাগ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলার সাথে কবি হৃদয়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। আর তাই মৃত্যুর পরও তিনি প্রিয় জন্মভূমি বাংলার কোলে বারবার ফিরে আসতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখি বা অন্য যেকোনো রূপেই হোক স্বদেশের প্রকৃতির সান্নিধ্যে ফিরে আসতে চান। এর মধ্য দিয়ে মাতৃভূমি বাংলার প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপক (ii)-এ ফুটে ওঠা মাতৃভূমিপ্রীতির এ দিকটি আলোচ্য কবিতাতেও একইভাবে পরিলক্ষিত হয়।

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবি তাঁর মাতৃভূমিকে গভীরভাবে ভালোবাসেন। সে ভালোবাসা থেকেই কবি মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি তাঁর অনুরাগের কথা দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কপোতাক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। একইভাবে, উদ্দীপক (ii)-এর কবিতাংশের কবিও মাতৃভূমি বাংলাকে এতটাই ভালোবাসেন যে মৃত্যুর পরও এদেশের বুকে তিনি ফিরে আসতে চান। অর্থাৎ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা ও উদ্দীপক (ii) উভয়ক্ষেত্রেই কবিদ্বয়ের অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ অর্থবহ।

উত্তরের সারবস্তু: ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা ও উদ্দীপক (ii) উভয়ক্ষেত্রেই মাতৃভূমি বাংলার প্রতি কবিদ্বয়ের গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।

কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কবির স্বদেশ প্রেমের পরিচয় দাও

কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা একটি চতুর্দশপদী কবিতা বা সনেট। কপোতাক্ষ নদ কবিতার মধ্যে দিয়ে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্বদেশপ্রীতির পরিচয় পাওয়া যায়। কপোতাক্ষ নদ কবিতার মধ্যে দিয়ে কবি স্বদেশের প্রতি তাঁর আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

ইউরোপীয় সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভের ইচ্ছা নিয়ে তিনি পাশ্চাত্যে পাড়ি দিলেও – নিজ স্বদেশের কথা এবং বঙ্গভূমির প্রতিটি বিষয়ের জন্য তাঁর হৃদয় সর্বদা ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। জননী বঙ্গভূমি যেন পরম মাতৃস্নেহে সর্বদা তাকে আহ্বান করছেন। সেজন্য বঙ্গজননীর তীব্র স্নেহ আহ্বানে তিনি বারবার স্বদেশে ফিরে যেতে চেয়েছেন।

বস্তুতঃপক্ষে কপোতাক্ষ নদ হল কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাগরদাড়ি গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত একটি নদ। এই নদকে ঘিরে কবির শৈশবের বিভিন্ন ঘটনা , বিভিন্ন স্মৃতি – কবির স্মরণে ও মননে সদাজাগ্রত। শৈশবের সেই দিনগুলি , কপোতাক্ষ নদের স্মৃতি – ইত্যাদি কবি মনকে আকুল করে তোলে। সেই সকল স্মৃতি যেন সর্বদা তাঁকে আহ্বান করে।

কবির নিজের নিজের ভাষায় –
” সতত , হে নদ , তুমি পড় মোর মনে !
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে ; ”

এই ছত্রটির মধ্যে দিয়েই কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্বদেশের প্রতি তাঁর তীব্র অনুরাগের পরিচয় দিয়েছেন। কপোতাক্ষ নদের স্মৃতি কবির মনে সদা জাগ্রত এবং একাকী সময়কালে সেই স্মৃতি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

শুধু জাগ্রত অবস্থায় নয় – ঘুমের মধ্যে , স্বপ্নের মধ্যে – সর্বদা কপোতাক্ষ নদ এবং তার সাথে জড়িত স্মৃতি কবিমনকে উতলা করে। মানুষ ঘুমের মধ্যে এবং স্বপ্নের মধ্যে তীব্রভাবে কাঙ্খিত বিষয়কে উপলব্ধি করে , তার পেছনে ছুটতে থাকে এবং তাঁকে যেন কাছে পায়। এ যেন এক মায়ামন্ত্র – যা কবিমনকে এক অনাবিল আনন্দে ভরিয়ে তোলে।

কবি বলেছেন –
” সতত ( যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শশানে মায়া মন্ত্রধ্বনি ) তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে ! ”

এই ছত্রটির মাধ্যমে একথা পরিষ্কার যে , কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মায়াময় স্বপ্নের মধ্যে কপোতাক্ষ নদের ধ্বনি শুনতে পান এবং এভাবেই কবি দেশান্তরে নিজের জন্মভুমিকে উপলব্ধি করেন।

পাশ্চাত্য দেশে কবি বহু নদনদী প্রত্যক্ষ করেছেন। প্রতিটি ভূমিরূপ , প্রতিটি নদনদী আপন সৌন্দর্যে অপরূপ। সকল সৌন্দর্য দর্শনেই হৃদয় ও মন জুড়িয়ে যায়। কিন্তু শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদ যেভাবে কবি মনকে আকুল করে তোলে তা যেন আর কেউই করতে পারে না।

কবি বলেছেন –
” বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ – দলে ,
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে ? ”

এখানে কবি পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন – পৃথিবীর সকল নদী আপন সৌন্দর্যে মহিমান্বিত হলেও তার মধ্যে যেন স্নেহের ছোঁয়া নেই। কবির শৈশবের সেই কপোতাক্ষ নদ যেন মাতৃরূপে এবং মাতৃস্নেহ ছায়ায় কবিকে বেঁধে রেখেছেন।

কবি পাশ্চাত্য দেশ গমনের পর সেখানে যেন মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এখানে কবির স্বদেশপ্রেম কপোতাক্ষ নদ-কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে কবি কপোতাক্ষ নদের জলকে মাতৃদুগ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কবির ভাষায় – ” দুগ্ধ-সোতোরূপী তুমি জন্মভূমি – স্তনে। ” প্রবাসের জীবন যন্ত্রণাময় ও হতাশাক্লিষ্ট। সেই হতাশাময় জীবনে কবির স্মৃতিপটে বারবার উপস্থিত হয়েছে শৈশবের সেই কপোতাক্ষ নদের চিত্র।

দেশান্তরে গিয়ে কবি শৈশবস্মৃতি যন্ত্রণায় কাতর। জীবনে হাজারো ব্যস্ততার মাঝে কবির মনে এ সংশয়ও এসেছে যে আর কখনো তিনি জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারবেন কি’না ! আর কখনো কপোতাক্ষ নদের কোলে তিনি পৌঁছতে পারবেন কি’না !

কবির নিজের ভাষায় –
” আর কি হবে দেখা ? ”

কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি জননী মাতৃভূমির কাছে এ প্রার্থনাও করেছেন যে – কপোতাক্ষ নদ যেন কবিকে স্নেহময় পরশে জড়িয়ে রাখে ; বঙ্গভূমির মানব যেন তাকে বন্ধুভাবে মনে রাখে।

পরিশেষে বলা যায় যে , ” কপোতাক্ষ নদ ” চতুর্দশপদী কবিতাটি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্বদেশপ্রেমের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এই চতুর্দশপদী কবিতাটিতে কবির স্বদেশপ্রেম কেন্দ্রীভূত হয়েছে কপোতাক্ষ নদকে কেন্দ্র করে। স্বদেশ বঙ্গভূমির থেকে দূরে গিয়েই কবি উপলব্ধি করেছেন – স্বদেশ বঙ্গভূমির মাতৃরূপী মহিমা ও স্নেহস্পর্শের। তাই এই চতুর্দশপদী কবিতাকে স্বদেশপ্রেমের এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন বলা যেতে পারে।

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | কপোতাক্ষ নদ

Q1. কপোতাক্ষ নদ কোন নদীর শাখা

Ans – কপোতাক্ষ নদ এর উৎপত্তি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব নদী থেকে এবং এটি পরে খুলনা জেলার কয়রায় খোলপটুয়া নদীতে গিয়ে পতিত হয়েছে।

Q2. কপোতাক্ষ নদ কোথায় অবস্থিত

Ans – কপোতাক্ষ নদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের অন্যতম বড় নদ।

Q3. কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি রচনাকালে কবি কোন দেশে ছিলেন

Ans – কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি রচনাকালে কবি ফ্রান্সে ছিলেন।

Q4. কপোতাক্ষ নদ কবিতার অষ্টকের মিলবিন্যাস কী

Ans – ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার প্রথম আট চরণের অন্তমিল হলো- কখকখকখখক।

Q5. কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত

Ans – মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ১০২ টি সনেট সংকলনের গ্রন্থ হলো “চতুর্দশপদী কবিতাবলী”। এ গ্রন্থের একটি উল্লেখযোগ্য সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ” কপোতাক্ষ নদ”।

Q6. কপোতাক্ষ নদ কোন ধরনের কবিতা

Ans – ‘কপােতাক্ষ নদ’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা।

Q7. কপোতাক্ষ নদ কবিতা কোন ছন্দে রচিত, কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি কোন ছন্দে লেখা

Ans – ছন্দ বিবেচনায় ‘কপোতাক্ষ নদ’ অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা।

Q8. কপোতাক্ষ নদ’ এর লেখক কে?, কপোতাক্ষ নদ কবিতার লেখক কে

Ans – বিদেশের মাটিতে বসে নিজের শৈশবের কপোতাক্ষ নদের কথা মনে করে কালজয়ী কবিতা লিখেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

Q9. কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কাকে প্রজা বলা হয়েছে

Ans – নদকে কপোতাক্ষ নদ কবিতায় প্রজা বলা হয়েছে।

Q10. কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কবির কাছে ভ্রান্তির ছলনা কোনটি

Ans – মায়া মন্ত্রধ্বনি, কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কবির কাছে ভ্রান্তির ছলনা।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।