অপরিচিতা গল্প, অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর, অপরিচিতা গল্পের MCQ, অপরিচিতা গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

অপরিচিতা গল্পের, অপরিচিতা গল্পের মূল কথা

অপরিচিতা গল্পে অনুপম নামে একটি চরিত্র আছে যিনি গল্পগত হিসেবে পুরো গল্পটি বর্ণনা করেছেন। এছাড়াও এই অনুপমকে অপরিচিতা গল্পের নায়ক ও বলা যেতে পারে।

অনুপম কে অপরিচিতা গল্পের নায়ক এবং কল্যাণী নামের একটি মেয়েকে এই গল্পের নায়িকা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর এই নায়ক অনুপম ছিল শিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বসম্পন্নহীন ব্যক্তি

অর্থাৎ অনুপম ছিল একটু বোকাসোকা টাইপের এবং তার একজন মামা ছিল যিনি অনুপম দের সংসার চালাতেন। এই কারণে অনুপমাকে তার ওস্তাদ শিমুল ফল এবং মাকাল ফলের সাথে তুলনা করতেন।

অনুপমের বয়স ছিল ২১ এবং তার মামার বয়স ছিল 27। আর অপরিচিতারা বাবার বয়স ছিল ৪০ এর আশেপাশ। এবং শম্ভুনাথ সেন ছিল ভালো ব্যক্তি এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ।

তার এই মামার কারণেই মূলত গল্পটিতে বেশ টুইস্ট আছে। অনুপমের বাবা পেশায় ওকালতি করতেন। এবং তার মা অনেক গরীব পরিবার পরিবার থেকে এসেছেন।

অনুপমের মামা ছিল একটু লোভী টাইপের এবং তিনিএই কারণে অনুপমের জন্য গরিব ঘরের মেয়ে বিয়ে করাতে চাইতেন ।

এর কারণ গরিব ঘরের মেয়ে এসে যেন তার বাড়িতে মাথা নিচু করে থাকে। এছাড়াও মামা গরিব ঘরের মেয়ে বিয়ে করানোর পাশাপাশি ওই মেয়ের বাবার থেকে বেশ ভালো অংকের টাকা যৌতুক হিসেবে ও চায়।

অনুপমের একজন বন্ধু ছিল যার নাম হরিশ এবং এই হরিশ কানপুরে কাজ করতো। হরিস এসে তার মামাকে একটি মেয়ের খবর দেয়।

মেয়েটির নাম ছিল কল্যাণী এবং অনুপম ও এই বিয়েতে রাজি হয়। কল্যাণীর বাবা ছিল পেশায় ডাক্তার।

এরপর তাদের বিয়ে পাকা হওয়ার পরে অনুপমের মামা সহ বিয়ে বাড়িতে চলে যায় বিয়ে করার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখা গেল কল্যাণীর বয়স ১৫ বছর।

কিন্তু মামা যেহেতু লোভী মানুষ তাই তিনি বিয়ের আগেই গহনা এবং সমস্ত জিনিস বুঝিয়ে নেওয়া শুরু করলেন।

বিয়ের আগে যখন মামা কনের বাবার দেওয়া গহনা গুলো পেয়েছিলেন তখন তিনি সাথে করে স্যকরা কে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই গহনা গুলো আসল নাকি নকল সেটা পরীক্ষা করার জন্য।

কিন্তু এই বিষয়টা কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এর ভালো লাগেনি। শমভুনাথ সেন এর আত্মসম্মান বোধে আঘাত করেছিল এই ঘটনাটি।

এরপর যখন এই বিষয়টি কল্যাণী জানতে পারে তখন সে সাথে সাথে বিয়ের পিঁড়িট থেকে উঠে যায় এবং বিয়ে করতে চায় না।

এর সাথে কল্যানীর বাবাও একমত হয় এবং নিজের সাহস দেখিয়ে সাথে সাথে সেখানে বিয়ে ভেঙ্গে দেয় বিয়ের দিনেই। এই ঘটনাটি বোঝানোর জন্যই মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরিচিতা গল্পটি লিখেছিলেন।

অপরিচিতা গল্পের মূল কথা বলতে গেলে আরো একটা বিষয় বলতে হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে যৌতুক নেওয়ার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে চেয়েছেন।

বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পরে শম্ভুনাথ সেন বড় যাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এই ঘটনাটিতে মামার অনেক রাগ হয় এবং তিনি অনেক রেগে যায়।

এরপর অনুপম ও অনেক কষ্ট পায় এবং বাড়িতে এসে খুব কান্না করে। অনেকদিন পর আবার অনুপম যখন কলকাতায় যায় তখন সেখানে রেল গাড়িতে বসে কল্যাণী মেয়েটিকে দেখেছিল।

কিন্তু হয়তো মেয়েটি তাকে চিনতে পারে নাই। এই গল্পটি মূলত এখানেই শেষ করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

উপরের লেখাগুলো পড়লে আপনারা অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু এবং অপরিচিতা গল্পের মূল কথা বুঝতে পারবেন। এখানে আমরা অপরিচিতা গল্পের মূলভাব ও আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।

অপরিচিতা গল্পের মূল বক্তব্য আলোচনা কর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরিচিতা গল্পের মাধ্যমে সেখানে দুইটি চরিত্র বিশেষভাবে উপস্থাপন করেছিলেন একটি হচ্ছে কল্যাণী এবং আরেকটি হচ্ছে শম্ভুনাথ বাবু ।

কল্যাণী হচ্ছে গল্পটির নায়িকা চরিত্রে এবং শম্ভুনাথ বাবু হচ্ছে নায়িকার বাবার চরিত্র ছিলেন। এখানে তিনি এই দুই চরিত্রের মাধ্যমেই বিয়ের যৌতুক প্রথার সাথে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছেন।

এছাড়াও বিয়েতে যেভাবে বর পক্ষ জোর করে এবং কনে পক্ষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এটাকেউ তিনি এই গল্পের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন।

আশা করি আপনারা অপরিচিতা গল্পের মূল বক্তব্যও খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। যেটা এই পোস্টে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ছােটগল্পের প্রাণপুরুষ, সমগ্র বাংলা সাহিত্যের, একজন সার্থক স্রষ্টা। তিনি বাংলা সাহিত্যে অসংখ্য কবিতা, উপন্যাস, ছােটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ প্রভৃতি সংযােজন করেছেন। অপরিচিতা তাঁর একটি অন্যতম গল্প। এ গল্পে তিনি প্রথমত নায়ক অনুপমের রূপমাধুর্য ও তার বেড়ে ওঠার বর্ণনা দিয়েছেন।

পিতার মৃত্যুর পর অনুপম মায়ের কাছেই মানুষ হয়। পারিবারিক কোনাে বিষয়ে তাকে মাথা ঘামাতে হয়নি। অনুপম ছিল মায়ের অনুগত সন্তান। এ গল্পে সে নিজেকে একজন ভালাে মানুষ ও সৎ পাত্র হিসেবে দাবি করে। তার বন্ধু হরিশ কানপুরে চাকরি করত। ছুটিতে এসে সে-ই প্রথম অনুপমকে বিয়ের কথা বলে।

বন্ধুর মুখে বিয়ের কথা শুনে তার মনের বাগিচায় বসন্তের কোকিল ডেকে ওঠে। নিয়মানুসারে বিয়ের কাজ ক্রমান্বয়ে অগ্রসর হতে থাকে। অনুপমের বিয়ের জন্য কন্যা দেখা হয়। কন্যা (কল্যাণী) ছিল বেশ সুন্দরী ও প্রাণচঞলা। আর কন্যার পিতা শম্ভুনাথ সেন ছিলেন স্পষ্টভাষী ও সুপুরুষ।

অপরিচিতা গল্পের ব্যাখ্যা

‘অপরিচিতা’ বাগদত্তার প্রতি মনস্তাপে ভেঙে পড়া এক ব্যক্তিত্বহীন যুবকের প্রেমানুভূতির গল্প তার অনুশোচনাবোধের অকপট কথামালা। এই গল্পে অপরিচিতা বিশেষণের আড়ালে রয়েছে এক বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী নারী, যে সমাজে জেঁকে বসা ঘৃণ্য যৌতুকপ্রথার বিরোধিতা করেছে।

গল্পের নায়ক অনুপমের জীবন সম্পর্কে সহজ স্বীকারোক্তি দিয়ে এ গল্প শুরু হয়। অনুপম দেখতে সুশ্রী ছিল। কিন্তু গুণহীনতার কারণে শিক্ষকরা তাকে শিমুল ফুল ও মাকাল ফলের সাথে তুলনা করতেন। পিতার মৃত্যুর পর মায়ের স্নেহেই সে বড়ো হয়। মায়ের অনুগত সন্তান বলেই কখনো মাতৃ-আজ্ঞার বিপরীতে যাওয়ার সাহস সে করেনি। কিন্তু তার আসল অভিভাবক তার মামা, যিনি অনুপমদের সংসারের সবকিছুর ভার নিজ কাঁধে নিয়ে নিয়েছেন।

অনুপমের বন্ধু হরিশ কানপুরে কাজ করত। ছুটিতে কলকাতা এসে সেই প্রথম বিয়ের প্রস্তাবটা দেয়। কল্যাণী নামের মেয়েটির চেহারা ও গুণের কথা শোনার পর থেকে অনুপমের শরীর মন আলো-ছায়া বুনতে লাগল। কল্যাণীকে নিয়ে ভাবনার যেন শেষ নেই অনুপমের। এদিকে অনুপমের মামা চাইতেন, তার ভাগ্নের বউ হয়ে এমন ঘরের মেয়ে আসবে, যে মাথা হেঁট করে থাকবে। মেয়ের বাবা হবেন এমন মানসিকতার, যিনি টাকা না থাকলেও টাকা দিতে পিছপা হবেন না। হরিশের সুপারিশে বিয়ের দিন-তারিখ, দেনা-পাওনা সব পাকাপাকি হয়ে গেল। কনের বাবা শম্ভুনাথ ছিলেন অত্যন্ত ঠান্ডা প্রকৃতির মানুষ, যাঁকে বাইরে থেকে দেখে ভেতরের চিত্রটা বোঝা মুশকিল।

বিয়ের দিন তাঁর পরিবর্তে উকিল বন্ধুই বরপক্ষকে সমাদরে গ্রহণ করেন। কিন্তু যৌতুকের স্বর্ণ নিয়ে অনুপমের মামার বাড়াবাড়ি রকম আচরণে শম্ভুনাথ অপমান বোধ করেন। এখানেও অনুপম কোনো ভূমিকা পালন করে না। মামার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে এ ধরনের অপমান থেকে হবু শ্বশুরকে রক্ষার কোনো চেষ্টাই অনুপম করেনি। এখানেই কাহিনি জটিলাকার ধারণ করে। অপমানিত হয়ে কনের বাবা বিয়ে ভেঙে দেন। বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনুপম। সে হারায় তার মনোরাজ্যের সেই অপরিচিত প্রেয়সীকে।

এভাবে বছরখানেক পার হওয়ার পর অপ্রত্যাশিতভাবে একদিন কল্যাণীর সঙ্গে অনুপমের কানপুরে গিয়ে কল্যাণীকে না চেনা সত্ত্বেও কল্যাণীর প্রাণচঞ্চলতা, প্রতিবাদী মানসিকতা ও হাস্যময়ী শিক্ষয়ত্রীর রূপ তাকে মুগ্ধ করে। ট্রেন থেকে নামার সময় সে জানতে পারে এ সেই কল্যাণী। অনুপমের বোধের পরিবর্তন আসে। পরে অনুপম মা ও মামা উভয়কে উপেক্ষা করে দেখা যায় ট্রেনে। শম্ভুনাথ বাবুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। শম্ভুনাথ বাবু অনুপমের এ পরিবর্তনে খুশি হয়ে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু কল্যাণী ততদিনে নারীশিক্ষার সুমহান ব্রত গ্রহণ করে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবু অনুপম আশা ছাড়ে না। কল্যাণীর আশপাশে থেকে তাকে প্রতিনিয়ত দেখেই সে খুশি।

অনুপমের একটি উক্তি এখানে তুলে ধরা হলো: “তাই বৎসরের পর বৎসর যায় আমি এখানেই আছি। দেখা হয়, সেই কণ্ঠ শুনি, যখন সুবিধা পাই কিছু তার কাজ করিয়া দিই— আর মন বলে এই তো জায়গা পাইয়াছি। ওগো অপরিচিতা, তোমার পরিচয়ের শেষ হইল না, শেষ হইবে না।”

‘অপরিচিতা’ ছোটগল্পে এক বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী নারীর কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। অমানবিক, ঘৃণ্য যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের কথামালায় সমৃদ্ধ এই গল্পটি। ‘অপরিচিতা’ উত্তম পুরুষের জবানিতে লেখা একটি গল্প। গল্পের কথক অনুপম বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের যুদ্ধসংলগ্ন সময়ের সেই বাঙালি যুবক, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও ব্যক্তিত্ব রহিত, পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুলমাত্র। গল্পটিতে পুরুষতন্ত্রের অমানবিকতার স্ফূরণ যেমন ঘটেছে, তেমনি পুরুষের ভাষ্যে নারীর প্রশস্তিও কীর্তিত হয়েছে।

অপরিচিতা গল্পের নামকরণ

‘অপরিচিতা’ ছোটগল্পের নামকরণ নির্ধারিত হয়েছে এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের ওপর ভিত্তি করে। এ গল্পে অপরিচিত মানসীর প্রতি প্রেমময় হৃদয়ের ব্যাকুলতা মূর্তরূপ পেয়েছে। গল্পের নায়িকা কল্যাণী গল্পজুড়ে নায়ক অনুপমের কাছে অপরিচিতই রয়ে যায়। অনুপমের একটি উক্তি দ্বারা আরও স্পষ্ট হয়, যখন সে বলে— ‘ওগো অপরিচিতা, তোমার পরিচয়ের শেষ হইল না, শেষ হইবে না; কিন্তু ভাগ্য আমার ভালো এই তো জায়গা পাইয়াছি। অনুপমের এমন উপলব্ধির কারণ হলো শেষ পর্যন্ত সে কল্যাণীকে জয় করতে পারেনি। সেই বিয়ের আসর হতে উঠে চলে আসা, আর পরবর্তী সময়ে কল্যাণীর বিয়ে না করার প্রতিজ্ঞার ফলে কল্যাণী অনুপমের কাছে অধরা থেকে যায়। তাই মূলবক্তব্যের এই অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকেই লেখক ‘অপরিচিতা’ গল্পের নামকরণের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

অপরিচিতা গল্পের MCQ, অপরিচিতা গল্পের MCQ প্রশ্নের উত্তর

অনুপম কার হাতে মানুষ?
ক. মা’র
খ. বাবার
গ. মামার
ঘ. ধাত্রীর

সঠিক উত্তর: ক. মা’র

অনুপমের মা কেমন ঘরের মেয়ে?
ক. বামুনের
খ. গরিবের
গ. কায়েতের
ঘ. ধনীর

সঠিক উত্তর: খ. গরিবের

কাকে দেখলে অনড়বপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাই বলে মনে হবে?
ক. কার্তিক
খ. অনুপমকে
গ. হরিশ
ঘ. মামা

সঠিক উত্তর: খ. অনুপমকে

অনুপমের থেকে তার মামা বড়জোর কত বছরের বড়?
ক. দুই
খ. তিন
গ. চার
ঘ. ছয়

সঠিক উত্তর: গ. চার

কন্যার পিতামাত্রেই কী স্বীকার করবেন?
ক. গল্পকথক খুবই সুদর্শন
খ. গল্পকথক খুবই বিনয়ী
গ. গল্পকথক একজন সুনাগরিক
ঘ. গল্পকথক একজন সৎপাত্র

সঠিক উত্তর: ঘ. গল্পকথক একজন সৎপাত্র

অনুপম নিতান্তই ভালো মানুষ কেন?
ক. ধূমপানের অভ্যাস না থাকায়
খ. ভালো মানুষ হওয়ার কোনো ঝঞ্ঝাট নাই বলে
গ. মন্দলোকদের সাথে না মেশায়
ঘ. ভালো বংশে জন্মগ্রহণ করায়

সঠিক উত্তর: খ. ভালো মানুষ হওয়ার কোনো ঝঞ্ঝাট নাই বলে

কেমন ঘর থেকে অনুপমের সম্বন্ধ এসেছিল?
ক. খান্দানি ঘর
খ. বনেদি ঘর
গ. অনেক বড় ঘর
ঘ. অনেক ছোট ঘর

সঠিক উত্তর: গ. অনেক বড় ঘর

‘অপরিচিতা’ গল্পে উল্লেখকৃত বিবাহ সম্বন্ধে কার একটা বিশেষ মত ছিল?
ক. অনুপমের
খ. মা’র
গ. মামার
ঘ. কল্যাণীর

সঠিক উত্তর: গ. মামার

অনুপমের বন্ধুর নাম কী?
ক. হিরণ
খ. হরিশ
গ. নরেশ
ঘ. পরেশ

সঠিক উত্তর: খ. হরিশ

হরিশ কোথায় কাজ করে?
ক. মালদহে
খ. বীরভূমে
গ. কানপুরে
ঘ. ভুজপুরে

সঠিক উত্তর: গ. কানপুরে

হরিশ ছুটিতে কোথায় এসেছিল?
ক. মালদহে
খ. কানপুরে
গ. আসানসোলে
ঘ. কলিকাতায়

সঠিক উত্তর: ঘ. কলিকাতায়

অনুপমের ‘মন উতলা’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
ক. উদ্বেগ
খ. উৎকণ্ঠা
গ. শঙ্কা
ঘ. আকুলতা

সঠিক উত্তর: ঘ. আকুলতা

‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপম ‘এই অবকাশ’ বলতে কোন সময়ে বোঝানো হয়েছে?
ক. এম. এ. পাসের পরের সময়
খ. কলেজের ছুটির সময়
গ. বিয়ের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরের সময়
ঘ. বিয়ের আয়োজনের পূর্বের সময়

সঠিক উত্তর: ক. এম. এ. পাসের পরের সময়

কোন বাতাসে অনুপমের শরীর মন কাঁপতে লাগল?
ক. গ্রীষ্মের
খ. বর্ষার
গ. শীতের
ঘ. বসন্তের

সঠিক উত্তর: ঘ. বসন্তের

হরিশ কোন বিষয়ে অদ্বিতীয় ছিল?
ক. ঘটকালিতে
খ. তাস পেটাতে
গ. আসর জমাতে
ঘ. গুল মারতে

সঠিক উত্তর: গ. আসর জমাতে

কার মন ছিল তৃষার্ত?
ক. হরিশের
খ. অনুপমের
গ. মামার
ঘ. মা’র

সঠিক উত্তর: খ. অনুপমের

মামা কাকে পেলে ছাড়তে চান না?
ক. অনুপমকে
খ. হরিশকে
গ. কল্যাণীকে
ঘ. কল্যাণীর বাবাকে

সঠিক উত্তর: ঘ. কল্যাণীর বাবাকে

কথাটা কার বৈঠকে উঠল?
ক. বাবার
খ. মা’র
গ. হরিশের
ঘ. মামার

সঠিক উত্তর: ঘ. মামার

মামার কাছে মেয়ের চেয়ে মেয়ের বাপের দেশত্যাগ করে পশ্চিমে গিয়ে বাস করার কারণ কী?
ক. গুরুতর
খ. গুরুত্বপূর্ণ
গ. জরুরি
ঘ. সাংঘাতিক

সঠিক উত্তর: ক. গুরুতর

‘অপরিচিতা’ গল্পে উল্লেখকৃত কার পেছনে মেয়ের বাপের লক্ষীর ঘটটি উপুড় করে দিতে দ্বিধা হবে না?
ক. দেশে সুন্দরী কন্যা নিয়ে বাস করা দায়
খ. আর্থিক দৈন্যে দেশে সমাজ রক্ষা করে চলা দায়
গ. পশ্চিমে বেশিরভাগ পুণ্যভূমি অবস্থিত
ঘ. মেয়ের বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায়

সঠিক উত্তর: গ. পশ্চিমে বেশিরভাগ পুণ্যভূমি অবস্থিত

পশ্চিমে মেয়ের বাবা কী অবস্থায় থাকেন?
ক. রাজার হালে
খ. জমিদারের মতো
গ. প্রজার মতো
ঘ. গরিব গৃহস্থের মতো

সঠিক উত্তর: ঘ. গরিব গৃহস্থের মতো

‘অপরিচিতা’ গল্পে উল্লেখকৃত কার পেছনে মেয়ের বাপের লক্ষীর ঘটটি উপুড় করে দিতে দ্বিধা হবে না?
ক. জামাইয়ের
খ. মেয়ের
গ. অনুপমের
ঘ. মেয়ের শাশুড়ির

সঠিক উত্তর: ঘ. মেয়ের শাশুড়ির

বরের হাট মহার্ঘ কেন?
ক. যোগ্য বরের অভাবে
খ. যৌতুকের কারণে
গ. স্থান-কাল-পাত্রের বাছবিচারে
ঘ. মেয়ের বয়সের কারণে

সঠিক উত্তর: খ. যৌতুকের কারণে

অনুপমের মামার মন নরম হলো কেন?
ক. মেয়ের রূপ সৌন্দর্যে
খ. মেয়ের বংশের কৌলিন্যে
গ. মেয়ের বাবার আতিথেয়তায়
ঘ. মেয়ের বাবার অর্থের লোভে

সঠিক উত্তর: ঘ. মেয়ের বাবার অর্থের লোভে

‘অপরিচিতা’ গল্পে ‘বিবাহের ভূমিকা-অংশটা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. মেয়ের রূপ সৌন্দর্যে
খ. মেয়ের বংশের কৌলিন্যে
গ. মেয়ের বাবার আতিথেয়তায়
ঘ. মেয়ের বাবার অর্থের লোভে

সঠিক উত্তর: ক. মেয়ের রূপ সৌন্দর্যে

কলিকাতার বাইরে বাকি পৃথিবীটাকে মামা কিসের অন্তর্গত বলে মনে করেন?
ক. আন্দামান দ্বীপ
খ. লঙ্কা দ্বীপ
গ. সুবর্ণদ্বীপ
ঘ. নিঝুম দ্বীপ

সঠিক উত্তর: ক. আন্দামান দ্বীপ

‘অপরিচিতা’ গল্পের কথকের মনের মধ্যে কী ইচ্ছা ছিল?
ক. কানপুরে যাওয়ার
খ. কোনড়বগর ঘুরে আসার
গ. যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করার
ঘ. লুকিয়ে বিয়ে করার

সঠিক উত্তর: গ. যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করার

অনুপমের নিজের চোখে মেয়ে দেখা হলো না কেন?
ক. বিষয়টি আপত্তিকর বলে
খ. কুলীন বংশে এটি চলে না
গ. মামার এতে ঘোরতর আপত্তি ছিল
ঘ. সাহস করে প্রস্তাব করতে না পারায়

সঠিক উত্তর: ঘ. সাহস করে প্রস্তাব করতে না পারায়

বিনুদাদা ফিরে এসে মেয়ে সম্পর্কে কী বললেন?
ক. মেয়ে চমৎকার সুন্দরী
খ. মেয়েটা খুবই মিষ্টি
গ. খাঁটি সোনা বটে
ঘ. হীরের টুকরো একটা

সঠিক উত্তর: গ. খাঁটি সোনা বটে

বিনুদার ভাষাটা কেমন?
ক. বড় নীরস
খ. অত্যন্ত আঁট
গ. নিতান্ত সাদামাটা
ঘ. চলনসই

সঠিক উত্তর: খ. অত্যন্ত আঁট

বিয়ে উপলক্ষে কন্যাপক্ষকে কোথায় আসতে হলো?
ক. কলকাতায়
খ. কানপুরে
গ. বোলপুরে
ঘ. শিয়ালদহে

সঠিক উত্তর: ক. কলকাতায়

৪২. ‘অপরিচিতা’ গল্পের কন্যার পিতার নাম কী?
ক. বিশ্বনাথ ঘোষ
খ. শম্ভুনাথ সেন
গ. আদ্যিনাথ বৈদ্য
ঘ. বিশ্বম্ভর দাস

সঠিক উত্তর: ঘ. বিশ্বম্ভর দাস

বিয়ের কত দিন পূর্বে কন্যার পিতা পাত্রকে দেখেন?
ক. এক দিন
খ. দুই দিন
গ. তিন দিন
ঘ. চার দিন

সঠিক উত্তর: গ. তিন দিন

‘অপরিচিতা’ গল্পের কন্যার পিতার বয়স কত?
ক. চল্লিশের কিছু এপারে বা ওপারে
খ. পয়তাল্লিশের কিছু এপারে বা ওপারে
গ. পঞ্চাশের কিছু এপারে বা ওপারে
ঘ. পঞ্চানড়বর কিছু এপারে বা ওপারে

সঠিক উত্তর: ক. চল্লিশের কিছু এপারে বা ওপারে

পাত্র দেখে কন্যার বাপ খুশি কিনা তা বোঝা শক্ত ছিল। কারণ-
ক. তিনি ছিলেন খুবই অন্যমনস্ক
খ. তিনি ছিলেন খুবই চুপচাপ
গ. তিনি ছিলেন খুবই চাপা স্বভাবের
ঘ. তিনি ছিলেন খুবই গম্ভীর

সঠিক উত্তর: খ. তিনি ছিলেন খুবই চুপচাপ

কী কারণে মামার মুখ অনর্গল ছুটিতেছিল?
ক. অভ্যাসবশে
খ. মুদ্রাদোষে
গ. ধন-মানের বাগাড়ম্বরে
ঘ. যৌতুকের লোভে

সঠিক উত্তর: গ. ধন-মানের বাগাড়ম্বরে

শম্ভুনাথ বাবু কোন প্রসঙ্গের আলোচনায় একেবারেই যোগ দিলেন না?
ক. যৌতুকের
খ. কৌলিন্যের
গ. ভাল-মন্দের
ঘ. ধন-মানের

সঠিক উত্তর: ঘ. ধন-মানের

“শম্ভুনাথ বাবু যখন উঠিলেন তখন মামা সংক্ষেপে উপর হইতেই তাঁকে বিদায় করিলেন।” -এই ঘটনার মাধ্যমে নিচের কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে?
ক. মামার বড়লোকি
খ. পাত্রপক্ষের আভিজাত্য
গ. পাত্রপক্ষের প্রতি অবজ্ঞা
ঘ. সৌজন্যতাবোধের অভাব

সঠিক উত্তর: ক. মামার বড়লোকি

‘অপরিচিতা’ গল্পে ‘পণ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছিল?
ক. অঙ্গীকার
খ. সংকল্প
গ. শর্ত
ঘ. প্রতিজ্ঞা

সঠিক উত্তর: ঘ. প্রতিজ্ঞা

পণ সম্বন্ধে দুই পক্ষে কেমন কথা ঠিক হয়েছিল?
ক. পাকাপাকি
খ. বাঁধাধরা
গ. কড়াকড়ি
ঘ. মোটামুটি

সঠিক উত্তর: ক. পাকাপাকি

অপরিচিতা গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

পণ্ডিতমশায় অনুপমকে কোন ফুলের সঙ্গে তুলনা করতেন?

উত্তর : শিমল ফুল।

পণ্ডিতমশায় অনুপমকে শিমুল ফুল ও মাকাল ফলের সঙ্গে তুলনা করতেন কেন?

উত্তর : গুণহীনতার কারণে।

অনুপমের মা কেমন ঘরের মেয়ে ছিলেন?

উত্তর : অনুপমের মা গরিব ঘরের মেয়ে ছিলেন।

স্বয়ংবরা’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : যে মেয়ে নিজেই স্বামী নির্বাচন করে ।

পৃথিবীতে অনুপমের ভাগ্যদেবতার প্রধান এজেন্ট কে?

উত্তর : অনুপমের মামা।।

টাকার প্রতি অনুপমের মামার আসক্তি কেমন?

উত্তর : তার অস্থিমজ্জায় জড়িত।

অনুপমের বন্ধুর নাম কী?

উত্তর : অনুপমের বন্ধুর নাম হরিশ।

উমেদারি’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : চাকরির আশায় অন্যের কাছে ধরনা দেওয়া।

হরিশ মানুষটা কেমন প্রকৃতির ছিল?

উত্তর : হরিশ মানুষটা ছিল রসিক প্রকৃতির।

মেয়ের চেয়ে মেয়ের বাবার খবর কার কাছে বেশি | গুরুতর ছিল?

উত্তর : অনুপমের মামার কাছে।

কল্যাণীর পিতা বর্তমানে কোথায় বাস করছেন?

উত্তর : পশ্চিমে।

বিয়ের সময় কল্যাণীর বয়স কত ছিল?

উত্তর : পনেরাে বছর।

বরের হাট কেমন?

উত্তর : মহার্ঘ।

বিয়ের সময় অনুপম ও কল্যাণীর বয়সের ব্যবধান কত ছিল?

উত্তর : আট বছর।

ধনুকভাঙা পণ’ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : অতি কঠোর পণ বা প্রতিজ্ঞা।

অপরিচিতা জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

কলকাতার বাইরের পৃথিবীটাকে আন্দামান দ্বীপের | অন্তর্গত বলে জানেন কে?

উত্তর : অনুপমের মামা।

সম্পর্কের দিক থেকে বিনু অনুপমের কেমন আত্মীয় ছিলেন?

উত্তর : পিসতুতাে ভাই।

কার রুচি ও দক্ষতার ওপর অনুপমের ষােলাে-আনা নির্ভর ছিল?

উত্তর : বিনুদাদার।

অপরিচিতা গল্পের কন্যার/কল্যাণীর পিতার নাম কী?

উত্তর : শম্ভুনাথ সেন।

শম্ভুনাথ বাবু কখন অনুপমকে প্রথম দেখেন?

উত্তর : বিবাহের তিন দিন পূর্বে।

অনুপমকে আশীর্বাদ করা হয় কখন?

উত্তর : বিবাহের তিন দিন পূর্বে।

বিয়েবাড়িতে মামা সেকরাকে কেন নিয়ে গিয়েছিলেন?

উত্তর : সােনার গহনা পরীক্ষা করে দেখার জন্য।

বরপক্ষের কোনটি অতি মাত্রায় গুরুত্বের দাবি রাখে?

উত্তর : পণের ব্যাপারটি

হাল’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?

উত্তর : সাবেক ।

শম্ভুনাথ সেন কেমন স্বভাবের?

উত্তর : চুপচাপ স্বভাবের ।

বিবাহের দিন কল্যাণী কোন রঙের শাড়ি পরেছিল?

উত্তর : লাল রঙের শাড়ি।

মাতুল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : মামা।

অনুপমের অন্তরে কী চিরজীবনের গানের ধুয়া হয়ে রইল?

উত্তর : জায়গা আছে’ কথাটি।

শম্ভুনাথ সেন কোথাকার ডাক্তার?

উত্তর : কানপুরের।

কার সরস রসনার গুণ আছে?

উত্তর : হরিশের।

“মন্দ নয় হে! খাঁটি সােনা বটে!”- কে?

উত্তর : কল্যাণী।

“অনুপম এখানে কী করিবে ? ও সভায় গিয়া বসুক।” | উক্তিটি কার?

উত্তর : মামার।

অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন

অপরিচিতা গল্পের অনুপমের চরিত্র

অপরিচিতা’ গল্পটির প্রধান চরিত্র অনুপমের দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তম পুরুষের বর্ণনা করা হয়েছে।

অল্প বয়সে বাবাকে হারায় অনুপম। এরপর মায়ের তত্ত্বাবধানে বড় হয়েছে সে। অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোটো ভাইটির মতো অতি আদরযতেœ লালিত-পালিত হয় অনুপম। এরপর আছেন তার মামা। তিনি অতিশয় বিষয়বুদ্ধি সম্পন্ন লোক। তার অনুশাসনে অনুপমের জীবনের সব ঘটনা নিয়ন্ত্রিতভাবে সংঘটিত হয়। তাই অনুপমকে কোনো ভাবনাই ভাবতে হয়নি। অনুপম তার নিজের সম্পর্কে বা পরিবারের কোন বিষয় নিয়েও কোন ভাবতে হয় না।

‘অপরিচিতা’ গল্পের প্রধান চরিত্র অনুপম বাল্যকালে পিতাকে হারায়, মাতার আদরে ও মামার শাসনে বড় হয়, ফলে পরিবারের মতামতকেই সবসময় নিঃসঙ্কোচে গ্রহণ করে। অনুপমের মামা সংসারের প্রধান কর্তা। তিনি সবসময় জিততে চান এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে কাউকে বিশ্বাস করেন না। অনুপম কল্যাণীর বিয়ে না হওয়ার ক্ষেত্রে তিনিই সবচেয়ে বেশি দায়ী।

হরিশ অত্যন্ত সদালাপী ও বিবেচক। কল্যাণী ও অনুপমের বিয়ের ঘটকালি তার মাধ্যমেই হয়। মায়ের তীর্থ-যাত্রার সময় ট্রেনে অপরিচিত নারী কণ্ঠের ঝংকার অনুপমকে মুগ্ধ করে। সে কণ্ঠ কল্যাণীর।

ট্রেনের সিট রিজার্ভের বিষয়ে গার্ড মিথ্যা বললে অনুপম কোনো প্রতিবাদ করে না, কিন্তু কল্যাণী জোর প্রতিবাদ করে, যা অনুপমের মাকে বিস্মিত করে। কল্যাণীর সাহস ও সৌন্দর্যে অনুপম এতোই আপ্লুত হয় যে, নিজের উদ্যোগে সে কল্যাণীকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু কল্যাণী রাজি হয় না।

অপরিচিতা গল্পের কল্যাণী চরিত্র বর্ণনা কর

অপরিচিতা গল্পের নায়িকা কল্যাণী স্বাধীনচেতা ও ব্যক্তিত্বময়ী এক চরিত্র। কাপুরুষ ও সিদ্ধান্ত নিতে অপরাগ অনুপমকে বিয়ে না করে আজীবন দেশমাতৃকার সেবা করার শপথ নেয়। অপরিচিতা গল্পের কল্যাণীকে আমরা দেখতে পাই প্রতিবাদী রূপে। সে রেল কর্মচারীর সঙ্গে হিন্দিতে, আর ইংরেজ ভদ্রলোকের সঙ্গে ইংরেজিতে তর্ক করে। ভুল ভাঙ্গার পর অনুপম যখন কল্যাণীর কাছে ফিরে আসতে চায় তখন ব্যক্তিত্বময়ী কল্যাণী অনুপমের দিকে মনোযোগ না দিয়ে দেশের কল্যাণে মনোযোগ দেয়।

অপরিচিতা গল্পের শীর্ষ মুহূর্ত কোনটি

অপরিচিতা গল্পের কাহিনীকে আমরা দেখি বিষয়বুদ্ধি সম্পন্ন অনুপমের মামার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে কল্যাণীর বাবা বিয়ের আসর থেকে বরযাত্রীদের বিদায় করে দেয়। বাবার মতোই ব্যক্তিত্বময়ী কল্যাণী অনুপমের সঙ্গে যথোপযুক্ত আচরণ করে। গল্পের শেষে অনুপম মায়ের আজ্ঞা আর মামার নির্দেশ অমান্য করে কল্যাণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও কল্যাণী অনুপমকে ফিরিয়ে দেয়।

গল্পের কাহিনীর মধ্যে ব্যাপক বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। পঠিত গল্পের চরিত্রগুলো সমাজের প্রথাবিরোধী, কুসংস্কার বিরোধী। অন্যদিকে উদ্দীপকের চরিত্রগুলো সামাজিক প্রথা বা কুসংস্কারের বাইরে এসে যুক্তির আলোয় আপন মুক্তির স্বাদ নিতে অপারগ।

আরো পড়তে: অপরিচিতা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন ১: এমএ পাস রফিক বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথাবার্তা বলার সময় বলে নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে বিয়ে নয়। কিন্তু পিতৃহীন রফিক চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারে না। পর সম্পদ লােভী চাচার আদেশে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। নিজের মতামত প্রকাশের মানসিক দৃঢ়তা না থাকার কারণে বিয়েবাড়িতে যৌতুকের মালামাল নিয়ে লােভী চাচার প্রশ্নের কারণে বিয়ে ভেঙে যায় । রফিকও চাচার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিয়েবাড়ি থেকে অসহায়ের মতাে চলে আসে।

ক, কল্যাণী কোন স্টেশনে নেমেছিল?

খ. কন্যার পিতা মাত্রেই স্বীকার করিবেন, আমি সৎপাত্র’- কেন?

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত রফিক চরিত্রের সাথে অপরিচিতা’ গল্পের অনুপম চরিত্রের সাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর।

ঘ. দৃঢ়তার অভাবে রফিক নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চাচার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে- ‘অপরিচিতা গল্পের আলােকে এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তুমি কি একমত?

ক উত্তরঃ কল্যাণী কানপুর স্টেশনে নেমেছিল।

খ উত্তরঃ কন্যার পিতা মাত্রেই স্বীকার করিবেন, আমি সৎপাত্র’- এ কথা বলতে বােঝানাে হয়েছে যে, সুপাত্রের যেসব গুণ থাকা দরকার সেগুলাের সবই অনুপমের মধ্যে ছিল। তাই যেকোনাে কন্যার পিতা মাত্রেই তাকে সৎপাত্র হিসেবে স্বীকার করবেন। অনুপম সুদর্শন, শিক্ষিত।

মায়ের হাতেই সে মানুষ। মায়ের কোল যেন সে আজও ছাড়তে পারেনি। সে নিতান্ত ভালােমানুষ, | কোনাে বাজে নেশা নেই তার। এমনকি তামাকটুকু পর্যন্ত সে খায় না। বিয়ের জন্য মায়ের কথা সাধারণত এ ধরনের পাত্রই পছন্দ করেন। এ কারণেই বলা হয়েছে, কন্যার পিতা মাত্রেই তাকে সৎপাত্র হিসেবে স্বীকার করবেন।

সারকথা : অনুপমের মধ্যে ভালাে, ভদ্র ছেলের সব গুণ বিদ্যমান। এ কারণে কনের পিতা মাত্রেই তাকে সৎপাত্র বলে স্বীকার করবেন।

গ উত্তরঃ ব্যক্তিত্বহীনতায় উদ্দীপকে বর্ণিত রফিক চরিত্রের সঙ্গে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপম চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে। ব্যক্তিত্ববান মানুষ নিজ চিন্তা-ভাবনা ও মতামতকে গুরুত্ব দেয়। আর যার ব্যক্তিত্বই গড়ে ওঠেনি তার নিজস্বতা বলতে কিছু নেই। অন্যের ইচ্ছায় সে চালিত হয়। এ ধরনের মানুষ চোখের সামনে অন্যায় দেখেও তার প্রতিবাদ করে না। সর্বত্রই তারা নির্লিপ্ত থাকে।

‘অপরিচিতা গল্পের অনুপমের মধ্যে এই নির্লিপ্ততা, ব্যক্তিত্বহীনতা প্রবলভাবে লক্ষণীয়। মামা আর মায়ের ইচ্ছাই তার ইচ্ছা। মামা তার বিয়ে ঠিক করে এবং বিয়ের আসরে মামার হীন কর্মকাণ্ডকে সে প্রশ্রয় দেয়। মামার অন্যায়কে মেনে নিয়ে বিয়ে না করেই বিয়েবাড়ি থেকে তাদের ফিরে আসতে হয়।

উদ্দীপকের রফিকও অনুপমের মতােই ব্যক্তিত্বহীন। চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে না পারার কারণে চাচার আদেশেই তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। যৌতুকের মালামাল নিয়ে কনেপক্ষের সঙ্গে চাচার ঝামেলা বাধে এবং রফিক তার চাচার বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু বলতে পারে না। এভাবে অনুপম ও রফিক চরিত্র পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ।

সারকথা : ব্যক্তিত্বহীনতা, নির্লিপ্ততায় উদ্দীপকের রফিকের সঙ্গে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ উত্তরঃ দৃঢ়তার অভাবেই রফিক নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চাচার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে অপরিচিতা’ গল্পের আলােকে এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত। স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সবার আগে প্রয়ােজন মত প্রকাশের সাহস ও মানসিক দৃঢ়তা। যাদের সেই সাহস ও দৃঢ়তা নেই তারা সহজেই অন্যের কাছে নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দেয়। চোখের সামনে অন্যায় দেখলেও ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারা এর প্রতিবাদ করতে পারে না।

উদ্দীপকের রফিক এমনই মানসিক দৃঢ়তাহীন এক ব্যক্তি। চাচার সিদ্ধান্তের কাছে তার নিজের ইচ্ছাকে সে জলাঞ্জলি দিয়েছে। পর সম্পদলােভী চাচার লােভকে পরিতৃপ্ত করতে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। যৌতুকের মালামাল নিয়ে চাচা কনেপক্ষকে প্রশ্ন করলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও রফিক তার মত প্রকাশ করতে পারেনি।

উদ্দীপকের রফিকের মতাে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমেরও মানসিক দৃঢ়তার অভাব রয়েছে। বিয়ের আসরে মামা কনের গহনা যাচাই করতে চাইলে কল্যাণীর বাবার প্রশ্নের সামনে অনুপম নীরব থেকে মামার ইচ্ছাকেই সায় দেয়। অনুপম এবং রফিক উভয়ই নিজ ইচ্ছাকে সঁপে দিয়েছে অন্যের কাছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেনি। আর এর মূলে কাজ করেছে তাদের মানসিক গড়ন ব্যক্তিত্বহীনতা।

সারকথা : মানসিক দৃঢ়তার অভাবে রফিক তার চাচার অন্যায় সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছে। ঠিক তেমনইভাবে অনুপমও তার মামার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে।

প্রশ্ন ২: অফিস থেকে ফেরার পথে রাশেদ বাসে দীর্ঘদিন পর দেখতে পেল রাবেয়াকে। মনে পড়ল রাবেয়ার সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সমস্ত আয়ােজন সম্পন্ন হওয়ার পর হঠাৎ রাশেদের বাবা মােটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করে বসে মেয়ের বাবার কাছে। উচ্চশিক্ষিত সুদর্শন পুত্রের জন্য এটা নাকি তার ন্যায্য দাবি। রাবেয়ার বাবার যথেষ্ট সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তিনি রাজি হলেন না যৌতুক দিতে। ক্ষোভে-অপমানে তৎক্ষণাৎ ভেঙে দেন বিয়ে। ক্ষুব্ব রাবেয়াও সমর্থন করে বাবাকে। বিয়ে ভেঙে গেলেও রাবেয়া থেমে থাকেনি। এক । ব্যাংকারকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছে। চাকরি করছে একটা কলেজে।

ক. ‘অপরিচিতা’ গল্পে শম্ভুনাথ সেনের পেশা কী ছিল?

খ. “ভালােমানুষ হওয়ার কোনাে ঝঞ্জাট নেই”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের রাবেয়ার বাবার সাথে অপরিচিতা গল্পের শম্ভুনাথ বাবুর সাদৃশ্য কোথায়?

ঘ. উদ্দীপকের রাবেয়া ‘অপরিচিতা গল্পের কল্যাণী চরিত্রকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে না”– স্বীকার কর কি? তােমার মতের পক্ষে যুক্তি দেখাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ২ এর উত্তর সমূহ

ক উত্তরঃ ‘অপরিচিতা’ গল্পে শম্ভুনাথ সেনের পেশা ছিল ডাক্তারি ।

খ উত্তরঃ অনুপম নিতান্ত ভালাে মানুষ বলেই তার আর ভালাে মানুষ হওয়ার ঝঞ্জাট নেই। গুরুজনেরা ভালাে ছেলে হিসেবে যাদের আখ্যায়িত করেন অনুপম তেমনই একজন। কলেজের সব পাস সে করেছে। তার কোনাে বাজে নেশা নেই, তামাক পর্যন্ত সে ধরে না। সে মায়ের আদেশ যেমন মানে তেমনই বড়দের কথাও মেনে চলে।

ভালাে মানুষ হওয়ার জন্য একজনকে অনেক বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হয়। অনুপমের তেমন করার প্রয়ােজন পড়ে না। কারণ তার সেসব অভ্যাস নেই। তাই অনেকের কাছে ভালাে মানুষ হওয়া ঝঞ্ঝাটের মতাে মনে হলেও অনুপমের বেলায় সে ঝামেলা নেই।

সারকথা : ভালাে ছেলের সব গুণ অনুপমের মধ্যে বিদ্যমান। তাই ভালাে মানুষ হওয়ার ঝঞ্জাট তার নেই।

গ উত্তরঃ ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেন প্রবল ব্যক্তিত্ববান। এখানেই উদ্দীপকের রাবেয়ার বাবার সঙ্গে শম্ভুনাথ বাবুর সাদৃশ্য রয়েছে। মানুষের কথায়, কাজে আর আচরণে তার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। ব্যক্তিত্ববান মানুষ কখনাে অন্যায়ের কাছে, মিথ্যার কাছে মাথা নত করেন না। তাতে যদি তার বিরাট ক্ষতিও হয় তবুও না।

‘অপরিচিতা’ গল্পে কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এমনই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। বরের মামা বিয়ের আসরে কনের গহনা পরীক্ষা করতে চাইলে তিনি ব্যথিত হন, তবু প্রথমে তিনি তা প্রকাশ করেননি। বরযাত্রীদের যথার্থ আপ্যায়ন শেষে তিনি এ বিয়ে ভেঙে দেন। কারণ তিনি কোনাে হীন মানসিকতার মানুষের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়াতে চান না।

উদ্দীপকের রাবেয়ার বাবাও কল্যাণীর বাবার মতােই। মেয়ের বিয়েতে বরের বাবা যৌতুক দাবি করলে তিনি ক্ষোভে-অপমানে বিয়ে ভেঙে দেন। বিয়ের আসরে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় তিনি দ্বিধাগ্রস্ত হননি, ঠিক যেমনটি হননি অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর বাবা।

সারকথা : ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এবং উদ্দীপকের রাবেয়ার বাবা উভয়ই প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। তারা অসম্মান ও অমর্যাদাকে মেনে নেননি। বিয়ে না দিয়ে এর প্রতিবাদ করেছেন।

ঘ উত্তরঃ “উদ্দীপকের রাবেয়া ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে না”- বক্তব্যটিকে আমি স্বীকার করি । যৌতুক সামাজিক ব্যাধি। এটি সমাজের কাঠামােকে নষ্ট করে দিয়েছে। তাই অনেকেই যৌতুক ছাড়া বিয়ের কথা ভাবতেই পারে। এই যৌতুকের কারণে অনেক নারীর সংসার ভেঙে যাচ্ছে। আবার যৌতুক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেক নারীকেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হচ্ছে।

‘অপরিচিতা গল্পের কল্যাণীর জীবনে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ঘটার আগেই তার পিতা বরপক্ষকে বরসহ বিয়ের আসর থেকে বিদায় করে দিয়েছেন। কিন্তু সমাজের এই রূঢ়তা কল্যাণীকে এক অন্য মানুষে পরিণত করেছে, সে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং মানবসেবার ব্রত গ্রহণ করেছে।

অন্যদিকে উদ্দীপকের রাবেয়ার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তবে, কল্যাণীর মতাে সে মানবসেবার ব্রত গ্রহণ করেনি। সে এক ব্যাংকার ছেলেকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছে। একটি বিশেষ ঘটনায় কল্যাণীর সঙ্গে রাবেয়ার মিল রয়েছে। তবে রাবেয়ার জীবন পরিণতি আর কল্যাণীর জীবন পরিণতি এক নয়। এসব দিক বিচার করে তাই বলা যায় যে, রাবেয়া কল্যাণী চরিত্রটিকে সম্পূর্ণরূপে ধারণ করে না।

সারকথা : জীবনের একটি বিশেষ ঘটনায় মিল থাকলেও উদ্দীপকের রাবেয়া গল্পের কল্যাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে না।

প্রশ্ন ৩: ঢাকা সিটি কলেজ। বরগুনার আমতলী উপজেলার ফারজানা ইয়াসমিন উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও স্কুলশিক্ষক স্বামী শওকত বিয়ের আসরে যৌতুকের লােভ সামলাতে পারেনি। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর ফারজানার বাবা যখন মেয়েকে স্বামীর হাতে তুলে দেবেন সেই মুহুর্তে শওকতের ফুফু তাহমিনা বেগম যৌতুকের দাবি করেন এবং বলেন যে, যৌতুক না দিলে পাঁচ বছরেও মেয়েকে ঘরে তুলে নিবেন না। শ্বশুরবাড়ি যাবার মুহূর্তে তাদের এ দাবিকে রুচিহীন আখ্যা দিয়ে ফারজানা তার স্বামী শওকতকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ না করে | বরং নিজেই যৌতুকলােভী, ব্যক্তিত্বহীন শওকতকে তালাক দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয় ।

ক. বিয়ের কত দিন পূর্বে শম্ভুনাথ সেন অনুপমকে দেখেছিল?

খ. ঠাট্টার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করিবার ইচ্ছা আমার নাই’- উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের শওকত ও ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের সাদৃশ্য কতটুকু? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “কল্যাণী আর ফারজানার মতাে সাহসী মেয়েরাই পারে সমাজ থেকে কুপ্রথাকে দূর করে সমাজকে সুস্থ রাখতে”বিশ্লেষণ কর।

ক উত্তরঃ বিয়ের তিন দিন পূর্বে শম্ভুনাথ সেন অনুপমকে দেখেছিল।

খ উত্তরঃ “ঠাট্টার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করিবার ইচ্ছা আমার নাই”- উক্তিটি শম্ভুনাথ সেন বরপক্ষকে বিদায় জানানাের প্রসঙ্গে করেছিলেন।  বরপক্ষের যৌতুকের প্রতি অতিরিক্ত লােভ দেখে কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

কারণ যাদের মনমানসিকতা এত নীচ যে, গহনার পরিমাপ ও মান যাচাইয়ের জন্য সেকরা নিয়ে আসে তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তােলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা শম্ভুনাথ সেনের ছিল না। তাই তিনি বিয়ের আগেই জোর করে বরপক্ষকে খাওয়া-দাওয়া করানাে এবং তাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়ি ডেকে দিতে চান। বরের মামা বিষয়টিকে ঠাট্টা মনে করেন। আর এর জবাবেই শম্ভুনাথ সেন। ঠাট্টার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করার ইচ্ছে নেই বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন।

সারকথা : কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন লােভী এবং ব্যক্তিত্বহীনদের সাথে আত্মীয়তা করতে না চেয়ে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।

গ উত্তরঃ ব্যক্তিত্বহীনতার দিক দিয়ে উদ্দীপকের শওকত ও ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের মধ্যে সাদৃশ্য বিদ্যমান। | স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সবার আগে প্রয়ােজন সাহস ও মানসিক দৃঢ়তা। যাদের সেই সাহস ও দৃঢ়তা নেই তারা সহজেই অন্যের কাছে নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দেয়। চোখের সামনে অন্যায় হলেও তারা প্রতিবাদ করতে পারে না।

উদ্দীপকে যৌতুক লােভী ব্যক্তিত্বহীন বর এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আত্মমর্যাদা বজায় রাখা কনের কথা বলা হয়েছে। এখানে স্কুল শিক্ষক শওকতের সম্মতিতে তার ফুফু মেয়ের বাবার কাছে যৌতুক দাবি করেছে। দাবিকৃত যৌতুক পরিশােধ না করলে পাঁচ বছরেও মেয়ে ঘরে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বর পক্ষের এমন হীন মানসিকতার পরিচয় পেয়ে ফারজানা তার স্বামী শওকতকে তালাক দিয়েছে।

উদ্দীপকের শওকতের ব্যক্তিহীনতার এই দিকটি ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। গল্পে শম্ভুনাথ সেন তার মেয়ের গহনা পরীক্ষার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অনুপম তার মামার হীনমানসিকতার পক্ষে মত দিয়েছে। সে নিজের শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের পরিচয় দিয়ে মামার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেনি।

সারকথা : উদ্দীপকের শওকত একজন ব্যক্তিত্বহীন পুরুষ তাই সে ফুফুর সিদ্ধান্তের উপর কথা বলতে পারে না। অপরিচিতা’ গল্পের অনুপম একই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কারণ সেও মামার বিরুদ্ধে কথা বলেনি।

ঘ উত্তরঃ কল্যাণী আর ফারজানার মতাে সাহসী মেয়েরাই পারে সমাজ থেকে কু-প্রথাকে দূর করে সমাজকে সুস্থ রাখতে।”- মন্তব্যটি যথার্থ । | সমাজে নারীরা নানা দিক থেকে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়। সেসবের মধ্যে যৌতুক বা পণপ্রথা অন্যতম একটি। যৌতুক বা পণপ্রথা একটি সামাজিক ব্যাধি। এই প্রথার বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সচেতন না হলে এই প্রথা বন্ধ করা যাবে না।

তাই সবার উচিত যৌতুককে ‘না’ বলা। • উদ্দীপকে যৌতুক লােভী বরপক্ষকে যৌতুক না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ার ঘটনা প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে যৌতুকের দাবিদার

শওকতকে তার স্ত্রী ফারজানা যৌতুক না দিয়ে নিজের আত্মমর্যাদা বজায় রেখেছে এবং একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে একজন শিক্ষিত সচেতন মানুষের পরিচয় দিয়েছে। এই বিষয়টি ‘অপরিচিতা’ গল্পে বিয়ের আসরে সেকরা নিয়ে মেয়ের গহনা পরীক্ষা করতে চাইলে মামার অন্যায়ের কোনাে প্রতিবাদ না করায় অনুপমের কাছে শম্ভুনাথ সেনের কন্যাকে বিয়ে না দেওয়ার ঘটনার

সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এখানে অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার কারণে কল্যাণীও তাকে বিয়ে করতে সম্মত হয় না। • ‘অপরিচিতা’ গল্পে কল্যাণীর ব্যক্তিত্ব আত্মমর্যাদবােধ এবং যুগ যুগ ধরে গেড়ে বসা ঘৃণ্য সামাজিক প্রথার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ

প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকের ফারজানার মধ্যে অনুরূপ চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। অপরিচিতা’ গল্পে শম্ভুনাথ সেন এবং কল্যাণীর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও প্রতিবাদী আচরণ বরপক্ষের অন্যায়ের প্রতিবাদের সঙ্গে উদ্দীপকের ফারজানার শওকতকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত একসূত্রে গাঁথা। এই দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। | us সারকথা : উদ্দীপকের ফারজানা লােভী ও ব্যক্তিত্বহীন স্বামীকে তালাক দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীও বিয়ে = না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরুষতান্ত্রিক ও লােভী সমাজের মর্মমূলে আঘাত করেছে।

প্রশ্ন ৪: তিনিই বাড়ির কর্তা। তিনশত লােক থাকিলেও আমার দৃষ্টি বােধ হয় প্রথমেই তাঁহার মুখের প্রতি পড়িত। সেরূপ প্রসন্নতাব্যঞ্জক ওষ্ঠ আমি অতি অল্পই দেখিয়াছি। তখন তাঁহার বয়ঃক্রম বােধ হয় পঞ্চাশ অতীত হইয়াছিল, বৃদ্ধের তালিকায় তাহার নাম উঠিয়াছিল, তথাপি তাঁহাকে বড় সুন্দর দেখিয়াছিলাম।

ক. ‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপম কোনােকালেই কিসের আশা করে না?

খ. সে যে আমার চিরজীবনের গানের ধুয়া হইয়া রহিল।’- ব্যাখ্যা কর। 

গ. উদ্দীপকটি ‘অপরিচিতা’ গল্পের কোন দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের ব্যক্তির শারীরিক সুষমা এবং ‘অপরিচিতা গল্পের শম্ভুনাথ সেনের শারীরিক বৈশিষ্ট্য একসূত্রে গাঁথা।” – মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।

ক উত্তরঃ ‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপম কোনাে কালেই বিবাহের আশা করে না।

খ উত্তরঃ সে যে আমার চিরজীবনের গানের ধুয়া হইয়া রহিল।’- এ কথাটি অনুপম বলেছে অপরিচিত কণ্ঠের মধুর সুর শুনে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে। ‘অপরিচিতা’ গল্পে মামার হীন মানসিকতা এবং অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার কারণে কল্যাণীর সঙ্গে তার বিয়ে ভেঙে যায়।

সেই ঘটনার অনেক দিন পর অনুপম মাকে নিয়ে তীর্থে যাওয়ার সময় তাদের ট্রেনের কামরায় দুই-তিনটি ছােট ছােট মেয়েকে নিয়ে ষােলাে-সতেরাে বছরের একটি মেয়ে ওঠে। ট্রেন থেকে নেমে যাওয়ার সময় অনুপমের মা মেয়েটির নাম জিজ্ঞাসা করেন ।

মেয়েটি যখন তার নাম কল্যাণী বলে তখন মা-ছেলে দুজনই চমকে ওঠেন। তার কথাগুলাে অনুপমের মনে আলােড়ন সৃষ্টি করে। পিতার আদর্শে গড়া কল্যাণীর বিয়ে না করার কারণ জানতে পেরে অনুপম কষ্ট পায়। কিন্তু রাতের অন্ধকারের মধ্যে ট্রেনে জায়গা আছে বলে যে সুর অনুপমের কানে এসেছিল তা সে কখনই ভুলতে পারে না। এই গভীর অনুভূতি প্রকাশ করতেই অনুপম প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।

সারকথা : পরিচয় পাওয়ার পর কল্যাণীর প্রতি অনুপম গভীর অনুরাগ প্রকাশ করতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।

গ উত্তরঃ উদ্দীপকটি অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের বৈশিষ্ট্যের দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বাহ্যিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বেশকিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশ তার ব্যক্তিত্বে ধরা পড়ে। ফলে শারীরিক কাঠামাের সঙ্গে ব্যক্তির চারিত্রিক সৌন্দর্যের অনুপম দিকটি বাঙ্ময় হয়ে ওঠে।

উদ্দীপকে এক ব্যক্তির বাহ্যিক বর্ণনায় তাঁর ব্যক্তিত্বের বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে। এখানে তাঁর বাহ্যিক গড়ন ও ব্যক্তিত্ব কয়েকশ লােকের মধ্যেও আলাদা করে চেনার উপযােগী। তাঁর এই ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্য ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের দৃঢ় ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের দিকটিকে নির্দেশ করে।

গল্পের বর্ণনা অনুসারে শম্ভুনাথ বাবুর বয়স চল্লিশের কিছু এপারে বা ওপারে । তাঁর চুল কাচা, গোঁফে পাক ধরতে আরম্ভ করেছে। ভিড়ের মধ্যে দেখলে সবার আগে তার ওপরে চোখ পড়ার মতাে চেহারা। উদ্দীপকের ব্যক্তির বয়স পাশের বেশি হলেও প্রসন্নতাব্যঞ্জক ঠোট, সুন্দর চেহারা সবার দৃষ্টি কাড়ে। এভাবে উদ্দীপকের ব্যক্তি ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের বৈশিষ্ট্য ইঙ্গিত করে।

সারকথা : উদ্দীপকের ব্যক্তি বয়স, শারীরিক গড়ন ও ব্যক্তিত্ব দিয়ে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দিকটি অপরিচিতা গল্পের শম্ভুনাথ বাবুর বয়স, শারীরিক গড়ন ও ব্যক্তিত্বকে নির্দেশ করেছে।

হুবুহু সৃজনশীল প্রশ্ন খবুই কম কমন পড়তে দেখা যায় । তাই এই পোষ্ট অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর pdf এর পাশাপাশি মূল বই থেকে এ সম্পর্কিত আরও বিষয়বলী গুলো ধারণা রাখুন। এতে করে যেভাবেই প্রশ্ন আসুক যাতে আপনি উত্তর দিতে পারেন। চলুন বাকী অংশ পড়ে নেওয়া যাক।

ঘ উত্তরঃ “উদ্দীপকের ব্যক্তির শারীরিক সুষমা এবং ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের শারীরিক বৈশিষ্ট্য একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় তার কথায়, কাজে এবং সামগ্রিক আচরণে। ব্যক্তিত্ববান মানুষ কখনাে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেন না। মানুষের চারিত্রিক দৃঢ়তা তার বাহ্যিক অবয়বেও প্রকাশ পায়। 

উদ্দীপকের ব্যক্তির আকর্ষণীয় বর্ণনার সঙ্গে ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের আকর্ষণীয় শারীরিক বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে।

উদ্দীপকে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাড়ির কর্তাকে তিনশত লােকের মধ্যে আকর্ষণীয় চেহারার জন্য আলাদা করে চেনা যায়। কারণ তাঁর পঞ্চাশাের্ধ্ব বয়সের প্রসন্নতাব্যঞ্জক ওষ্ঠ ও অবয়ব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাঁর এই আকর্ষণীয় শারীরিক বৈশিষ্ট্যের যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তা অপরিচিতা গল্পের শম্ভুনাথ সেনের শারীরিক বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে। তিনি বিয়ের

আসরে বরের মামার আচরণে ব্যথিত হয়েও বরযাত্রীদের যথার্থ আপ্যায়ন শেষে বিয়ে না দিয়ে বিদায় করেছেন। • ‘অপরিচিতা’ গল্পে শম্ভুনাথ সেনের চারিত্রিক দৃঢ়তা তার দেহসৌষ্ঠবকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। উদ্দীপকের ব্যক্তির ব্যক্তিত্বও তাঁর বয়সকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা উদ্দীপকের বর্ণনাকারীর ভালাে লেগেছিল। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা : উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যক্তির আকর্ষণীয় শারীরিক সুষমা ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উভয়েই আকর্ষণীয় যা ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

প্রশ্ন ৫: যৌতুকের দাবির কারণে নিজের বিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন যে নারী বাংলাদেশে বিয়েতে যৌতুক দাবি করার বিষয়টি আইনে নিষিদ্ধ হলেও অনেকটা গােপনেই যৌতুকের লেনদেন হয়। কনেপক্ষও বেশিরভাগ সময় কনের কল্যাণের কথা চিন্তা করে যৌতুক প্রদান করে। কিন্তু সেখানেই একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন বরগুনার মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন। ফারজানা ইয়াসমিনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ২০১১ সালে। কিন্তু বিয়ের আসরে তার বরপক্ষ যৌতুক দাবি করে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে যৌতুকলােভী বরকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি, নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দেন। এখন তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করছেন। বিয়েও করেছেন।

ক. অনুপমের সুন্দর চেহেরাকে পণ্ডিতমশায়রা কোন ফলের সঙ্গে তুলনা করে বিদ্রুপ করতেন?

খ. “সে বলিল মাতৃআজ্ঞা”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি অপরিচিতা’ গল্পের কোন অসংগতিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের ফারজানা ‘অপরিচিতা গল্পের কল্যাণীর চেতনার সার্থক প্রয়ােগ ঘটিয়েছেন- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর ।

ক উত্তরঃ অনুপমের সুন্দর চেহেরাকে পণ্ডিত মশায়রা মাকাল ফলের সঙ্গে তুলনা করে বিদ্রুপ করতেন।

খ উত্তরঃ অনুপম কল্যাণীর কাছে বিয়ে না করার শপথের কারণ জানতে চাইলে কল্যাণী প্রশ্নোক্ত কথাটি বলে।।

মামারহীন মানসিকতা এবং অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার কারণে কল্যাণীর সঙ্গে তার বিয়ে ভেঙে যায়। তখন থেকেই পিতার আদর্শে গড়া কল্যাণী দেশ সেবার ব্রতে আত্মনিয়ােগ করে। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনার অনেক দিন পর কল্যাণীর সঙ্গে অনুপমের সাক্ষাৎ হয় এবং সে ভুল স্বীকার করে কল্যাণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কল্যাণী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং এর কারণ হিসেবে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলে। 

সারকথা : কল্যাণী বিয়ে না করার কারণ হিসেবে অনুপমকে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলে।

গ উত্তরঃ উদ্দীপকটি ‘অপরিচিতা’ গল্পের যৌতুকপ্রথার মতাে সামাজিক অসংগতিকে নির্দেশ করে।

যৌতুকপ্রথা এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। এটি সামাজিক কাঠামােকে নষ্ট করে দিচ্ছে। এই যৌতুকের কারণে অনেক নারীর সংসার ভাঙছে। তাদের জীবন হয়ে উঠছে দুর্বিষহ। এটি থেকে পরিত্রাণ না পেলে সমাজ কখনাে এগিয়ে যেতে পারবে না। উদ্দীপকে যৌতুকের ঘৃণ্য থাবার কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে এটি আইনতভাবে নিষিদ্ধ হলেও অনেকটা গােপনে যৌতুকের লেনদেন হয়। মেয়েপক্ষ মেয়ের কল্যাণের কথা চিন্তা করে যৌতুক প্রদান করে। এই বিষয়টি ‘অপরিচিতা গল্পে প্রকাশিত যৌতুকপ্রথার মতাে সামাজিক অসংগতিকে নির্দেশ করে। আলােচ্য গল্পে যৌতুকের কারণে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যায়।

বরপক্ষের লােভী মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে যৌতুকের লেনদেনের ব্যাপারে। শেষপর্যন্ত কনের পিতা শম্ভুনাথ সেন বিয়েটা ভেঙে দিতে বাধ্য হন। গল্পের এই সামাজিক অসংগতিটি তুলে ধরেছে উদ্দীপকটি।

সারকথা : ‘অপরিচিতা’ গল্পে যৌতুকের কালাে থাবার বিষয় প্রকাশ পেয়েছে। গল্পের এই বিষয়ই উদ্দীপকটি নির্দেশ করছে।। 

আপনি এই পোষ্টে অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  নিয়ে পড়তেছেন। এটি পূর্ণাঙ্গ পড়া শেষে আপনি এ সম্পর্কিত আরও পাঠ্য আমাদের সাইটে খুঁজে পেতে সার্চ বক্সে অনুসন্ধান করতে পারেন। চলুন বাকী অংশ পড়ে নেওয়া যাক।

ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের ফারজানা ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর চেতনার সার্থক প্রয়ােগ ঘটিয়েছেন- মন্তব্যটি যথার্থ। সমাজে নারীরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী। তারা পুরুষশাসিত সমাজে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে নানা বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে এবং সফল হচ্ছে।

উদ্দীপকে এক সাহসী নারীর কথা বলা হয়েছে। ফারজানা ইয়াসমিনের বিয়ে ঠিক হওয়ার পর বরপক্ষ যৌতুক দাবি করে। এতে প্রতিবাদ করেন ফারজানা। তিনি যৌতুকলােভী বরকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজে বিয়ে ভেঙে দেন। এই বিষয়টি ‘অপরিচিতা’ গল্পে দেখা যায় কল্যাণীর ভিতর।

কল্যাণীও বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর দেশ সেবার ব্রত নিয়ে নারীদের শিক্ষার দায়িত্ব হাতে নেয়। অনুপম বিয়ে করতে চাইলেও প্রত্যাখ্যান করে।। অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক নারী। তার দেশ চেতনা ও ব্যক্তিত্বের জাগরণ এবং তার অভিব্যক্তি যৌতুকলােভী সমাজের বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদ। তার এই প্রতিবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে উদ্দীপকের ফারজানা চরিত্রে। এই দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা : ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর মাঝে যে ব্যক্তিত্বের জাগরণ ও অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে তার সার্থক প্রয়ােগ ঘটিয়েছেন উদ্দীপকের ফারজানা।

অপরিচিতা গল্প pdf

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | অপরিচিতা গল্প

Q1. অপরিচিতা গল্পটি প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়, অপরিচিতা গল্পটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়

Ans – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অপরিচিতা’ ছোটগল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত মাসিক ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার ১৩২১ বঙ্গাব্দের (১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ) কার্তিক সংখ্যায়। এটি প্রথম গ্রন্থভুক্ত হয় রবীন্দ্রগল্পের সংকলন ‘গল্পসপ্তক’-এ, পরে ‘গল্পগুচ্ছ’ তৃতীয় খণ্ডে (১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে)।

Q2. মামা কেমন ঘরের মেয়ে পছন্দ করতেন

Ans – মামা গরিব ঘরের ঘরের মেয়ে পছন্দ করতেন।

Q3. অপরিচিতা গল্পের লেখক কে

Ans – অপরিচিতা গল্পের লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Q4. অনুপমের পিসতুতো ভাইযের নাম

Ans – অনুপমের পিসতুতো ভাইযের নাম বিনু।

Q5. অপরিচিতা গল্পে কল্যাণীর বয়স কত

Ans – উত্তর : বিয়ের সময় কল্যাণীর বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে কল্যাণীর বয়স ১৯ বছর।

Q6. অপরিচিতা গল্পের নায়িকার নাম কি

Ans-অপরিচিতা গল্পের নায়িকার নাম কল্যাণী।

Q7. অপরিচিতা গল্পে অনুপমের মামার মুখ লাল হয়ে উঠল কেন

Ans – অপমানে, অপরিচিতা গল্পে অনুপমের মামার মুখ লাল হয়ে উঠল।

Q8. অপরিচিতা গল্পের কথকের বয়স কত ছিল

Ans – অপরিচিতা গল্পের কথক, লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার বয়স তখন ৫২।

Q9. অপরিচিতা গল্পের কথকের নাম কী

Ans – অপরিচিতা গল্পের কথকের নাম লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Q10. অপরিচিতা গল্পের নায়কের নাম কি

Ans – অপরিচিতা গল্পের নায়কের নাম অনুপম।

Q11. অপরিচিতা গল্পে অনুপমের বয়স কত

Ans – বিয়ের সময় অনুপমের বয়স ছিল ২৩ বছর । বর্তমানে অনুপমের বয়স ২৭ বছর।

Q12. অপরিচিতা গল্পের কল্যাণীর বিয়ে না করার কারণ কি ছিল

Ans – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীয় বিয়ে না করার কারন- আত্মমর্যাদা।

Q13. অপরিচিতা গল্পে কন্যাকে কী দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়েছিল

Ans – ‘অপরিচিতা’ গল্পে কন্যাকে এয়ারিং দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়েছিল। ইয়ারিং আনা হয়েছিল বিলেত থেকে।

Q14. অপরিচিতা গল্পের মামা অনুপমের চেয়ে কত বছরের বড়

Ans – অনুপমের মামার বর্তমান বয়স ৩৩ বছর । অনুপমের চেয়ে অনুপমের মামা ৬ বছরের বড়।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।