- দ্রাঘিমা রেখা কাকে বলে
- দ্রাঘিমা রেখার সংখ্যা কয়টি
- দ্রাঘিমা রেখার অপর নাম কি
- দ্রাঘিমা রেখার মান কত
- কর্কটক্রান্তি রেখা কাকে বলে
- বিষুব রেখা কাকে বলে
- বিষুব রেখার কাছাকাছি অঞ্চলে জীব বৈচিত্র বেশি কেন
- দিগন্ত রেখা কাকে বলে
- সমচাপ রেখা কাকে বলে
- নিরপেক্ষ রেখা কাকে বলে
- রেখাচিত্র কাকে বলে
- অক্ষরেখা কাকে বলে
- অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখার পার্থক্য
- FAQ |
দ্রাঘিমা রেখা কাকে বলে
অক্ষ রেখাগুলোকে ছেদ করে উত্তর মেরু বিন্দু হতে দক্ষিণ মেরু বিন্দু পর্যন্ত কতকগুলি অর্ধবৃত্তাকার রেখা কল্পনা করা হয়েছে এই অর্ধবৃত্তাকার রেখা গুলির নাম দ্রাঘিমা রেখা।
দ্রাঘিমারেখা বা দ্রাঘিমা বা মধ্যরেখা হল পৃথিবীর উপর দিয়ে কল্পিত কতকগুলি নির্দিষ্টভাবে বিন্যস্ত মহাবৃত্তের অর্ধেক। এদের বিস্তার উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত অর্থাৎ এরা উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। একটি দ্রাঘিমার উপরিস্থিত সমস্ত বিন্দুর দ্রাঘিমাংশ সমান হয়।
গ্রিনিচের মূল মধ্যরেখা হতে পূর্ব বা পশ্চিমে কোন স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সে স্থানের দ্রাঘিমা দ্রাঘিমাংশ বলে।
নিক্ষরেখার উপর এ কৌণিক দূরত্বের মাপ নেয়া হয়। পূর্ব দিকের কৌণিক দূরত্বকে পূর্ব দ্রাঘিমা এবং পশ্চিম দিকের কৌণিক দূরত্বকে পশ্চিম দ্রাঘিমা বলে।
গ্রিনিচের মূল মধ্যরেখার দ্রাঘিমা ০° ধরা হয়। এখান থেকে এক ডিগ্রি অন্তর পশ্চিমে ১৮০টি ও পূর্বে ১৮০টি দ্রাঘিমারেখা কল্পনা করা হয়।
নিরক্ষরেখা ও মূলমধ্যরেখা যেখানে পরস্পরকে লম্বভাবে ছেদ করে সেখানে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমা উভয়েই ০°। এ স্থানটি গিনি উপসাগরে অবস্থিত। পৃথিবী সর্বত্র পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। এ কারণে পূর্বে অবস্থিত স্থানগুলোর সময় বেশি হতে দেখা যায়।
দ্রাঘিমার কারণে সময়ের পার্থক্য হয়ে থাকে।
দ্রাঘিমারেখার বৈশিষ্ট্য
1. প্রতিটি দ্রাঘিমারেখার দৈর্ঘ্য সমান।
2. দ্রাঘিমারেখা গুলির পরিধি সর্বত্র সমান।
3. উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত দ্রাঘিমা রেখা গুলি অর্ধবৃত্ত।
4. দ্রাঘিমা রেখা গুলি পরস্পরের সমান্তরাল নয়।
5. দ্রাঘিমারেখা গুলির মান মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে ক্রমশ বাড়ে।
6. দ্রাঘিমারেখার সর্বনিম্ন মান 0⁰ এবং সর্বোচ্চ মান 180⁰।
7. প্রতিটি দ্রাঘিমারেখা প্রতিটি অক্ষরেখা কে লম্ব ভাবে ছেদ করে।
8. একই দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত প্রতিটি স্থানের স্থানীয় সময় একই।
9. পৃথিবী পৃষ্ঠে 1⁰ অন্তর মোট 359 টি দ্রাঘিমারেখা কল্পনা করা হয়েছে।
দ্রাঘিমা রেখার সংখ্যা কয়টি
এক ডিগ্রি অন্তর মোট 360 টি দ্রাঘিমারেখা রয়েছে।
শূন্য ডিগ্রি দ্রাঘিমারেখা কে মূলমধ্যরেখা ও ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমারেখা কে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে।
দ্রাঘিমা রেখার অপর নাম কি
দ্রাঘিমা রেখার অপর নাম মধ্যরেখা।
মূলমধ্যরেখা হল অন্যতম প্রধান দ্রাঘিমা রেখা। 0° দ্রাঘিমারেখাটি মূলমধ্যরেখা নামে পরিচিত।
লন্ডনের নিকটবর্তী গ্রিনিচ মানমন্দির এর ওপর দিয়ে যে কাল্পনিক অর্ধ বৃত্তাকার রেখা নিরক্ষরেখা কে লম্ব ভাবে ছেদ করে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর মধ্যে মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে, সেই কাল্পনিক রেখাটিকেই মূলমধ্যরেখা বলে।
মূলমধ্যরেখাটিকে ইংল্যান্ডের লন্ডনের গ্রীনিচ মান মন্দিরের উপর দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিনে কল্পনা করা হয়েছে। এই রেখাটি উত্তরে সুমেরু থেকে দক্ষিনে কুমেরু পর্যন্ত বিস্তৃত।
মূলমধ্যরেখার বৈশিষ্ট্য
(1) মূলমধ্যরেখার মান 0°। (2) মূলমধ্যরেখা হল একটি অন্যতম প্রধান দ্রাঘিমারেখা।
(3) এই রেখাটি উত্তরে সুমেরু থেকে দক্ষিনে কুমেরু পর্যন্ত বিস্তৃত।
(4) মূলমধ্যরেখাটি অর্ধবৃত্তাকার।
(5) মূলমধ্যরেখা প্রতিটি অক্ষরেখাকে সমকোণে বা লম্বভাবে ছেদ করে।
মূলমধ্যরেখার গুরুত্ব
- মূলমধ্যরেখাটি পৃথিবীকে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধে বিভক্ত করেছে।
- মূলমধ্যরেখার স্থানীয় সময় কে সারা পৃথিবীর প্রমাণ সময় হিসেবে ধরা হয়।
দ্রাঘিমা রেখার মান কত
এই দ্রাঘিমা রেখাটিকে মূলমধ্যরেখা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এর মান হল 0° দ্রাঘিমাংশ এবং এটি থেকে, আমরা 180° পূর্বমুখী এবং 180° পশ্চিমমুখী গণনা করি। অতএব, বিকল্প 2 হল সঠিক। মূলমধ্যরেখা এবং 180° দ্রাঘিমা রেখা পৃথিবীকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে, পূর্ব গোলার্ধ এবং পশ্চিম গোলার্ধ।
কর্কটক্রান্তি রেখা কাকে বলে
বছরে সূর্য একবার বিষূবরেখা অতিক্রম করে উত্তর গোলার্ধের সর্বশেষ যে স্থান পর্যন্ত পরিক্রমা করে (২৩.৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ) আবার বিষূবরেখার দিকে ফিরে আসে, সেই কাল্পনিক রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলে।
এই জন্য ২১শে জুন বড় দিন হয় এবং ছোট রাত হয়। আবার বিষূবরেখায় এলে (০ ডিগ্রী) দিনরাত্রি সমান হয়। তাই ২১শে মার্চ ও ২২শে সেপ্টেম্বর এই দুই দিন দিন ও রাত্রি সমান হয়। আবার বিষূবরেখা অতিক্রম করে দক্ষিণে ২৩.৫ ডিগ্রী পর্যন্ত সূর্যের শেষ পরিক্রমন কাল্পনিক বিন্দুকে মকরক্রান্তি রেখা বলে। তাই ২২শে ডিসেমবর বড় রাত্রি ও ছোট দিন হয়।
23°30′ উত্তর অক্ষাংশ রেখাকে বলা হয় কর্কটক্রান্তি রেখা। এই রেখাটি উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ ভাগ, আফ্রিকার উত্তরভাগ এবং এশিয়ার দক্ষিণভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে।
বছরে সূর্য একবার বিষূবরেখা অতিক্রম করে উত্তর গোলার্ধের সর্বশেষ যে স্থান পর্যন্ত পরিক্রমা করে (২৩.৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ) আবার বিষূবরেখার দিকে ফিরে আসে, সেই কাল্পনিক রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলে।
এইজন্য ২১শে জুন বড় দিন হয় এবং ছোট রাত হয়। আবার বিষূবরেখায় এলে (০ ডিগ্রী) দিনরাত্রি সমান হয়। তাই ২১শে মার্চ ও ২২শে সেপ্টেম্বর এই দুই দিন দিন ও রাত্রি সমান হয়। আবার বিষূবরেখা অতিক্রম করে দক্ষিণে ২৩.৫ ডিগ্রী পর্যন্ত সূর্যের শেষ পরিক্রমন কাল্পনিক বিন্দুকে মকরক্রান্তি রেখা বলে। তাই ২২শে ডিসেমবর বড় রাত্রি ও ছোট দিন হয়।
বিষুব রেখা কাকে বলে
উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু থেকে সমান দূরত্বে পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। এ রেখাকে বিষুবরেখা বলে।
পৃথিবীর দুই মেরুর ঠিক মাঝ বরাবর পূর্ব পশ্চিমে কল্পিত রেখার নাম নিরক্ষ রেখা বা বিষুব রেখা।
বিষুবরেখা নিরক্ষরেখা, নিরক্ষবৃত্ত, মহাবৃত্ত, গুরুবৃত্ত প্রভৃতি নামেও পরিচিত। এই রেখাকে মহাবৃত্ত বলা হয়, কারণ পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টনকারী রেখাসমূহের মধ্যে নিরক্ষরেখা বৃহত্তম। এই রেখাই সবচেয়ে বড় অক্ষরেক্ষা এবং এই রেখা বরাবর পৃথিবীর পরিধি মাপা হয়।
বিষুবরেখার দৈর্ঘ্য ৪০,০৭৫ কিলোমিটার। এর ৭৮.৮% পানির উপরে দিয়ে এবং বাকী ২১.৩% স্থলের উপরে দিয়ে গেছে। স্থলভাগে বিষুবরেখা ১১ টি দেশকে অতিক্রম করে গিয়েছে।
বিষুব রেখার কাছাকাছি অঞ্চলে জীব বৈচিত্র বেশি কেন
জীববৈচিত্র্য, বা প্রজাতি এবং বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য বিভিন্ন কারণে বিষুবরেখার কাছাকাছি সাধারণত বেশি হয়:
উচ্চ তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত
বিষুবরেখা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উচ্চ তাপমাত্রা এবং অধিক বৃষ্টিপাত অনুভব করে, যা বিস্তৃত প্রজাতির উন্নতির জন্য আদর্শ পরিস্থিতি প্রদান করে।
দীর্ঘ ক্রমবর্ধমান ঋতু
বিষুবরেখার একটি দীর্ঘ ক্রমবর্ধমান ঋতু রয়েছে, যা বছরের বেশিরভাগ সময় গাছপালা বৃদ্ধি এবং প্রজনন করতে দেয়। এটি উদ্ভিদ প্রজাতির বৃহত্তর বৈচিত্র্যের দিকে পরিচালিত করে এবং তারা যে ইকোসিস্টেমগুলিকে সমর্থন করে।
পুরানো ইকোসিস্টেম
নিরক্ষীয় অঞ্চলগুলি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দীর্ঘকাল ধরে রয়েছে এবং তাই প্রজাতির বিকাশ এবং বৈচিত্র্যের জন্য আরও বেশি সময় পেয়েছে।
ঋতু পরিবর্তনের অভাব
বিষুবরেখার কাছাকাছি তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের উল্লেখযোগ্য ঋতু পরিবর্তনের অভাব প্রজাতিগুলিকে সারা বছর সক্রিয় থাকতে এবং প্রজনন করতে দেয়, যা বৃহত্তর সামগ্রিক জীববৈচিত্র্যের দিকে পরিচালিত করে।
পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এই অঞ্চলের জলবায়ু স্থিতিশীল। বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক যুগেও এখানকার জলবায়ুর তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। এর ফলে এখানে বিভিন্ন প্রজাতিগুলি দীর্ঘকাল ধরে তাদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে।
জটিল টপোগ্রাফি
নিরক্ষীয় অঞ্চলগুলি পাহাড়, রেইনফরেস্ট এবং নদী সহ জটিল টপোগ্রাফি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, যা বিভিন্ন প্রজাতির বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের আবাসস্থল প্রদান করে।
পর্যাপ্ত সূর্যালোক
সারাবছরই এখানে পর্যাপ্ত সূর্যালোেক পাওয়া যায়। তাই এখানে উদ্ভিদের সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া খুব ভালাে হয় এবং অঙ্কুরােদগমও সহজ হয়। সেই কারণে এখানে বহুপ্রজাতি এবং বহুসংখ্যার উদ্ভিদ সমাবেশ দেখা যায়।
প্রজননের উচ্চ হার
এখানে বহু প্রজাতির জীবের একত্র সহবস্থান লক্ষ করা যায়। তা ছাড়া এক একটি প্রজাতির জীবের সংখ্যাও অনেক বেশি। সেই সমস্ত প্রজাতির মধ্যে মিলনের মাত্রাও বেশি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই জীববৈচিত্র্য অনেক বেশি।
এই কারণগুলি মিলিত হয়ে বিষুবরেখার কাছাকাছি একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্র তৈরি করতে সাহায্য করে, যে কারণে এই অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সাধারণত বিশ্বের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশি।
আরো পড়তে: রেখা কাকে বলে, রেখাংশ কাকে বলে, সমান্তরাল রেখা কাকে বলে, রেখা ও রেখাংশের মধ্যে দুটি পার্থক্য
দিগন্ত রেখা কাকে বলে
দিগন্ত বা দিকচক্রবাল বলতে সাধারণ দৃষ্টিতে পৃথিবী ও আকাশের সীমারেখাটিকে বোঝায়। অধিকাংশ স্থানে প্রকৃত দিগন্তরেখাটি গাছপালা, বাড়িঘর ইত্যাদির দ্বারা দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। এই সব ক্ষেত্রে গাছপালা ইত্যাদির দ্বারা চিহ্নিত পৃথিবী ও আকাশের দৃশ্যমান ভেদরেখাটিকে বলা হয় “দৃশ্যমান দিগন্ত”।
দূরে কোন সমুদ্র কিংবা বিশাল প্রান্তরের অর্থাৎ কোনো নিদৃষ্ট একটি স্থান থেকে লক্ষ করলে মনে হয়, আকাশটা যেন ক্রমশ নিচু হয়ে বৃত্তাকার ভূপৃষ্ঠ বা সমুদ্রপৃষ্ঠের সাথে মিলে গেছে, যে রেখা বরাবর আকাশটা ভূমি পৃষ্টোতে মিশেছে বলে মনে হয়। এই আপাতভাবে মিলিত বৃত্তাকার রেখাকে দিগন্ত রেখা বা horizon বলে।
ভূমিপৃষ্ট থেকে যত উপরে যাওয়া যায় দিগন্তরেখা পরিধি ততই বাড়তে থাকে। এই একিরকম ঘটনা পৃথিবীর উপগ্রহের সাথেও ঘটে থাকে। উপগ্রহটি যত উপর দিয়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে সেই উপগ্রহের দ্বারা পৃথিবীপৃষ্ঠের ততবেশি অংশ দেখা যায়। কিন্তু তা অর্ধেকের বেশি কখনই নয়। মহাকাশ থেকে তোলা ছবিতে আমরা পৃথিবীর অর্ধেক অংশই দেখতে পাই।
কোনো ফাঁকা মাঠ বা কোন উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে চারিদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ একটা বৃত্তাকার রেখা বরাবর মাটিতে মিশে গেছে এই বৃত্তাকারেখাই হল দিগন্ত রেখা।
পৃথিবীর আকৃতি গোল বলেই এই দিগন্ত রেখা বৃত্তাকার মনে হয়।
দিগন্ত রেখার বৈশিষ্ট্য
- দিগন্ত রেখার আকৃতি বৃত্তচাপীয় বা গোলাকার।
- কোনো নির্দিষ্ট অবস্থানে আকাশ ও পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের সংযোগস্থলে দিগন্ত রেখার সৃষ্টি হয়।
- এটি একটি আপেক্ষিক কাল্পনিক সীমারেখা।
- দিগন্ত রেখা একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টি সীমার মধ্যে দৃষ্টিগোচর হওয়া সম্ভব।
- যত উঁচু থেকে দেখা যায় বৃত্তাকার দিগন্ত রেখার পরিধি তত বৃদ্ধি পায়।
- দিগন্ত রেখা পৃথিবীতে আকাশ থেকে আলাদা করে।
- বাধাহীন, নিরবচ্ছিন্ন দিগন্ত রেখা দেখার জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হলো ফাঁকা প্রান্তর কিংবা সমুদ্র সৈকত।
- আকাশ ও পৃথিবীকে এই কাল্পনিক সীমারেখাটি পৃথক করে।
দিগন্ত রেখার গুরুত্ব
- মূলত বিমান চালনা, নেভিগেশন এবং শিল্প সহ বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য দিগন্তের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ।
- বিমানচালকরা দিগন্ত বা দিগন্ত রেখার ধারণা ব্যবহার করে বাতাসে থাকা অবস্থায় বিমানকে সমতল রাখতে সমর্থ হন।
সমচাপ রেখা কাকে বলে
ভূ- পৃষ্ঠের যে সব স্থানের গড় বায়ুর চাপ কোন নির্দিষ্ট সময়ে সমান বা একই থাকে, মানচিত্রে সেই সব স্থানের ওপর কোন কাল্পনিক রেখা টানা হলে যে রেখা পাওয়া যায়, তাকে সমচাপ রেখা বলে।
একই পরিমাণ বায়ুচাপযুক্ত অঞ্চলগুলোকে মানচিত্রে যে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয়, তাকে সমচাপ রেখা বলে।
সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্য
- সমচাপ রেখা গুলি মিলিবার এককে দেখানো হয়ে থাকে।
- সমচাপ রেখা গুলির বায়ু চাপের মান সমুদ্র পৃষ্ঠের বায়ু চাপের সাপেক্ষে দেখানো হয়ে থাকে।
- সম চাপ রেখা গুলি কখনোই পরস্পর কে স্পর্শ বা চ্ছেদ করে না।
- সম চাপ রেখা গুলি খুব কাছাকাছি চলে আসলে সেই অঞ্চলে বায়ুর চাপের পার্থক্য বেশি হয়।
- সাধারণত সমচাপ রেখায় উচ্চস্থানের বায়ুর চাপকে সমুদ্র সমতলের বায়ুচাপের হিসাবে দেখানো হয়।
- সমচাপ রেখা পরস্পরকে স্পর্শ বা অতিক্রম করতে পারে না।
- কোনো অঞ্চলে সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের থেকে দূরে দূরে অবস্থান করলে আবহাওয়া শান্ত থাকে এবং 5 নিজেদের কাছাকাছি চক্রাকারে অবস্থান করলে সেই অঞ্চলের বায়ুচাপের পার্থক্য বেশি, ফলে সেখানে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।
নিরপেক্ষ রেখা কাকে বলে
সেই সমস্ত পরিমাণ সূচক দ্রব্য সম্বিলন গুলির সঞ্চারপথকে নিরপেক্ষ রেখা বলে। যেহেতু, এই সমস্ত সম্বিলন থেকে ক্রেতা একই পরিমাণ উপযোগ পায়, সেহেতু, এই সম্মেলন গুলির মধ্যে ক্রেতা নিরপেক্ষ। সেই জন্য এই রেখা কে নিরপেক্ষ রেখা বলা হয়।
নিরপেক্ষ রেখার বৈশিষ্ট্য গুলি হল –
- নিরপেক্ষ রেখা গুলি ঋণাত্মক ঢাল সম্পন্ন হয়।
- নিরপেক্ষ রেখা গুলি মূলবিন্দু এর দিকে উত্তল।
- নিরপেক্ষ রেখা গুলি পরস্পরকে ছেদ করে না।
- উচ্চতম নিরপেক্ষ রেখাগুলি উচ্চতম উপযোগের স্তর কে নির্দেশ করে।
রেখাচিত্র কাকে বলে
রাশিতথ্যকে মােটামুটিভাবে সহজে বােধগম্য করার জন্য যে বিশেষ লেখ-এর মাধ্যমে তা প্রকাশ করা হয়, তাকে লেখচিত্র বলে। লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনের অনেকগুলি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলি হল— আয়তলেখ, পরিসংখ্যা বহুভুজ, ওজাইভ, পাইচিত্র, রেখাচিত্র ইত্যাদি।
উল্লেখযােগ্য লেখচিত্র হল
- তথ্য পরিবেশক লেখচিত্র: এই প্রকার লেখচিত্রে শুধু তথ্য পরিবেশন করা হয় যেমন— পরিসংখ্যা বহুভুজ, স্তম্ভ লেখচিত্র।
- তাৎপর্য নির্ণায়ক লেখচিত্র: এই ধরনের লেখচিত্র তথ্যের গুরুত্ব বা তাৎপর্যের প্রকাশ করে। যেমন— ওজাইড।
লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপনের সুবিধা
লেখচিত্রের মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপনের সুবিধাগুলি নীচে আলােচনা করা হল—
(১) তথ্য উপস্থাপন: লেখচিত্রের মাধ্যমে যেমন সহজে তথ্য উপস্থাপন করা যায় ঠিক তেমনি তাকে সহজে বিশ্লেষণও করা যায়।
(২) তথ্য সংক্ষেপে পরিবেশন: লেখচিত্রের মাধ্যমে তথ্যকে সংক্ষেপে পরিবেশন করা যায়।
(৩) স্কোরের তুলনা: বিভিন্ন স্কোরের মধ্যে লেখচিত্রের মাধ্যমে তুলনা করা যায়।
(৪) ত্রূটিবিচ্যুতি: স্কোরগুলিতে কোনাে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা লেখচিত্রের মাধ্যমে সহজে নির্ণয় করা যায়।
(৫) জটিল স্কোররের অনুধাবন: জটিল স্কোরগুলিকে লেখচিত্রের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলে সহজেই তা অনুধাবন করা যায়।
(৬) নিরক্ষর মানুষের দের জন্য সহজবোধ্য: নিরক্ষর মানুষের কাছেও লেখচিত্র বােধগম্য।
(৭) বিশিষ্ট্য নির্ণয়: স্কোরগুলির মধ্যে অবস্থিত বৈশিষ্ট্যগুলি সহজে নির্ণয় করা যায়।
(৮) চলকের পরিবর্তন: চলকের মানসমূহ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তা দ্রুত জানা যায়।
(৯) রাশিমালা প্রবণতা: রাশি তথ্যমালার কোনাে বিশেষ প্রবণতা থাকলে তা সহজেই দৃষ্টিগােচর হয়। রাজ্য বা রাষ্ট্রের উন্নতি, অবনতি সব জানা যায়।
অক্ষরেখা কাকে বলে
মানচিত্রের উপর থেকে নিচে অর্থাৎ উত্তর থেকে দক্ষিণ বরাবর যে রেখাগুলো বিদ্যমান,তাদের অক্ষরেখা বলে। অক্ষরেখা, বা, অক্ষ বৃত্ত হচ্ছে পৃথিবীর পূর্ব–পশ্চিমকে পূর্ণভাবে আবৃত করে রাখা বিমূর্ত কতগুলো বৃত্তরেখা যা একই অক্ষাংশের সকল স্থানকে সংযুক্ত করে।
নিরক্ষরেখার উভয় দিকে সমান্তরাল ভাবে প্রতি 1° অন্তর মোট 178 টি কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখা পৃথিবীকে ঘিরে আছে। এই প্রত্যেকটি রেখাকে বলা হয় অক্ষরেখা। পৃথিবীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অক্ষরেখা হলো নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা, কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি, সুমেরু বৃত্ত ও কুমেরু বৃত্ত রেখা।
অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখার পার্থক্য
মানচিত্রের উপর থেকে নিচে অর্থাৎ উত্তর থেকে দক্ষিণ বরাবর যে রেখাগুলো বিদ্যমান,তাদের অক্ষরেখা বলে। অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
অক্ষরেখা | দ্রাঘিমারেখা |
---|---|
একই অক্ষাংশবিশিষ্ট জায়গাগুলিকে কোনাে কাল্পনিক রেখার মাধ্যমে যুক্ত করলে উৎপন্ন হয় অক্ষরেখা। | একই দ্রাঘিমাবিশিষ্ট জায়গাগুলিকে কোনাে কাল্পনিক রেখার মাধ্যমে যুক্ত করলে সৃষ্টি হয় দ্রাঘিমারেখা। |
অক্ষরেখাগুলি পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে আছে। | দ্রাঘিমারেখাগুলি পৃথিবীকে উত্তর-দক্ষিণে বেষ্টন করে আছে। |
অক্ষরেখা এক-একটি পূর্ণবৃত্ত এবং পরস্পর সমান্তরাল। তবে সব অক্ষরেখার পরিধি সমান নয়। | দ্রাঘিমারেখা এক-একটি অর্ধবৃত্ত এবং সবার পরিধি সমান। তবে এগুলি পরস্পর সমান্তরাল নয়। |
দুই মেরুবিন্দু ছাড়া বাকি সব অক্ষরেখা পূর্ণবৃত্ত, তাই প্রতিটি অক্ষরেখার কোণের সমষ্টি ৩৬০°। | দ্রাঘিমারেখাগুলির প্রতিটিই অর্ধবৃত্ত, তাই প্রতিটি দ্রাঘিমারেখার কোণের সমষ্টি ১৮০°। |
অক্ষরেখার মান গণনা করা হয় নিরক্ষরেখা থেকে। | দ্রাঘিমারেখার মান গণনা করা হয় মূল মধ্যরেখা থেকে। |
অক্ষরেখার মান ০° (নিরক্ষরেখা) থেকে ৯০° উত্তর ও দক্ষিণ (সুমেরু ও কুমেরু বিন্দু) পর্যন্ত গণনা করা হয়। | দ্রাঘিমারেখার মান ০° (মূল মধ্যরেখা) থেকে ১৮০° পূর্ব ও পশ্চিম (একই দ্রাঘিমারেখা) পর্যন্ত গণনা করা হয়। |
একই অক্ষরেখায় অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য খুব কম। | একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের জলবায়ুর মধ্যে বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। |
এক ডিগ্রি অন্তর মোট ১৭৯ টি অক্ষরেখা রয়েছে। | এক ডিগ্রি অন্তর মোট ৩৬০ টি দ্রাঘিমারেখা রয়েছে। |
সর্বনিম্ন অক্ষরেখার মান শূন্য ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ অক্ষরেখার মান ৮৯ ডিগ্রি উত্তর বা দক্ষিণ। | সর্বনিম্ন দ্রাঘিমারেখার মান শূন্য ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ দ্রাঘিমারেখার মান ১৮০ ডিগ্রি। |
অক্ষরেখার ওপর কোন স্থানের জলবায়ু নির্ভর করে। | দ্রাঘিমা রেখার সাহায্যে কোন স্থানের সময় ও তারিখ নির্নয় করা হয়। |
আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ |
Q1. ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমা রেখার মান কত
Ans – ৮২.৫° পূর্ব। এলাহবাদের উপর দিয়ে গেছে। এগুলো গুগলে সার্চ করলে তো পাওয়া যায়।
Q2. মকরক্রান্তি রেখার মান কত
Ans – মকরক্রান্তি রেখার মান কত ২৩.৫ দক্ষিণ অক্ষাংশ।
মকরক্রান্তি বা মকরক্রান্তি রেখা বা দক্ষিণ বিষুব হল দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত একটি অক্ষাংশীয় বৃত্ত, যার উপরে সূর্য দক্ষিণায়নের সময় (২১ ডিসেম্বর তারিখে) লম্বভাবে কিরণ দেয়।
Q3. মকরক্রান্তি রেখা কোন কোন দেশের উপর দিয়ে গেছে
Ans – মকরক্রান্তি রেখা যে দেশের উপর দিয়ে গেছে এগুলি হল নামিবিয়া, বোতসোয়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজাম্বিক এবং মাদাগাস্কার। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি এবং প্যারাগুয়ে হ’ল মকরক্রান্তি রেখায় অবস্থিত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ। পাঁচটি আফ্রিকান দেশ এবং চারটি দক্ষিণ আমেরিকান দেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াও মকরক্রান্তি রেখার উপর অবস্থিত।
Q4. কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের কোন রাজ্যের উপর দিয়ে গেছে
Ans – ভারতে কর্কটক্রান্তি রেখাটি 8 টি রাজ্যের মধ্য দিয়ে যায়। রাজ্যগুলি হলো- গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং মিজোরাম।
Q5. পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন জেলার উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা গেছে
Ans – কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার উপর দিয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান এবং নদিয়া জেলার উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা গেছে।
Q6. বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কোন রেখা অতিক্রম করেছে
Ans – বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩°৫`) অতিক্রম করেছে। কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। এজন্য বাংলাদেশে ক্রান্তীয় জলবায়ু দেখা যায়।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।