WBBSE Class 9 Bangla | Kalinga Deshe Jhar Bristi | Question Answer
নিম্নলিথিত প্রশ্ন এবং তার যথাযত সমাধান ছোটো প্রশ্ন এবং বড়ো (LA) প্রশ্নের উত্তর সমাধান হিসাবে পাঠ করা যেতে পারে।
প্রশ্নোত্তর এবং সমাধান
প্রলয় গগিয়া প্ৰজা ভাবয়ে বিষাদ।’—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রজাদের বিষাদের কারণ আলােচনা করাে।
উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উধৃতিটিতে কলিঙলাদেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।
কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ প্রচুর মেঘ জমাট বাঁধে। ঈশান কোণে জমাটবাঁধা মেঘ সারা আকাশ ঢেকে ফেললে সর্বত্র অন্ধকার নেমে আসে। উত্তরের প্রবল বাতাসে দূর থেকে মেঘের গম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে। মেঘের প্রবল গর্জন ও ঘনঘন বিদ্যুৎচমকের সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত | মহাপ্লাবনের আশঙ্কায় প্রজারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছবি কীভাবে ধরা পড়েছে, কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছবি কীভাবে ধরা পড়েছে
উত্তর: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একটি গৌরবময় শাখা হল মঙ্গল কাব্য , এই মঙ্গল কাব্যসমূহের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্য মুকুন্দ চক্রবর্তী বিরচিত অভয়ামঙ্গল /চন্ডীমঙ্গল । চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্গত নির্বাচিত অংশ কলিঙ্গ দেশে ঝড় বৃষ্টি নামক কবিতাখানির প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপর আলোচনা করা আমাদের আজকের লেখনীর প্ৰতিপাদ্য ।
মূল কাব্যে দেবী চণ্ডীর বরে ব্যধনন্দন কালকেতু বনজঙ্গল ঝাপ করে পত্তন করেন গুজরাট রাজ্য । কিন্তু প্রজার অভাবে রাজা হওয়া হচ্ছিল না কালকেতুর । শেষপর্বে চণ্ডী সহায়ক ভূমিকা নেন , চণ্ডীর রোষে পার্শ্ববর্তী রাজ্য কলিঙ্গে নেমে আসে এক ভয়ংকর বিপর্যয় । আকাশ ছেয়ে যায় সর্বনাশী কালো মেঘে , সমান্তরাল ভেবে চলল মেঘের গর্জন এবং বিদ্যুতের শাসানি । কেঁপে উঠল পুরো আকাশ । এরপর শুরু হলো প্রবল বর্ষণ । সঙ্গে বাড়লো মেঘের গর্জন আর ঝড়ের তাণ্ডব । অসহায় হয়ে পড়লো কলিঙ্গের জনমানুষরা –
‘প্রলয় গনিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ ‘
শেষপর্যন্ত প্রাণের তাগিদে বিপদের আশঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান তারা ।
সাতদিন ধরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে কলিঙ্গবাসীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে উঠল । ঝড়ের দাপটে ধ্বংশ হলো এক রাজ্য ফসল । বর্ষণ সঙ্গে ভয়ঙ্কর বিদ্যুৎ ঝলক আর বিরামহীন বজ্রপাত জনজীবনকে করে তুলল অতিষ্ট । রাস্তাঘাট হলো জলমগ্ন । মেঘের গর্জন এতটাই প্রবল যে তাতে চাপা পড়লো কোলাহল আর মানুষের আর্তনাদ । এমন এক বিপন্ন সময়ে এই বিপদ থেকে বাঁচার জন্য অসহায় জনতা জনার্দন স্মরণ করলো ঋষি জৈমিনিকে । এদিকে বর্ষণ এমনই বিশাল আকার নিলো যে , রাত আর দিনের কোন প্রভেদ থাকল না । কলিঙ্গ যেন অন্ধদ্বীপ , নেই সূর্য্যের সমান্য রশ্মিটুকুও । ভূগর্ভের প্রাণী সব উঠে এলো উপরে ( সাপ , ব্যাঙ ইত্যাদি )।ফসল হলো সারা , নষ্ট হলো অট্রালিকা আর আসবাব কাঁড়িকাঁড়ি । এতেও শেষ চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিলো কলিঙ্গের দেবালয় আর বড় বাড়ি যত । এইভাবে সাতদিন ব্যপী অবিচ্ছিন্ন বিপর্যয় কলিঙ্গবাসিকে করে তুলেছিল অসহায় ।
কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি
মেঘে কৈল অন্ধকার মেঘে কৈল অন্ধকার।
দেখিতে ণা পায় কেহ অঙ্গ আপনার ।।
ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর।
উওর পবনে মেঘ ডাকে দুর দুর।।
নিমিষেকে জোড়ে মেঘ গগন-মন্ডল।
চারি মেঘে বরিষে মুষলধারে জল।।
কলিঙ্গে উড়িয়া মেঘ ডাকে উচ্চনাদ।
হুড় হুড় দুড় দুড় বহে ঘন ঝড়।
চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ।
সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গ-তড়কা বাজ।।
করি-কর সমান বরিষে জলধারা।
জলে মহী একাকার পথ হইল হারা।।
ঘণ ঘণ শুণি চারি মেঘের গর্জণ।।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আরো বিশদে পড়ার জন্য
শেখার ফলাফলের জন্য 5E মডেল.
ডাঃ উজ্জ্বল কুমার মজুমদার (লেখক)
FAQ | কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি প্রশ্ন উত্তর
১. “দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার”। – কারোর অঙ্গ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ– কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দেয়, আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। কালো মেঘের বুক চিরে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। চারদিকে কালোমেঘের ফলে সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে যায়। অন্ধকার এতটাই গাঢ় হয়ে ওঠে যে, কলিঙ্গবাসী নিজেদের চেহারা দেখতে পাচ্ছিলেন না।
২. “ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর” । – উদ্ধৃতাংশটির অর্থ কী?
উত্তরঃ– “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশের উদ্ধৃতাংশটিতে প্রবল বিপর্যয়ের বর্ণনা করা হয়েছে। কলিঙ্গদেশে আকাশের উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ ঈশান কোণে কালো মেঘে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। সেই মেঘের বুক চিরে বিদ্যুতের ঝিলিক পরিস্থিতিকে আরোও ভয়াবহ করে তোলে।