পলাশীর যুদ্ধ, পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়, পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল, পলাশীর লুণ্ঠন কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

প্রশ্নপত্র

পলাশীর যুদ্ধ, পলাশীর যুদ্ধ কী

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার ও ফরাসি মিত্রদের সাথে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পলাশী নামক স্থানে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাই পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৭৫৭ সালের জুন ২৩ তারিখে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন এবং ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়। এটি ব্রিটিশদের দ্বিতীয় যুদ্ধ ছিল দক্ষিণ এশিয়াতে ইঙ্গ-মুঘল যুদ্ধর পর।

যুদ্ধটি কলকাতা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) উত্তরে এবং মুর্শিদাবাদের দক্ষিণে, তৎকালীন বাংলার রাজধানী (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায়) হুগলী নদীর তীরে পলাশিতে (আংলিসিসড সংস্করণ: প্লাসি) সংঘটিত হয়েছিল।

যুদ্ধকারীরা ছিল নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তিনি আলীবর্দি খানের (তার মাতামহ) স্থলাভিষিক্ত হন। সিরাজ-উদ-দৌলা হ’ল আগের বছর বাংলার নবাব হয়েছিলেন, এবং তিনি ইংরেজদের তাদের দুর্গের সম্প্রসারণ বন্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন। রবার্ট ক্লাইভ নবাবের সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি মীর জাফরকে ঘুষ দেন এবং তাকে বাংলার নবাব করার প্রতিশ্রুতিও দেন। ক্লাইভ ১৭৫৭ সালে প্লাসিতে সিরাজ-উদ-দৌলাহকে পরাজিত করেন এবং কলকাতা দখল করেন।

পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়, পলাশীর যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন, দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। পলাশীর যুদ্ধে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৭৩২-১৭৫৭) কতিপয় বিশ্বাসঘাতকের ষড়যন্ত্রের কারণে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হয়। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের পরই মূলত ভারতবর্ষে ইংরেজ-শাসনের সূচনা হয়।

পলাশীর যুদ্ধ কোথায় হয়েছিল, কোন নদীর তীরে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, ঐতিহাসিক পলাশী কোন নদীর তীরে অবস্থিত

পলাশীর যুদ্ধটি কলকাতা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) উত্তরে এবং মুর্শিদাবাদের দক্ষিণে, তৎকালীন বাংলার রাজধানী (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায়) হুগলী নদীর তীরে পলাশিতে সংঘটিত হয়েছিল। সেদিন ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর রচিত হয়েছিল।

পলাশীর যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল, পলাশীর যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার শেষ স্বাধীন শাসক, নবাব সিরাজ উদ-দৌলা (1756-1757) এবং লর্ড ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।

১৯৫৭ সালের ২২ জুন, ব্রিটিশ বাহিনী ক্লাইভের নেতৃত্বে পলাশীর পথে যাত্রা করে। ইতোমধ্যে নবাব মুর্শিদাবাদ থেকে প্রায় ৬৫ হাজার সৈন্য নিয়ে রওয়ানা দেন এবং শত্রুকে মোকাবিলা করার জন্য পলাশীতে শিবির স্থাপন করেন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকাল ৮টার দিকে যুদ্ধ আরম্ভ হয়। মীর মর্দান, মোহন লাল, খাজা আব্দুল হাদী খান, নব সিং হাজারী প্রমুখের অধীন নবাবের সেনা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ চালায়। অন্যদিকে মীরজাফর, ইয়ার লতিফ এবং রায় দুর্লভ এর অধীনে নবাবের প্রায় ৪৫ হাজার সেনা নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে ও পরিস্থিতি অবলোকন করে।

শুরুতে, মীর মদন ইংরেজ বাহিনীকে আক্রমণ করেন। তার প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। ক্লাইভ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন। মীর মদন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু মীর জাফর, ইয়ার লুৎফ খান ও রায় দুর্লভ নিস্পৃহভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সিরাজউদ্দৌলার গোলাবারুদ ভিজে যায়। তবুও, সাহসী মীর মদন এবং সেনাপতি মোহন লাল ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলার আঘাতে মীর মদন মারাত্মকভাবে আহত হন ও মারা যান।

পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান নিহত হওয়ার পর সিরাজউদ্দৌলা মীর জাফর ও রায় দুর্লভকে তাদের অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে তীব্র বেগে অগ্রসর হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উভয় সেনাপতি তার নির্দেশ অমান্য করেন। তাদের যুক্তি ছিল গোলন্দাজ বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া অগ্রসর হওয়া আত্মঘাতী ব্যাপার। কিন্তু কোম্পানি ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে তখন দূরত্ব মাত্র কয়েকশত গজ। বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহন লাল নবাবকে পরামর্শ দেন যুদ্ধবিরতি ঘটলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী কিন্তু সিরাজ মীর জাফর প্রমুখের পরামর্শে পশ্চাৎপসরণের সিদ্ধান্ত নেন।

পলাশির যুদ্ধে ৫০,০০০ সৈন্য, ৪০টি কামান এবং ১০টি যুদ্ধ হাতি নিয়ে সিরাজ-উদ-দৌলার সেনাবাহিনী রবার্ট ক্লাইভের ৩,০০০ সৈন্যের কাছে পরাজিত হয়েছিল। যুদ্ধ ১১ ঘন্টার মধ্যে শেষ হয় এবং সিরাজ-উদ-দৌলা তার পরাজয়ের পর যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যান।

রবার্ট ক্লাইভের মতে, ব্রিটিশ সৈন্য ২২ জন মারা গিয়েছিল এবং ৫০ জন আহত হয়েছিল। নবাব বাহিনী প্রায় ৫০০ জন লোককে হারিয়েছিল, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিল।

পলাশীর যুদ্ধ ছবি

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল, পলাশীর যুদ্ধ কেন হয়েছিল

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত পলাশী যুদ্ধ একটি যুগান্তকারী ঐতিহাসিক ঘটনা । বাংলাদেশ তথ্য ভারতীয় উপমহাদেশের দিবাকর পলাশীর প্রান্তরে দীর্ঘদিনের জন্য অস্তমিত হয়ে যায় এবং এই পলাশীতেই ব্রিটিশ শক্তির অভ্য়েয়ের সূচনা হয় । বাংলার হতভাগ্য নবাব সিরাজ এ যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হন ।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ, পলাশীর যুদ্ধের পাঁচটি কারণ

পলাশী যুদ্ধের অনেক কারণ ছিল । নিম্নে পলাশীর যুদ্ধের কারণগুলো আলোচনা করা হল।

১। সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র: নবাব সিরাজ-উদ্দৌলার সিংহাসনে আরোহণ আলিবরর্দী খানের অপর দুই কন্যা ভাল চোখে দেখেন নি । কারণ তাঁরা প্রত্যেকেই পিতার মৃত্যুর পর বাংলা মনসদ লাভের আশা পোষণ করতেন । 

পূর্ণিইয়ার শাসনকর্তার পুত্র শওকত জঙ্গ সিরাজ-=উদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যু করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়লে ঢাকার শাসনকর্তার বিধবা পত্নী ঘসেটি বেগম এবং তার দেওয়ান রাজ বল্লভ  উক্ত ষড়যন্ত্রে যোগদান করেন ।

২। ইংরেজদের উপঢোকন প্রেরণে অনীহা: বাংলার  মনসদে আহরণ কালে ইংরেজগণ সিরাজ–উদ্দৌলাকে নতুন নবাব হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক তাঁর নিকট আনুগত্যেরর নিদর্শনসূচক ও উপঢৌকনাদি প্রেরণ না করায় ইংরেজগণ নবাব সিরাজ–উদ্দৌলার বিরাগভাজন হন ।

৩। ইংরেজদের দুর্গ নির্মাণ ও নবাবের আদেশ লঙ্ঘন: নবাব আলীবর্দী খান ইংরেজ ও ফরাসিদের বাংলায় দুর্গ নির্মাণ করতে নিষেধ করেছিলেন । 

কিন্তু তাঁর মৃত্যুর  পর ইউরোপে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে সপ্তবর্ষব্যাপী   যুদ্ধ বাঁধার আশংকার নবাবের বিনা অনুমতিতেই ইংরেজরা কলকাতায় এবং ফরাসিরা চন্দন নগরে দুর্গ নির্মাণ শুরু করেন । 

আসন্ন বিপদ লক্ষ্য করে সিরাজ-উদ্দৌলার উভয়পক্ষকে দুর্গ নির্মাণ করতে নিষেধ করেন ।  ফরাসিগণ এর আদেশ মান্য করলেও ইংরেজগণ নবাব সিরাজের কথায়  কর্ণপাক করে নি ।

৪ । কৃষ্ণদাসকে আশ্রয়দান: নবাব সিরাজ–উদ্দৌলার  শত্রু  রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাস প্রচুর ধনরত্নসহ পালিয়ে কলকাতায় ইংরেজদের আশ্রয় গ্রহণ করেন । কৃষ্ণদাসকে প্রত্যার্পণে অস্বীকৃতি ইংরেজদের সঙ্গে নবাবের  সংঘর্ষাকে অনিবার্য করে তোলে ।

৫। শওকত জঙ্গকে সমর্থন দান: পূর্ণিমায় শাসনকর্তার পুত্র শওকত জঙ্গ ও ঘ সেটি বেগম সিরাজ–উদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে ইংরেজগণ নবাবের প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন করে । ফলে নবাব ইংরেজদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন ।

৬। ইংরেজগণ  কর্তৃক নবাবের দুত অপমানিত: ইংরেজদের এ রাজনৈতিক চক্রান্তমূলক কাজের জন্য নবাব কাসিম বাজারের বাণিজ্য কু ঠি পরিদর্শনের জন্য দুত প্রেরণ করেন ।  ইংরেজগণ নবাবের দুতকে অপমান করে ।  এতেও সিরাজ  ইংরেজদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন ।

৭। বাণিজ্যিক সুবিধা অপব্যবহার: কোম্পানিকে প্রদত্ত বাণিজ্যিক সুবিধা অপব্যবহার করে কোম্পানির কর্মচারীরা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসা করে অনেক  শুল্ক ফাঁকি দিত ।  নবাব এর প্রতিকার দাবি করলে গভর্নর  ড্রেক তা অপেক্ষা করেন ।

৮। সিরাজের বিরুদ্ধে ইংরেজদের মনোভাব: ইউরোপে সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধের সূত্র ধরে বাংলাদেশে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় ।  নবাবের নিষেধ সত্বেও ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে  ক্লাইভ ফরাসিদের চন্দন নগর অধিকার করেন হলে আত্মরক্ষার জন্য ফরাসিগণ মুর্শিদাবাদে আশ্রয় গ্রহণ করেন ।

সিরাজ ইংরেজদের উদ্ধত আচরণে   শস্কিত তাদেরকে সমুচিত শান্তি বিধানের জন্য দাক্ষিণাত্যের ফরাসি সেনাপতি বুসীর সাথে পত্রালাভ করেন ।

৯।  ক্লাইভের সাথে মীরজাফর ও অন্যান্যদের ষড়যন্ত্র: মুশিদাবাদের নবাব কর্তৃক ফরাসিদের আশ্রয় প্রদান এবং  বুসীর সাথে বত্রালাপের গুরুত্ব অনুরধাবন সুচ্তুর ক্লাইভ মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে সিরাজের পরিবর্তে তার মনোনীত প্রার্থীকে  অধিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন ।

তার এই  ঘৃণিত কাজের সহযোগী হলেন কয়জন স্বার্থপর বিশ্বাসঘাতক বাঙালি । তাঁরা প্রথম হতেই স্বাধীনতা তরুণ নবাবের আচরণে বিকৃত হয়ে তাঁকে সিংহাসনচ্যুত  করে আলীবর্দী খানের ভগ্নিপতি মীরজাফরকে সিংহাসনে বসানোর  ঘৃণিত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন ।

ষড়যন্ত্রকারীদের দিয়েছিলেন ধনকুবের জগৎশেট  মীরজাফর, রাজবল্লভ বায়ুদুর্লভ এবং উমিচাঁদ । ক্লাইভ সময়ের তো উপলব্ধি করে নবাবের সন্ধি শর্ত ভঙ্গ করেন এবং নবাব বিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়লেন । 

মীরজাফর আলী খান ও ভাবির বিনিময়ে ইমেজদেরকে  পৌনে দুই কোটি টাকা প্রধানের অঙ্গীকার করে ক্লাইভের সাথে স্বাক্ষর করেন । উর্মিচাঁদ গোপন চুক্তি প্রকাশের হুমকি প্রধান করলে ক্লাইড কৌশলে তাকে প্রচুর অর্থ প্রদানের অঙ্গীকারে একটি জাল চুক্তিপত্র তৈরি করেন । 

ওয়াটসনন এ জাল চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করলে লাইভ নিজেই তাতে স্বাক্ষর করেন ।

১০।  সিরাজের বিরুদ্ধে ক্লাইভের যুদ্ধ ঘোষণা: ক্লাইভ দেশীয় বিশ্বাসঘাতকদের সাথে ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করে নবাবের বিরুদ্ধে সন্ধি ভঙ্গের অভিযোগ আনায়ন করে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ।  নবাব ইংরেজদের দুরভিসন্ধিমুলক কার্যকলাপে পূর্ব হতেই সচেতন ছিলেন । 

তিনি ৫০ হাজার পদাতিক এবং ২৮ হাজার অশ্বারোহী সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী মুর্শিদাবাদের ২৩মাইল দক্ষিনে ভাগীরথী নদীর তীরে মোতায়েন করলেন ।

অতঃপর ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর  আম্রাকাননে এক খণ্ডযুক্ত সংঘটিত হয় । মীরজাফর আলী খাঁ লাইভের সাথে পূর্ব চুক্তিমতো তার বিশাল  বাহিনীসহ যুদ্ধক্ষেত্রে নির্লিপ্তেরে ভূমিকা পালন করেন ।

অন্যদিকে নবাবের এক নিষ্ঠ ভক্ত এবং দেশপ্রেমিক মোহনলাল ও পীরমদন যুদ্ধ করে ইংরেজদের উপর কঠিন আঘাত হেনে ইংরেজ সৈন্যকে বিপর্যস্ত করে পলাশীর আমবাগানে  আশ্রয় নিতে বাধ্য করেন । 

কখন অকাম্মৎ মীরমদন গুলির আঘাতে নিহত হন ।  মোহনলাল ও ফরাসি বীর সিনফ্রে প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন । কিন্তু  মীরমদনের মৃত্যুতে নবাব হতভম্ব এবং অতিশয় বিচলিত হয়ে পড়েন ।

১১। যুদ্ধবিরোধী ঘোষণা: তিনি তাৎক্ষণিক সিপাহসালার মীরজাফর আলী খানকে ডেকে অনেক অনুনয় বিনয় এমনকি পবিত্র কুরআন  শপথের  মধ্য দিয়ে ‘মুকুট’ তথা দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য অনুরোধ করেন । 

মীরজাফর আলী খাঁ নবাবকে মৌখিক আনুগত্য অতিমাত্রায় প্রদর্শন করে  ক্লাইভেট সাথে পূর্ব স্বাক্ষরিত ষড়যন্ত্র মোতাবেক নবাবের সর্বনাশ সাধনের চেষ্টা করতে থাকেন । 

সেনাপতি মোহনলাল ও সিনফ্রে  যুদ্ধ করে যখন  নবাবের বিজয়কে সুনিশ্চিত করেন ঠিক এমন মুহূর্তে  মীর জাফরের পরামর্শে নবাবের যুদ্ধ বিরতির ঘোষণায় তারা অত্যাধিক মর্মাহত হন ।

পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল, পলাশীর যুদ্ধের ৫টি ফলাফল

পলাশীর যুদ্ধ উপমহাদেশের মর্মান্তিক ঘটনাসমূহের অন্যতম ।  এ যুদ্ধে সুদূরপ্রসারী ছিল নিম্নরূপ ।

১। এ যুদ্ধের ফলে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজের অকাল মৃত্যু সংঘটিত হলে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য পিরতরে   অস্তমিত হয় ।

২। পলাশীর যুদ্ধান্তে মীল জাফর ইংরেজদের তাবেদাররুপে নতুন  নবাবের বাংলার রাজনীতিতে ইংরেজদের যখন তখন হস্তক্ষেপের  প্রশস্ত হয় ।

৩। পলাশী যুদ্ধের পর উপমহাদেশের ব্রিটিশ সার্বভৌমত্ব স্থাপিত না হলেও তারা নতুন নবাবের নিকট হতে নগদ এক কোটি টাকা এবং কলিকাতার দক্ষিণে ২৪ পরগনার বিশাল জমিদারি লাভ করেন । 

৪।  এই যুদ্ধের ফলে ইংরেজগণ বাংলাদেশে একচেটিয়া বাণিজ্যিক অধিকার লাভ করেন এবং দেশীয় বণিকদের সমাধি রচিত হয় ।

৫।  পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ের ফলে ইংরেজগণ বাংলাদেশসহ দক্ষিণাত্যে অভাব বিস্তার করে ফরাসি বণিকদেরকে বিতাড়িত করে এবং একচেটিয়া ভাবে উপমহাদেশে সম্পদ ধারণ করে  অপ্রতিহত শক্তির অধিকারী হন ।

৬। পলাশী  যুদ্ধান্তে ইংরেজদের প্রভাব প্রতিপওি বৃদ্ধি পেলে তারা নবাব  স্রষ্টার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এবং নবাবীর বিনিময়ে মীরজাফরের নিকট হতে একমাত্র ক্লাইভ ৩,৩৪,০০০ পাউন্ড লাভ করে । 

পরবর্তীকালে মীর জাফর  ইংরেজদের অর্থ প্রদানের অসমর্থ্য হলে  ক্লাইভ তার জামাতা মীর কাসিমকে বাংলার  নবাব পদে অভিষিক্ত করেন ।

পরিশেষে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজগণ দিল্লি সম্রাট শাহ আলমসহ মীর কাসিমের সম্মিলিত কাহিনীকে বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত করে উপমহাদেশে অপ্রতিহত শক্তির অধিকারী হন ।

সর্বশেষে বলা যেতে পারে যে, পলাশীর যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে ইংরেজগণ উপমহাদেশে শক্তির অধিকারী হন।

পলাশীর যুদ্ধের তাৎপর্য, পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব

মাত্র ১৫ মাসের রাজত্বকালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সিরাজের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। উভয়ের সম্পর্কের চরম পরিণতি ছিল পলাশির যুদ্ধ।

[1] বাংলায় কোম্পানির সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায়: পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলায় ব্রিটিশ প্রাধান্যের সূচনা ঘটে। বাংলার নবাবকে পুতুল নবাবে পরিণত করে, বাংলার রাজনীতির প্রকৃত নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে কোম্পানি।

[2] ভারতীয় রাজনীতিতে আধিপত্যের সূচনায়: বাংলায় রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সূত্র ধরে সারা ভারতে ব্রিটিশরা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের উদ্যোগ নেয়। বাংলার সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলগুলিকেও ব্রিটিশরা নিজেদের অধিকার আনার চেষ্টা শুরু করে।

[3] প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক জটিলতা বৃদ্ধিতে: পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এক ভয়াবহ শূন্যতার সৃষ্টি হয়। একের পর এক নবাবকে সিংহাসনে বসিয়ে কোম্পানি আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করতে চাইলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিচালনায় জটিলতার সৃষ্টি হয়।

[4] ব্যাবসাবাণিজ্যে কোম্পানির একচেটিয়া কর্তৃত্বে: পলাশির যুদ্ধে জিতে কোম্পানির নির্দ্বিধায় বিনা শুল্কে বাণিজ্যিক অধিকার বা দস্তকের প্রয়ােগ ঘটাতে শুরু করে। ফলে বাংলা ব্যাবসাবাণিজ্যে কোম্পানির একচেটিয়া কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে দেশীয় ব্যাবসাবাণিজ্যের সর্বনাশ ঘটে।

[5] নতুন যুগের সূচনায়: পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজরা এদেশে শাসনক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার স্পর্শে ভারতের সমাজ ও সভ্যতার নবজাগরণ ঘটে। ফলে মধ্যযুগের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক যুগের সূচনা ঘটে।

উপসংহার: পলাশির যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম ধাপ অতিক্রম করে। ড. তারাচাদের মতে, পলাশির পরাজয় ভারতের দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে। (The defeat of Plassey exposed all the Indian weakness).

পলাশীর লুণ্ঠন কাকে বলে

পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের অর্থ ও সম্পদকে দু – হাত ভরে ভারত থেকে নিজের দেশ ইংল্যান্ডে পাচার করেছিল । বিদেশি ইংরেজরা সােনা , রুপা বা কোনাে পণ্যসামগ্রীর বিনিময়ে এই সম্পদের নির্গমন ঘটায়নি , তাই এই ঘটনাকে অনেকে লুণ্ঠন বলে উল্লেখ করেছেন । ব্রুকস অ্যাডামস আর্থিক নির্গমনের এই ঘটনাকে ‘ পলাশীর লুণ্ঠন ‘ বা ‘Plassey Plunder’ বলে অভিহিত করেছেন ।

পলাশীর লুণ্ঠন বলতে কী বোঝো

বাংলার মসনদে বসে মিরজাফর ইংরেজ কোম্পানি ও ক্লাইভকে প্রভূত অর্থ ও নানা উপঢৌকন দিয়ে সন্তুষ্ট করতে বাধ্য হন। ফলে বাংলার রাজকোশ শূন্য হয়ে যায়। উপরন্তু কোম্পানি ও তাঁর কর্মচারীরা সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে বাংলার অর্থ সম্পদ শােষণ করতে থাকে। ঐতিহাসিকগণ একেই পলাশির লুণ্ঠন বলে অভিহিত করেছেন।

পলাশীর যুদ্ধের পর কি হয়েছিল

পলাশীর যুদ্ধ, যেটি 23 জুন, 1757 সালে সংঘটিত হয়েছিল, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কালে ভারতীয় ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল। যুদ্ধের পরে যা ঘটেছিল তার সংক্ষিপ্তসার এখানে দেওয়া হল:

  • ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়: পলাশীর যুদ্ধ বাংলার নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য একটি নির্ণায়ক বিজয়ের ফলে। এই বিজয় বাংলায় কোম্পানির পাদদেশ প্রতিষ্ঠা করে এবং ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্যের সূচনা করে।
  • বাংলার উপর ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ: যুদ্ধের পরে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করে, এর সম্পদ, সম্পদ এবং প্রশাসন সহ। পরবর্তী বছরগুলিতে তারা ধীরে ধীরে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তাদের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করে।
  • বাংলার নবাবের পতন: পলাশীতে পরাজয় বাংলার নবাবকে দুর্বল করে দেয় এবং স্বাধীন বাংলা সুবাহের পতনকে চিহ্নিত করে। ব্রিটিশরা তাদের নিয়ন্ত্রণে নবাব হিসেবে কাজ করার জন্য মীর জাফরের মতো তাদের নিজস্ব পুতুল শাসকদের প্রতিষ্ঠা করেছিল।
  • ব্রিটিশ প্রভাব বিস্তার: পলাশীর যুদ্ধ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য ভারতের অন্যান্য অংশে তাদের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করার পথ প্রশস্ত করে। তারা বাণিজ্য চুক্তি স্থাপন করে, অঞ্চলগুলি অধিগ্রহণ করে এবং ধীরে ধীরে ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল অংশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
  • ভারতীয় রাজনীতির উপর প্রভাব: যুদ্ধ এবং এর ফলাফল ভারতীয় রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এটি ভারতীয় শাসকদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের দিকে পরিচালিত করে, বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এবং শেষ পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের অস্থিতিশীলতায় অবদান রাখে।
  • অর্থনৈতিক শোষণ: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় তার অবস্থানের সদ্ব্যবহার করে তার সম্পদ শোষণের জন্য, যার মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত বাংলার বস্ত্র শিল্প। তারা এমন নীতি বাস্তবায়ন করেছিল যা অর্থনৈতিক শোষণের দিকে পরিচালিত করেছিল এবং এই অঞ্চল থেকে সম্পদ অপসারণ করেছিল, এর পতনে অবদান রেখেছিল।

পলাশীর যুদ্ধ ছিল ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনা করে এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলিতে ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ল্যান্ডস্কেপের গতিপথকে আকার দেয়।

আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | পলাশী যুদ্ধ

Q1. পলাশীর যুদ্ধ কি

Ans – ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং নবাব সিরাজদৌলার সাথে ১৭৫৭ সালে পলাশী প্রান্তরের আম বাগানে যে যুদ্ধ হয়েছিল ইতিহাসে এটাকেই পলাশীর যুদ্ধ বলে। নবাব যুদ্ধে হারার ফলে বাংলার আকাশ থেকে স্বাধীনতার সূর্য ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়ে যায়। যা ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ প্রানের বিনিময়ে উদিত হয়।

Q2. আমার শেষ যুদ্ধ পলাশীতে উক্তিটি কার

Ans – সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল নবাবের উদ্দেশ্যে এ উক্তিটি করেছিলেন।
মোহনলাল যুদ্ধের ব্যর্থ পরিণতি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আবার আসেন নবাব শিবিরে। তিনি নবাবকে রাজধানীতে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং নিজে ফিরে যেতে চান যুদ্ধক্ষেত্রে কারণ তার যুদ্ধ তখনো শেষ হয় নি। তিনি জীবিত থাকবেন অথচ শত্র“ দ্বারা পরাজিত হবেন- এ বাস্তবতা বীরি সেনাপতির পক্ষে মেনে নেয়া অসম্ভব ছিল।

Q3. পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ

Ans – নবাবের পরাজয়ের একটি প্রধান কারণ ছিল সিরাজ উদ-দৌলার অন্যতম সেনাপতি মীরজাফরের নেতৃত্বে বাহিনী কখনো যুদ্ধ করেনি। রবার্ট ক্লাইভ সিরাজ উদ-দৌলাকে পরাজিত করার পর তাকে নবাব করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সমর্থন নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন। পলাশীর যুদ্ধ বিখ্যাত হয়ে ওঠে কারণ এটি ছিল ভারতে কোম্পানির প্রথম বড় বিজয়।

Q4. পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে কতজন সৈন্য ছিল

Ans – নবাব বাহিনীর পক্ষে সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ছিল মাত্র ৩ হাজার।

Q5. পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলার নবাব কে হন

Ans – পলাশীর যুদ্ধের পর মীরজাফরকে বাংলার নবাব করা হয় ।

Q6. পলাশী কোন জেলায় অবস্থিত

Ans – পলাশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম। ১৭৫৭ সালে এ গ্রামেই বিখ্যাত পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল। বর্তমানে পলাশী একটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাণিজ্যকেন্দ্র। একটি মতে পলাশী নামটি এসেছে লাল রঙের ফুল পলাশ থেকে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।