- নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে
- নিষ্ক্রিয় গ্যাস কয়টি, নিষ্ক্রিয় গ্যাস কয়টি ও কি কি
- নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নিষ্ক্রিয়তার কারণ, নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নিষ্ক্রিয়তার কারণ ব্যাখ্যা কর
- নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ব্যবহার (Use of Noble gas)
- বায়োমাস ও বায়োগ্যাস কি
- আদর্শ গ্যাস কাকে বলে
- আদর্শ গ্যাসের বৈশিষ্ট্য
- আদর্শ গ্যাসের সমীকরণ, আদর্শ গ্যাসের সূত্র
- আদর্শ গ্যাস ও গ্যাসের গতিতত্ত্ব
- বাস্তব গ্যাস কাকে বলে
- বাস্তব গ্যাসের সমীকরণ
- বাস্তব গ্যাসের চাপ আদর্শ গ্যাসের চাপ অপেক্ষা কম কেন
- আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাসের মধ্যে পার্থক্য
- গ্রীন হাউজ গ্যাস, গ্রীন হাউজ গ্যাস কি, গ্রীন হাউজ গ্যাস কাকে বলে
- গ্রীন হাউজ গ্যাস গুলো কি কি
- জৈব গ্যাসের মূল উপাদান কি
- FAQ | গ্যাস
নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে
যে সব গ্যাসীয় মৌল রাসায়নিকভাবে নিস্ক্রিয় অর্থাৎ অন্য কোনো মৌলের সাথে সংযুক্ত হয় না, এমনকি নিজেদের মধ্যেও সংযুক্ত হয় না, সর্বদা এক পরমাণুক অবস্থা বিরাজ করে তাদেরকে নিস্ক্রিয় গ্যাস (Noble Gas) বলে।
নিষ্ক্রিয় গ্যাস কয়টি, নিষ্ক্রিয় গ্যাস কয়টি ও কি কি
নিস্ক্রিয় গ্যাস মোট ৭টি। এগুলো হলো : হিলিয়াম (He), নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar), ক্রিপ্টন (Kr), জেনন (Xe), রেডন (Rn) এবং ওগানেসন (Og)। সাধারণ অবস্থায় এগুলো বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং এক পরমাণুক গ্যাস। এছাড়াও এগুলোর স্ফুটনাংক ও গলনাংক খুবই কম। আলোকসজ্জা, ওয়েল্ডিং এবং মহাশূন্য প্রযুক্তিতে এই গ্যাসগুলোর অনেক ব্যবহার রয়েছে।
নিস্ক্রিয় গ্যাসগুলোর ভৌত ধর্ম (Physical properties of Noble gases?)
- নিস্ক্রিয় গ্যাসগুলো সাধারণ তাপমাত্রা ও চাপে এক পরমাণুক গ্যাস।
- নিস্ক্রিয় গ্যাসগুলোর কোন বর্ণ, স্বাদ বা গন্ধ নেই।
- প্রতি লিটার পানিতে নিস্ক্রিয় গ্যাসের দ্রাব্যতা অনেক কম।
- এসব গ্যাসের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অত্যন্ত কম। যেমন He, এর স্ফুটনাংক -269°C থেকে Rn-এ সর্বোচ্চ -65°C।
- নিস্ক্রিয় গ্যাসসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল থাকার কারণে এদের গলনতাপ ও বাষ্পীয়ভবন তাপ কম।
- নিস্ক্রিয় গ্যাসের আয়নিকরণ শক্তি সবচেয়ে বেশি।
- পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিস্ক্রিয় গ্যাসসমূহের আয়নিকরণ শক্তি কম হয়।
- আকর্ষণ বল কম থাকার কারণে নিস্ক্রিয় গ্যাসগুলোকে তরলে পরিণত করা অনেক কঠিন।
নিস্ক্রিয় গ্যাসগুলোর রাসায়নিক ধর্ম (Chemical properties of Noble gases)
রাসায়নিকভাবে নিস্ক্রিয় হলেও নিস্ক্রিয় গ্যাসসমূহ দুর্বল আকর্ষণ বল এর সাহায্যে বেশ কিছু যৌগ গঠন করে। যেমন– সমযোজী যৌগ, সন্নিবেশ যৌগ, হাইড্রেট যৌগ এবং ক্ল্যাথরেট যৌগ।
নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নিষ্ক্রিয়তার কারণ, নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নিষ্ক্রিয়তার কারণ ব্যাখ্যা কর
নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলির ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় হিলিয়াম ব্যতীত অন্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে অষ্টক পূর্ণ থাকে। নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহের সর্বশেষ শক্তিস্তরে অষ্টক পুর্ণ থাকায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ যথেষ্ট স্থিতিশীল থাকে। ফলে এসব মৌল সমূহ সহজে কোন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ থাকে যা অত্যন্ত সুস্থিত। এ সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস ভাঙ্গতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ অন্য কোন মৌলের সাথে যুক্ত হয় না।
অর্থাৎ বহিঃস্থ স্তরে সুবিন্যাস্ত ইলেকট্রন বিন্যাসের কারণে নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ নিষ্ক্রিয় হয়।
নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ব্যবহার (Use of Noble gas)
হিলিয়াম গ্যাসের ব্যবহার
১. হিলিয়াম গ্যাস হালকা ও অদাহ্য হওয়ায় বেলুন ও উড়োজাহাজের টায়ার স্ফীত করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
২. ডুবুরিরা শ্বাসকার্যে ব্যবহারের জন্য 20% অক্সিজেন ও 80% হিলিয়াম গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করেন।
৩. হিলিয়াম ও অক্সিজেন গ্যাসের মিশ্রণ হাঁপানি রোগের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়।
৪. নিষ্ক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৫. কম তাপমাত্রায় গবেষণার জন্য গবেষণাগারে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৬. প্রতিপ্রভ নলে নিয়ন গ্যাসের সাথে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৭. নিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপে ব্যবহৃত গ্যাস থার্মোমিটারে হিলিয়াম ব্যবহার করা হয়।
৮. এটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ব্যবহার করা হয়।
নিয়ন গ্যাসের ব্যবহার
১. নিয়ন বাতি ও নিয়ন চিহ্ন প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়।
২. আলোকসজ্জার জন্য নিয়ন গ্যাস ইলেকট্রিক বাল্বে ব্যবহৃত হয়।
৩. সবুজ ঘরে উদ্ভিদ ও ফুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে নিয়ন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৪. টেলিভিশন সেট, বেতার চিত্র এবং শব্দ চলচ্চিত্র ইত্যাদি’তে নিয়ন ব্যবহার করা হয়।
৫. বৈদ্যুতিক যন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে নিয়ন ও হিলিয়াম এর মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
৬. বিমানের পাইলটেরা আলোক সংকেতরূপে নিয়ন আলো ব্যবহার করে। কারণ এটি ঘন কুয়াশার মধ্যেও দৃশ্যমান হয়।
৭. নিয়ন আলো উজ্জ্বল লাল হয়ে থাকে। কিন্তু সবুজ বা নীল বর্ণের আলো তৈরিতে অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা মার্কারির সাথে নিয়ন গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
৮. ভোল্টমিটার, রেকটিফায়ার প্রভৃতি যন্ত্র সংরক্ষণে হিলিয়াম-নিয়ন গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
আর্গন গ্যাসের ব্যবহার
১. সস্তা বৈদ্যুতিক বাল্বের ভিতর নিষ্ক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যবহার করা হয়।
২. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নিষ্ক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টিতে আর্গন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৩. ঝালাইকাজে নিষ্ক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টিতে আর্গন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৪. তেজস্ক্রিয়তা মাপার যন্ত্র, যেমন- গাইগার মুলার কাউন্টারে আর্গন গ্যাস ব্যবহার হয়।
৫. গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফিতে আর্গন ব্যবহার করা হয়।
ক্রিপটন গ্যাসের ব্যবহার
১. কসমিক রশ্মি পরিমাপে আয়নিকরণ প্রকোষ্ঠে ক্রিপটন ব্যবহার করা হয়।
২. বৈদ্যুতিক গ্যাস বাল্বে বা টিউবলাইটে এটি ব্যবহার করা হয়।
৩. তীব্র আলো সৃষ্টির জন্য ফটোগ্রাফিক ফ্ল্যাশ বাল্বে ক্রিপটন ব্যবহার করা হয়।
৪. বিভিন্ন তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপক যন্ত্রে ক্রিপটন ব্যবহার করা হয়।
৫. খনি শ্রমিকদের ক্যাপ ল্যাম্পে ক্রিপটন ব্যবহার করা হয়।
জেনন গ্যাসের ব্যবহার
১. গামা রশ্মি, নিউটন ও অন্যান্য নিউক্লিয় কণা শনাক্তকরণের জন্য বুদবুদ প্রকোষ্ঠে জেনন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
২. দ্রুতগতিসম্পন্ন আলোকচিত্র গ্রহণ করার জন্য ক্রিপটন-জেনন গ্যাসের মিশ্রণ ফটোগ্রাফিক ফ্লাশ নলে ব্যবহার করা হয়।
রেডন গ্যাসের ব্যবহার
১. ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার কাজে রেডন ব্যবহার করা হয়।
২. তেজস্ক্রিয় গবেষণার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।
৩. শরীরের ক্ষতিকর বৃদ্ধি লাঘবে রেডিওথেরাপি চিকিৎসায় রেডন ব্যবহার করা হয়।
বায়োমাস ও বায়োগ্যাস কি
য়োমাস এবং বায়োগ্যাস একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। বায়োগ্যাস বায়োমাস থেকে উত্পাদিত হয়। অন্য কথায়, বায়োমাস হ’ল বায়োগ্যাস উত্পাদনের সূচনা উপাদান বা কাঁচামাল। বায়োমাসের প্রধান উপাদান হ’ল কার্বন। সুতরাং, বায়োগ্যাসও একটি কার্বন উপাদান দিয়ে গঠিত।
বায়োগ্যাস বিভিন্ন গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত। জৈব পদার্থের বিভাজন দ্বারা বায়োগ্যাস উত্পাদিত হয়। বায়োমাস এবং বায়োগ্যাসের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে; বায়োমাস এবং বায়োগ্যাসের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হ’ল বায়োমাস একটি শক্ত উপাদান যেখানে বায়োগ্যাস বায়বীয় যৌগের মিশ্রণ।
বায়োগ্যাস কি
বিভিন্ন পচনশীল জৈব পদার্থ বা বর্জ্যপদার্থ যেমন গোবর, হাঁস- মুরগীর মলমূত্র, গৃহস্থালীর বর্জ্য ইত্যাদি বাতাসের অনুপস্থিতিতে পচনের ফলে যে গ্যাস তৈরী হয় তাকে বায়োগ্যাস বলে। বায়োগ্যাস ব্যবহারের ফলে আমরা পচনশীল বর্জ্যগুলোকে কাজে লাগিয়ে আবর্জনা ও দুর্গন্ধমুক্ত স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও উন্নত জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করা সম্ভব।
বায়োমাস
বায়োমাস বলতে সাধারণত বুঝি কৃষিজাতো বোঝো, আপেক্ষিকরা ভুসি, শাকসবজি, ফলমূলের খোসা, শহরের আবর্জনা, রান্না ঘরের অব্যবহৃত জৈব অবশেষ, প্রাণীর মূল মূত্র মৃত প্রাণীর দেহ বসে অর্থাৎ এক কথায় কার্বন ঘটিত পদার্থকে আমরা বায়ুমাস বলে থাকি।
আর এই বারে মাসে যে রাসায়নিক শক্তি সঞ্চিত থাকে তাকে বায়োমাস শক্তি বলে।
আদর্শ গ্যাস কাকে বলে
যে সকল গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের সূত্রসমূহ অর্থাৎ বয়েলের সূত্র, চার্লসের সূত্র, অ্যাভোগেড্রোর সূত্র ইত্যাদি মেনে চলে তাদেরকে আদর্শ গ্যাস (Ideal gas) বলে।
বাস্তবে কোনো আদর্শ গ্যাস নেই অর্থাৎ কোনো গ্যাসই যথাযথভাবে গ্যাসের সূত্রসমূহ মেনে চলে না। এটি একটি কাল্পনিক ধারণা মাত্র। আদর্শ গ্যাসের নির্ণায়কসমূহ হচ্ছে–
(i) আদর্শ গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে PV = nRT সূত্র মেনে চলবে।
(ii) স্থির তাপমাত্রায় আদর্শ গ্যাসসমূহের অভ্যন্তরীণ শক্তি আয়তনের উপর নির্ভর করে না।
আদর্শ গ্যাসের বৈশিষ্ট্য
বাস্তবে কোন আদর্শ গ্যাস নাই। গ্যাসের সূত্রসমূহ ব্যাখ্যার জন্য এটা একটা কাল্পনিক তত্বীয় গ্যাস।
আদর্শ গ্যাস হল ইতস্তত বিচরণকারী বিন্দুকণা সমষ্টি দ্বারা গঠিত তাত্ত্বিকভাবে প্রতিষ্ঠিত গ্যাস, যার কণাগুলির মধ্যে কেবল সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ হয়। আদর্শ গ্যাস তত্ত্ব অবস্থার সমীকরণ থেকে প্রাপ্ত আদর্শ গ্যাস সূত্র মেনে চলে। এই তত্ত্বটি আবার সংখ্যাতত্ত্বীয় বলবিদ্যার একটি সরল প্রয়োগ। তাই এই তত্ত্বের গুরুত্ব অপরিসীম।
আদর্শ গ্যাসের বৈশিষ্ট্য হলঃ
- আদর্শ গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের সূত্রগুলো ও PV = nRT সমীকরণ মেনে চলে।
- প্রকৃতিতে আদর্শ গ্যাসের কোনো অস্তিত্ব নেই।
- আদর্শ গ্যাসের অণুগুলোর আয়তন পাত্রের আয়তনের তুলনায় নগণ্য ধরা হয়।
- আদর্শ গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে কোনো আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে না।
- আদর্শ গ্যাসের সংকোচনশীলতা গুণাঙ্ক Z এর মান সর্বদা 1 হয়।
আদর্শ গ্যাসের সমীকরণ, আদর্শ গ্যাসের সূত্র
আদর্শ গ্যাসের সমীকরণটি হলো : PV = nRT
এখানে,
- P = গ্যাসের চাপ
- n = গ্যাসের মোলসংখ্যা
- R = আদর্শ গ্যাস ধ্রুবক
- V = গ্যাসের আয়তন
- T = গ্যাসের পরম তাপমাত্রা
- এক মোল গ্যাসের জন্য আদর্শ গ্যাসের সমীকরণটি হলো:
- PV = nRT
আদর্শ গ্যাস ও গ্যাসের গতিতত্ত্ব
উত্তর : বিভিন্ন গ্যাসের রাসায়নিক ধর্ম ও আণবিক সংকেত ভিন্ন হলেও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায়, কিছু কিছু ভৌতধর্মে সকল গ্যাসই একই রূপ আচরণ করে। যেমন- সকল গ্যাসই বয়েল -এর, চার্লস -এর, অ্যাভোগাড্রো সূত্র প্রভৃতি মেনে চলে। গ্যাস সমূহের সাধারণ ভৌত ধর্মসমূহ ব্যাখ্যার জন্য বিভিন্ন বিজ্ঞানী যেমন- ক্লসিয়াস, ম্যাক্সওয়েল, বোল্টজম্যান প্রমুখ বিভিন্ন সময়ে কতিপয় যুক্তিসঙ্গত মতবাদ ব্যক্ত করে। তন্মধ্যে যে ধারণাসমূহ গৃহীত হয়েছে, তাদের সমষ্টিগত রূপকে গ্যাসের গতিতত্ত্ব বলে।
গ্যাসের গতিতত্ত্বের মূল স্বীকার্যসমূহ হলো :
১। গ্যাসের গঠন : গ্যাস মাত্রই অগণিত সুক্ষাতি-সুক্ষ্ম কণার সমন্বয়ে গঠিত। এদের গ্যাসীয় অণু বলা হয়। একই গ্যাসের সবঅণুগুলোর ভর এবং আকার সমান।
২। আয়তন : গ্যাসগুলো জ্যামিতিক বিন্দুর মত এতই ক্ষুদ্রাকৃতির যে তাদের নিজস্ব মোট আয়তন গ্যাসাধারের আয়তনের তুলনায় অতিশয় নগন্য।
৩। অণুসমূহের গতি প্রকৃতি : গ্যাসের অনুগুলো সব সময় খুব দ্রুতগতিতে সোজা পথে ইতঃস্তত সম্ভবপর সকল দিকে ছুটাছুটি করে। ফলে অণুসমূহের পরস্পরের সাথে এবং গ্যাসাধারের দেয়ালের সাথে অবিরাম সংঘর্ষ ঘটে। এই সংঘর্ষের ফলে অণুসমূহের গতির দিক পরিবর্তিত হয়।“
৪। আকর্ষণ বিকর্ষণ : অনুসমূহের নিজেদের মধ্যে বা অনু ও গ্যাসাধারের দেয়ালের মধ্যে কোন আকর্ষণ বা বিকষর্ণ নেই।
৫। অণু সমূহের মধ্যকার সংঘর্ষের প্রকৃতি : গ্যাসাণু সমূহ গোলাকার, কঠিন ও সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক। তাই অণু সমূহের মধ্যে সংঘর্ষেরফলে মোট গতি শক্তির কোন পরিবর্তন ঘটে না।
৬। গ্যাসের চাপ : গ্যাসাধারের দেয়ালের উপর গ্যাসের অনুগুলোর অবিরাম সংঘর্ষের ফলেই গ্যাসের চাপের সৃষ্টি হয়।
৭। গতি শক্তি : অণুসমূহের মোট গতিশক্তি তথা প্রতিটি অণুর গড় গতিশক্তি গ্যাসের পরম তাপমাত্রা সমানুপাতিক।
৮। গড় মুক্ত পথ : গ্যাস-অণুগুলোর দুটি ধারাবাহিক সংঘর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্বের গড় মানকে গড়মুক্ত পথ বলা
৯। সংঘর্ষ সময় : অণুগুলোর পরস্পরের মধ্যে শুধু সংঘর্ষের জন্য যে সময় ব্যয় হয় তা দুটি সংঘর্ষের মধ্যবর্তী সময়ের তুলনায় খুবই সামান্য।
বাস্তব গ্যাস কাকে বলে
যেসব গ্যাস বয়েলের সূত্র, চার্লসের সূত্র সঠিকভাবে মেনে চলে না তাদের বাস্তব বা প্রকৃত গ্যাস বলে। যেমন- হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন প্রভৃতি পরিচিত গ্যাসগুলিকে বাস্তব গ্যাস বলে। আসলে আদর্শ গ্যাসের অস্তিত্ব নিছক কল্পনা মাত্র। শুধুমাত্র উচ্চ তাপমাত্রায় এবং নিম্নচাপে বাস্তব গ্যাসগুলি প্রায় আদর্শ গ্যাসের মতো আচরণ করে এবং আদর্শ গ্যাস সমীকরণগুলি মেনে চলে।
যে সব গ্যাস বয়েলের সূত্র বা চার্লসের সূত্র সঠিক ভাবে মেনে চলে না তাদের বাস্তব বা প্রকৃত গ্যাস বলে। উদাহরণ – হাইড্রোজেন, অক্সিজেন , নাইট্রোজেন প্রভৃতি গ্যাস গুলি বয়েলের সূত্র মেনে চলে না বলে এরা বাস্তব গ্যাস । আদর্শ গ্যাসের অস্তিত্ব কল্পনা মাত্র । উচ্চ উষ্ণতায় এবং নিম্নচাপে বাস্তব গ্যাসগুলি আদর্শ গ্যাসের মতো আচরন করে থাকে। PV=nRT শর্তে বাস্তব গ্যাস চার্লস ও বয়েলের সূত্র মেনে চলে |
বাস্তব গ্যাসের সমীকরণ
বাস্তব গ্যাস হল অ-আদর্শ গ্যাস যার অণু স্থান দখল করে এবং তারা আদর্শ গ্যাস সূত্র মেনে চলে না। প্রকৃত গ্যাসে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য থাকে:
- সংকোচনশীলতা গুণাঙ্ক;
- পরিবর্তনশীল নির্দিষ্ট তাপ ক্ষমতা ;
- ভ্যানডার ওয়ালস বন্ধন
আদর্শ গ্যাসের বিচ্যুতি সংকোচনশীলতা গুণাঙ্ক Z দ্বারা বর্ণনা করা যেতে পারে।
ভ্যানডার ওয়ালস সমীকরণ
বাস্তব গ্যাসগুলি প্রায়শই তাদের মোলার ওজন এবং মোলার আয়তনকে বিবেচনা করা হয়।
অথবা বিকল্পভাবে:
যেখানে p চাপ, T হল তাপমাত্রা, R হল আদর্শ গ্যাস ধ্রুবক এবং V m মোলার আয়তন । a এবং b হল প্যারামিটার যা প্রতিটি গ্যাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে নির্ধারিত হয়, কিন্তু কখনও কখনও এই সম্পর্কগুলি ব্যবহার করে তাদের চরম তাপমাত্রা ( T c ) এবং চরম তাপমাত্রা ও চরম চাপ ( p c ) থেকে অনুমান করা হয়।
বাস্তব গ্যাসের চাপ আদর্শ গ্যাসের চাপ অপেক্ষা কম কেন
গ্যাসের গতিতত্তের স্বীকার্য মতে,আদর্শ গ্যাসের অনুসমুহের মধ্যে আক্রশ্ন-বিকর্ষণ নেই।কিন্তু বাস্তব গ্যাসের অণুসমূহের মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ আছে বলে গ্যাসকে তরলীভূত করা যায়। এ আকর্ষণ বলের প্রভাবে বাস্তব গ্যাসের অণুসমূহ গ্যাস পাত্রের দেয়ালে যে পরিমাণ চাপ প্রয়োগ করতে পারতো তা অপেক্ষা কিছুটা হলেও কম চাপ প্রয়োগ করে। তাই বাস্তব গ্যাসের চাপ, একই অবস্থায় আদর্শ গ্যাসের চাপ অপেক্ষা কম।
আদর্শ গ্যাসের ক্ষেত্রে , পাত্রের আয়তন কে গ্যাসের অনুর অবাধ বিচরণের আয়তন হিসেবে ধরা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে গ্যাসের স্বাধীনভাবে বিচরণের স্থান পাত্রের আয়তন থেকে কিছু কম।
আদর্শ গ্যাসের ক্ষেত্রে, গ্যাসের অনুগুলির মধ্যে কোনো অন্তরানবিক আকর্ষণ বল নেই।
কিন্তু বাস্তবে গ্যাসের অনুগুলোর মধ্যে আকর্ষন বল থাকে। ফলে পাত্রের দেওয়ালে যে পরিমাণ ধাক্কা দিয়ে চাপ সৃষ্টি করত বাস্তব গ্যাস তার থেকে কম ধাক্কা দিয়ে তুলনায় কম চাপ সৃষ্টি করে।
বাস্তব গ্যাসসমূহ আদর্শ গ্যাস হতে বিচূতির কারণ:-
- গ্যাসের গতীয় তত্ত্ব অনুযায়ী গ্যাসের অনুগুলির কে বিন্দুর ন্যায় ভাবা হয়।গ্যাসের মোট আয়তন পত্রের আয়তনের তুলনায় নগণ্য ধরা হয়। কিন্তু বাস্তবে গ্যাসীয় অনুগুলি অত্যন্ত ক্ষুদ্রাকৃতি হলেও এদের আয়তন আছে। তাই গ্যাসের বিন্দু ও পাত্রের তুলনায় নগন্য আয়তন হওয়ার কল্পনা কেবলমাত্র খুব উচ্চতা ও নিম্নচাপের গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- অন্যান্য গ্যাসের ক্ষেত্রে এই কল্পনা সঠিক নয় অর্থাৎ বাস্তব গ্যাসের অনুগুলির স্বতস্ফূর্ত বিচরণের জন্য কার্যকরী আয়তন ওই গ্যাসের আধারের আভ্যন্তরীণ আয়তনের তুলনায় কিছুটা কম হয়।
- গ্যাসের গতীয় তত্ত্ব অনুযায়ী গ্যাসের অনুগুলির মধ্যে কোনো আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল ক্রিয়াশীল না হলেও অধিক চাপে যখন গ্যাসের আয়তন কম হয় তখন অনুগুলি পরস্পরের খুব খুব কাছে হওয়ায় এদের মধ্যে আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে ।তাই আদর্শ অবস্থায় অনুগুলি পাত্রের দেওয়ালে যে বল প্রয়োগ করার কথা তা বাস্তব গ্যাসের অনু প্রয়োগ করতে পারে না।
আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাসের মধ্যে পার্থক্য
যে সব গ্যাস বয়েলের সূত্র বা চার্লসের সূত্র সঠিক ভাবে মেনে চলে না তাদের বাস্তব বা প্রকৃত গ্যাস বলে। বাস্তব গ্যাস ও আদর্শ গ্যাসের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
আদর্শ গ্যাস | বাস্তব গ্যাস |
---|---|
যে সকল গ্যাস সকল তাপমাত্রায় ও সকল চাপে গ্যাস সূত্ৰসমূহ যথা- বয়েলের সূত্র, চার্লসের সূত্র, অ্যাভােগাড্রোর সূত্র মেনে চলে তাদের আদর্শ গ্যাস বলে। | যে সব গ্যাস বয়েলের সূত্র বা চার্লসের সূত্র সঠিক ভাবে মেনে চলে না তাদের বাস্তব বা প্রকৃত গ্যাস বলে। |
আদর্শ গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের সূত্রগুলো ও PV = nRT সমীকরণ মেনে চলে। | বাস্তব গ্যাস গ্যাসীয় সূত্রগুলো ও PV = nRT সমীকরণ মেনে চলে না। তবে খুব নিম্ন চাপে ও উচ্চ তাপমাত্রায় তারা গ্যাসীয় সূত্রগুলো ও PV = nRT সমীকরণ আংশিকভাবে মেনে চলে। |
প্রকৃতিতে আদর্শ গ্যাসের কোনো অস্তিত্ব নেই। | প্রকৃতিতে সব গ্যাসীয় পদার্থ হল বাস্তব গ্যাস। |
আদর্শ গ্যাসের অণুগুলোর আয়তন পাত্রের আয়তনের তুলনায় নগণ্য ধরা হয়। | বাস্তব গ্যাসের ক্ষেত্রে অণুগুলোর আয়তন পাত্রের আয়তনের তুলনায় নগণ্য ধরা হয় না। |
আদর্শ গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে কোনো আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে না। | বাস্তব গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রতিটি অণুর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে। |
আদর্শ গ্যাসের সংকোচনশীলতা গুণাঙ্ক Z এর মান সর্বদা 1 হয়। | বাস্তব গ্যাসের সংকোচনশীলতা গুণাঙ্ক Z এর মান 1 অপেক্ষা কম বা বেশি হয়। |
গ্যাসের সূত্রসমূহ সমন্বয়
চাপ ও উষ্ণতার পরিবর্তনের সঙ্গে গ্যাসের আয়তনের পরিবর্তনের সূত্রগুলিকে গ্যাসের সুত্র বলে ।
বয়েলের সূত্র | Boyle’s Law
উষ্ণতা স্থির থাকলে, নির্দিষ্ট ভরের যে কোনো গ্যাসের আয়তন ওই গ্যাসের চাপের সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয় ।
বয়েলের সূত্রের গাণিতিক রূপ
নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন যদি V হয় এবং এর চাপ P হয়, তাহলে বয়েলের সূত্রানুযায়ী V∝1/Pযদি উষ্ণতা স্থির থাকে । অথবা, PV = ধ্রুবক । স্থির উষ্ণতায় কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের চাপ যদি P1, P2, P3 ইত্যাদি হয় এবং আয়তন যথাক্রমে V1, V2, V3 ইত্যাদি হয়, তাহলে বয়েলের সূত্রানুযায়ী P1V1 = P2V2 = P3V3 = K (ধ্রুবক).
চার্লসের সূত্র | Charles’ Law’s
চাপ স্থির থাকলে নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য ওই গ্যাসের 0oC উষ্ণতায় যে আয়তন হয়, তার 12731273 অংশ যথাক্রমে বৃদ্ধি বা হ্রাস পায় । 12731273 ভগ্নাংশটিকে স্থির চাপে গ্যাসের আয়তন প্রসারণ গুণাঙ্ক বলা হয়।
গ্রীন হাউজ গ্যাস, গ্রীন হাউজ গ্যাস কি, গ্রীন হাউজ গ্যাস কাকে বলে
বায়ুমন্ডলের যে সকল গ্যাস তাপীয় অবলোহিত সীমার মধ্যে বিকিরিত শক্তি শোষণ ও নির্গত করে সে সকল গ্যাসকে গ্রীন হাউস গ্যাস বলে।এটি গ্রীনহাউস প্রভাবের মৌলিক কারণ। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রাথমিক গ্রীনহাউস গ্যাস গুলোর মধ্যে আছে জলীয় বাষ্প,কার্বন ডাই অক্সাইড,মিথেন,নাইট্রাস অক্সাইড এবং ওজোন।
গ্রীন হাউস গ্যাস ছাড়া পৃথিবী পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা হত -১৮ °C (0 °F), যা বর্তমানে ১৫ °C (৫৯ °F)
সৌর জগতের বিভিন্ন গ্রহ যেমন শুক্র ,মঙ্গল ইত্যাদির বায়ুমন্ডলেও বিভিন্ন গ্রীনহাউস গ্যাস রয়েছে।
ওজোন হচ্ছে অক্সিজেনের একটি সক্রিয় রূপভেদ। এর সংকেত O₃ ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে থাকে।
বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত । এখন ওজোন স্তরকে আমরা পৃথিবীর প্রটেক্টর বা ঢাল বলতে পারি। সূর্য থেকে নির্গত অতি বেগুনী রশ্মি যদি সরাসরি আমাদের চামড়ায় লাগতো তাহলে স্কিন ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের সৃষ্টি হতো। ওজোন স্তরে সূর্য রশ্মি ফিল্টার হয়ে আসে।
গ্রীন হাউজ গ্যাস গুলো কি কি
যেসমস্ত গ্যাসগুলি বায়ুমন্ডলের স্তরে চাঁদোয়ার মতো অবস্থান করে বিশ্ব উষ্ণায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সেগুলিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে । গ্রিনহাউস গ্যাসের উদাহরণ দিতে গেলে যে 6 টি গ্যাসের নাম প্রথমে আসে সেগুলি হল –
- কার্বন ডাই অক্সাইড
- মিথেন
- ক্লোরোফ্লুরো কার্বন
- নাইট্রাস অক্সাইড
- ওজোন এবং
- জলীয় বাষ্প ।
এদের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণকরণে CO2 অন্যতম হলেও অন্যান্য গ্রিন হাউস গ্যাস গুলির ভূমিকাও কম নয়
জৈব গ্যাসের মূল উপাদান কি
জৈব গ্যাসে সাধারণত প্রায় 50-70 শতাংশ মিথেন (CH4) এবং 25-45 শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) দিয়ে তৈরি, অন্য গ্যাসগুলির মধ্যে থাকে হাইড্রোজেন (H2), হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S), জলীয় বাষ্প (H2O), নাইট্রোজেন (N2), অক্সিজেন (O2), অ্যামোনিয়া (NH3)।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | গ্যাস
Q1. নিষ্ক্রিয় গ্যাস কি
Ans – যে মৌলিক পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেনা তাকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ৬ টি : হিলিয়াম(He), নিয়ন(Ne) আর্গন(Ar),ক্রিপ্টন (Kr), জেনন(Xe), রেডন(Rn)।
Q2. আদর্শ গ্যাস কি
Ans – যে গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসসূত্রসমূহ- বয়েল সূত্র, চার্লস সূত্র ও অ্যাভোগাড্রো সূত্র পুরোপুরি মেনে চলে, তাকে আদর্শ গ্যাস বলা হয়।
or: যে সকল গ্যাস গ্যাসের গতিতত্ত্বের মৌলিক স্বীকার্যসমূহ মেনে চলে এবং সকল তাপমাত্রায় ও চাপে বয়েল ও চার্লসের সূত্র মেনে চলে তাকে আদর্শ গ্যাস বলে।
অন্যভাবে বলা যায়, যে গ্যাস সব তাপমাত্রা ও চাপে PV = nRT এ সমীকরণটি মেনে চলে, তাকে আদর্শ গ্যাস বলা হয়।
Q3. লাফিং গ্যাস এর সংকেত
Ans – লাফিং গ্যাসের রাসায়নিক নাম নাইট্রাস অক্সাইড। রাসায়নিকভাবে একে N2O লেখা হয়। এটি একটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট গ্যাস যা বর্ণহীন এবং দাহ্য নয়। শ্বাস নেওয়ার উত্তেজনাপূর্ণ প্রভাবের কারণে এটিকে লাফিং গ্যাস বলা হয়।
Q4. বাস্তব গ্যাস কি
Ans – যে সব গ্যাস বয়েলের সূত্র বা চার্লসের সূত্র সঠিক ভাবে মেনে চলে না তাদের বাস্তব বা প্রকৃত গ্যাস বলে। উদাহরণ – হাইড্রোজেন, অক্সিজেন , নাইট্রোজেন প্রভৃতি গ্যাস গুলি বয়েলের সূত্র মেনে চলে না বলে এরা বাস্তব গ্যাস । আদর্শ গ্যাসের অস্তিত্ব কল্পনা মাত্র । উচ্চ উষ্ণতায় এবং নিম্নচাপে বাস্তব গ্যাসগুলি আদর্শ গ্যাসের মতো আচরন করে থাকে। PV=nRT শর্তে বাস্তব গ্যাস চার্লস ও বয়েলের সূত্র মেনে চলে |
Q5. ওজোন গ্যাস কে আবিষ্কার করেন
Ans – জার্মান বিজ্ঞানী স্কোনবীনি ১৮৪০ সালে ওজোন আবিস্কার করেন।
Q6. প্রধান গ্রীন হাউস গ্যাস কোনটি
Ans – কার্বন ডাই অক্সাইড হল গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রধান (শতাংশ-ভিত্তিক) গ্যাস।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।