দ্বিপদ নামকরণ ও এর নিয়ম ব্যাখ্যা কর? এর গুরুত্ব আলোচনা কর।

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

WBBSE Jiban Bigyan Dipod Namkoron | Model Activity Task Class 10 Part 7 Life Science | Question Answer

উপরিউক্ত প্রশ্ন এবং তার যথাযত সমাধান, নিম্ন লিখিত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর আকারে বর্ণনা করা হলো। এই উত্তর গুলি বহুবিকল্প (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত (VSA), ছোট (SA) এবং বড় (LA), সকল প্রশ্নোর ক্ষেত্রে উত্তর সমাধান হিসাবে পাঠ করা যেতে পারে।

প্রশ্নোত্তর এবং সমাধান

দ্বিপদ নামকরণ কাকে বলে, দ্বিপদ নামকরণ কাকে বলে class 9, দ্বিপদ নামকরণ বলতে কি বুঝায়

ICBNএর নীতিমালা অনুসারে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জীবের জন্য দুটি পদ নিয়ে গঠিত একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ এবং নামকরণের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ প্রক্রিয়া।

এই বৈচিত্র্যময় জীব জগতের প্রতিটি জীবকে আলাদা নামে সঠিকভাবে জানাই হলো দ্বিপদ নামকরণ এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।

দ্বিপদ নামকরনের জনক সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস। তিনি ১৭৫৩ সালে species plantaraum নামক বই রচনার মাধ্যমে দ্বিপদ নামকরনের পদ্ধতি প্রবর্তন করেন।

অর্থ:-

দ্বি মানে দুই,
নামমাত্র মানে নাম।
সুতরাং, দ্বিপদ নামকরণ হল জীবন্ত প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়ার পদ্ধতি।

ভূমিকা:-

এটি 1757 সালে সুইডিশ জীববিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। দ্বিপদ নামকরণ অনুসারে, সমস্ত জীবন্ত প্রাণীর একটি নির্দিষ্ট নাম রয়েছে যা দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত। প্রথম নামটি জেনাস এবং দ্বিতীয় নামটি প্রজাতিকে বোঝায়। সেজন্য এই ব্যবস্থা দুটি শব্দের নামকরণ পদ্ধতি নামে পরিচিত।

উদাহরণ:-

হোমোস্যাপিয়েন্স মানুষের প্রাণিবিদ্যার নাম। এই নামে, হোম হল প্রজাতি এবং স্যাপিয়েন্স হল প্রজাতি।

দ্বিপদ নামকরণের গুরুত্ব

i এই নামগুলি সাধারণ নামের চেয়ে আরও নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। প্রচলিত নামের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

ii. সাধারণত ল্যাটিন ভাষায় হওয়ায়, সব ভাষার মানুষের কাছে তাদের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

iii. এগুলি সাধারণত বর্ণনামূলক এবং অধ্যয়ন করা সহজ।

iv তারা পৃথক প্রাণী এবং উদ্ভিদের জেনেরিক এবং বিবর্তনীয় সম্পর্ক নির্দেশ করে।

দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলী, দ্বিপদ নামকরণের যেকোনো দুটি নিয়মাবলী উল্লেখ করো, দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি কি

  • প্রতিটি জীবের নামকরণ হবে ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে।
  • প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে। প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম । যেমন-গণ (Genus)- Homo প্রজাতি (Species) –sapiens
  • বৈজ্ঞানিক নামগুলি সাধারণত তির্যকভাবে মুদ্রিত হয় যখন হাতে লেখা সেগুলি আন্ডারলাইন করা হয়।
  • প্রথম শব্দের জেনেরিক নাম সর্বদা একটি বড় অক্ষর দিয়ে শুরু হয়, যখন প্রজাতির নাম কখনই বড় করা হয় না।
  • প্রজাতির নাম জেনাসের নামের পরে লেখা হয়।
  • জীব জগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নাম কে অনন্য হতে হয়, কারণ একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
  • বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষরে হতে হবে বাকি অক্ষর গুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে । যেমনঃ ধান- Oryza sativa sativa
  • বৈজ্ঞানিক নাম ছাপার সময় সর্বদা ইতালি অক্ষরে লিখতে হবে । যেমনঃ মানুষ- Homo sapiens
  • বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লেখার সময় গণ প্রজাতি নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে । যেমন- মানুষ- Homo sapiens
  • যদি একই জীবের কয়েকজন বিজ্ঞানী বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে
  • কোন জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম যিনি প্রথম দিবেন তার নাম উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে প্রকাশের সাল সহ সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে । যেমনঃ মানুষ- Homo sapiens L. 1758

উদাহরণ, কয়েকটি জীবের দ্বিপদ নাম-

  • আম – Mangifera indica
  • কাঁঠাল- Artocarpus heterophyllus
  • শাপলা – Nymphaea nuchali
  • ব্যাঙ – রানা টাইগরিনা
  • কুনোব্যাঙ- Bufo melanostictus
  • মৌমাছি- Apis indica
  • জবা- Hibiscus rosa-sinensis

দ্বিপদ নামকরণের প্রয়োজনীয়তা, দ্বিপদ নামকরণ এর সুবিধা

  • একটি সার্বজনীন নামের মাধ্যমে একটি প্রাণীকে পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়।
  • প্রাণীদের শনাক্তকরণে ভূমিকা রাখে।
  • প্রাণীদের শ্রেণিবিন্যাসকরণ সহজ হয়।
  • একই গণের প্রজাতিদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।
  • নামের মাধ্যমেই কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
  • সহজেই প্রাণী এবং উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম মনে রাখা যায়।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা কে, দ্বিপদ নামকরণ কে প্রচলন করেন, দ্বিপদ নামকরণের জনক কে, দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক কে

উত্তর: ক্যারোলাস লিনিয়াস (১৭০৭–১৭৭৮), যিনি জীবের নামকরণের ক্ষেত্রে দ্বিপদ নামকরণ নীতি প্রবর্তন করেন।

মানুষের দ্বিপদ নাম কি, মানুষের দ্বিপদ গমন কাকে বলে

উত্তর: মানুষের দ্বিপদ নামকরণ হলো হোমো স্যাপিয়েন্স।

মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি, মানুষের দ্বিপদ গমন, মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো

উত্তর:

  • প্রাণীর নাম – মানুষ
  • গমন অঙ্গের নাম – অস্থি, পেশী, অস্থি সন্ধি
  • গমন পদ্ধতির নাম – দ্বিপদ গমন

মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সমূহ – মানব দেহে মোট ২০৬ টি অস্থি থাকে। মানব অস্থি তন্ত্রের মত মেরুদণ্ড, শ্রোণীচক্র ও পায়ের অস্থি গুলি গমনে সাহায্য করে।

  • ১৷ মেরুদণ্ড – কশেরুকার দ্বারা গঠটি ঋজু অস্থি অক্ষ কে মেরুদণ্ড বলে। মেরুদণ্ডে কশেরুকারের সংখ্যা ৩৩ টি।
  • ২৷ শ্রোণীচক্র – সংখ্যা 1×2=2 । মানব দেহের প্রধান গমন অঙ্গ পদ শ্রোণীচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
  • ৩৷ পায়ের অস্থি –
    • ফিমার ( Femur ) – 1×2=2
    • টিবিয়া ( Tibia ) , ফিবিউলা ( Fibula ) – 2×2=2
    • টারসাল ( Tarsal ) – 7×2=14
    • মেটাটার্সাস ( Metatarsus ) – 5×2=10
    • ফ্যারেঞ্জেরস ( Phalanges ) – 14×2=28

মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সন্ধি সমূহ – ছয় প্রকার অস্থি সন্ধি দ্বিপদ গমনের সাথে সংশ্লিষ্ট

  • ১৷ স্কন্ধের সন্ধি,
  • ২৷ কব্জির সন্ধি,
  • ৩৷ কনুই ও হাঁটুর সন্ধি,
  • ৪৷ অ্যাম্বুলার সন্ধি,
  • ৫৷ কব্জি ও গোড়ালির সন্ধি,
  • ৬৷ করটি ও মেরুদণ্ডের সন্ধি

মানুষের গমনে সহায়ক পেশী – অস্থি ও অস্থি সন্ধির সঙ্গে যুক্ত থাকে পেশী। এই পেশী গুলির সংকোচন ও প্রসারনে অস্থি ও অস্থি সন্ধির সঞ্চালন ঘটে এর ফলে মানুষের গমন ক্রিয়া সংগঠন হয়।

  • ১৷ ফ্লেক্সর পেশী – যে সমস্ত পেশী দুটি অস্থি কে ভাঁজ হতে বা কাছাকাছি আনতে সাহায্য করে, তাদের ফ্লেক্সর পেশী বলে। উদাহরণ – বাইসেপস পেশী ( Biceps muscle)
  • ২৷ এক্সটেনসর পেশী – যে সমস্ত পেশী দুটি অস্থি খণ্ডকে প্রসারিত হতে সাহায্য করে, তাদের এক্সটেনসর পেশী বলে। উদাহরণ – ট্রাইসেপস পেশী ( Triceps muscle )
  • ৩৷ অ্যাডাকটর পেশী – যে সমস্ত পেশী কোনো অংশকে দেহ অক্ষের কাছাকাছি আনে তাদের অ্যাডাকটর পেশী বলে। উদাহরণ – ল্যাটিসিমাস ডরসি ( Latissimus dorsi )
  • ৪৷ যে সমস্ত পেশী কোনো অঙ্গকে দেহ অক্ষ থেকে দূরে সরায়, তাদের পেশী বলে। উদাহরণ – ডেল্টয়েড পেশী ( Deltoid Muscle)

দ্বিপদ গমন ক্রিয়া

  • ১৷ মানুষের দ্বিপদ গমনে বাম পা ও ডান হাত এবং ডান পা ও বাম হাত একত্রে অগ্রসর হয়। এর ফলে গমন কালে দেহের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
  • ২৷ গমনকালে পা তোলার পূর্বে প্রথমে গোড়ালি উপরের দিকে ওঠে এবং হাঁটু ভাঁজ হয়।
  • ৩৷ তারপর ওই পদ মাটি থেকে উঠে সামনের দিকে এগিয়ে স্থাপিত হয়।
  • ৪৷ এই সময় দেহের ভার রক্ষা করে।
  • ৫৷ বাঁ পা আগের পদ্ধতিতে স্থানান্তরিত হয়ে স্থাপিত হলে তারপর ডান পা একই পদ্ধতিতে ভাঁজ হয়।

একটি উদ্ভিদের দ্বিপদ নাম লেখ

উত্তর: ‘Mangifera indica’ হলো আমের বৈজ্ঞানিক নাম। এক্ষেত্রে ম্যাঙ্গিফেরা (Mangifera) হলো আমের গন বা জেনাস। আর ইন্ডিকা (indica) হলো আমের প্রজাতি ।

নতুন সিলেবাস জীবনবিজ্ঞন 9 ও 10



বইটি ২য় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। MCQs সম্পূর্ণভাবে অধ্যায়ের বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় প্রতিটি অধ্যায়ের সিলেবাসের বিষয়বস্তু MCQs এর আগে উল্লেখ করা হয় সম্পূর্ণ সিলেবাস অনুসরণ করে প্রতিটি মক টেস্টে 55 নম্বর থাকে ভুল উত্তরের জন্য কোনো নেতিবাচক মার্কিং নেই।



দ্বিপদ নামকরণ ও এর নিয়ম ব্যাখ্যা কর? এর গুরুত্ব আলোচনা কর।

ICBNএর নীতিমালা অনুসারে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জীবের জন্য দুটি পদ নিয়ে গঠিত একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ এবং নামকরণের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ প্রক্রিয়া।

দ্বিপদ নামকরণের গুরুত্ব

i এই নামগুলি সাধারণ নামের চেয়ে আরও নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। প্রচলিত নামের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ii. সাধারণত ল্যাটিন ভাষায় হওয়ায়, সব ভাষার মানুষের কাছে তাদের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
iii. এগুলি সাধারণত বর্ণনামূলক এবং অধ্যয়ন করা সহজ।
iv তারা পৃথক প্রাণী এবং উদ্ভিদের জেনেরিক এবং বিবর্তনীয় সম্পর্ক নির্দেশ করে।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।