কে পরীক্ষা আবিষ্কার করেছে
আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতির আবিষ্কারক হেনরি ফিশেল। জন্মেছিলেন ১৯১৩-২০০৮.
ভদ্রলোক শিক্ষকতা করতেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে। ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক। একদিন তাঁর মনে হলো, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে যেকোনো ঘটনা বা ব্যক্তিকে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা দরকার। আর এই যাচাই–বাছাইয়ের জন্য দরকার একটি সুনির্দিষ্ট পরীক্ষাপদ্ধতি। তারপর অনেক ভেবেচিন্তে তিনি পরীক্ষা নেওয়ার একটা প্রক্রিয়া তৈরি করেন।
তবে পরীক্ষা পদ্ধতি প্রথম চালু হয়েছিলো চীন দেশে। তবে ইতিহাস বলছে, হেনরি ফিশেলের পরীক্ষাপদ্ধতি আবিষ্কারেরও বহু বহু বছর আগে থেকে পৃথিবীতে পরীক্ষা ছিল। বলা যায়, পরীক্ষাপদ্ধতির শুরু আসলে সভ্যতার গোড়ার দিকেই। অনলাইন ঘেঁটে জানা গেল, চীনারাই এটি প্রথম শুরু করেছিলেন। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজ টেস্ট’ বা সার্বভৌম পরীক্ষার শুরু করেছিলেন সুই রাজবংশের রাজারা। সেটা ৬০৫ খ্রিষ্টাব্দের কথা।
পরীক্ষা বা ইংরেজি এক্সামিনেশন শব্দটি কিন্তু চীন থেকে আসেনি। লাতিন শব্দ ‘এক্সামিনেশনেম’কে গ্রহণ করেছিল ফরাসিরা। তারা উচ্চারণ করত ‘এক্সামিনাছিওন’ (examinacion)। সেখান থেকে নানা পথ ঘুরে ইউরোপে গিয়ে হয়েছে এক্সামিনেশন।
নানা পথ ঘুরে মানে ফ্রান্স থেকে গিয়েছে জার্মানি, জার্মানি থেকে ইংল্যান্ডে ও আমেরিকায়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এটিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। তারা চীনা সভ্যতার সেই পুরোনো পরীক্ষাপদ্ধতিকে একটু ঘষামাজা করে নতুনভাবে সাজিয়েছিল।
আমাদের এ অঞ্চল, অর্থাৎ ভারতবর্ষ দীর্ঘদিন শাসন করেছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ফলে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষাপদ্ধতি—অনেক কিছুই চালু আছে এ অঞ্চলে। আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা কিংবা চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলো যে পদ্ধতিতে হয়, তা অনেকটা ওই পুরোনো ব্রিটিশদের শেখানো।
তবে ইতিহাস এ কথাও জানান দিচ্ছে যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আসারও বহু আগে থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষার সূচনা হয়েছে। সেই ৪২৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, তক্ষশিলার মতো ভুবন বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুরুর দিকে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল বলে জানা যায় না। পরীক্ষার ফল নয়, বরং জ্ঞানার্জনকেই সবচেয়ে বড় পুরস্কার বলে মনে করত তারা।
বই কে আবিষ্কার করেন
বই আবিষ্কার করেন জোহান গুটেনবার্গ। তিনি মানবতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলির মধ্যে এক হিসেবে পরিচিত। গুটেনবার্গ স্থায়ী মুদ্রণশিল্পের উন্নতির পথে এগিয়ে উঠার জন্য ১৪০০ সালের প্রাচীন চীনা মুদ্রকত্বের বিচার করেন এবং ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দে বিচারের ফলাফল হিসেবে প্রথম মুদ্রন যন্ত্রটি তৈরি করেন, যা সাধারণ জনগণের কাছে বই প্রকাশের প্রাথমিক ধারণা জন্ম দেয়। গুটেনবার্গের বিশ্বকথন বই একটি ক্রান্তিকারী অবদান হিসেবে গণ্য হয়, যা শিক্ষা এবং জ্ঞানের প্রচার-প্রসারে একটি মাধ্যম হিসেবে উদ্ভাবন করে।
পড়ালেখা কে আবিষ্কার করেন, পড়াশোনা কে আবিষ্কার করেন
অক্ষর ব্যবহার শেখার আগে মানুষ অন্যান্য পশুপাখির মতোই নিজের মা-বাবা বা দলপতিকে দেখে শিখতো। বেঁচে থাকতে হলে সে মানুষ হোক আর বনের পশু হোক, শিক্ষার বিকল্প নেই। মানুষ অক্ষর উদ্ভাবন করেছে অর্থাৎ লিখতে ও পড়তে পারে বলে এটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে, এটাই পার্থক্য।
প্রাচীন ভারতে শিক্ষা প্রধানত বৈদিক ও বৌদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেওয়া হত। সংস্কৃত ছিল বৈদিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্যবহৃত ভাষা। পালি ভাষা ছিল বৌদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত ভাষা। বৈদিক ব্যবস্থায়, একটি শিশু তার শিক্ষা শুরু করে 8 থেকে 12 বছর বয়সে, যেখানে বৌদ্ধ পদ্ধতিতে শিশুটি তার শিক্ষা শুরু করে আট বছর বয়সে। প্রাচীন ভারতে শিক্ষার মূল লক্ষ্য ছিল একজন ব্যক্তির চরিত্রের বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণের শিল্পে আয়ত্ত করা, সামাজিক সচেতনতা আনা এবং প্রাচীন সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বৌদ্ধ ও বৈদিক ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় ছিল। অধ্যয়নের বৈদিক পদ্ধতিতে, ছাত্রদের চারটি বেদ শেখানো হয়েছিল – ঋগ্বেদ, সাম বেদ, যজুর বেদ এবং অথর্ববেদ, তাদের ছয়টি বেদাঙ্গও শেখানো হয়েছিল – আচারগত জ্ঞান, মেট্রিক্স, এক্সজেটিক্স, ব্যাকরণ, ধ্বনিতত্ত্ব এবং জ্যোতির্বিদ্যা, উপনিষদ। এবং আরো।
ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেন কে
ক্যালকুলাস আবিষ্কারের পিছনে যে দুজন মানুষের নাম সবার আগে আসে তাদের একজন হচ্ছেন স্যার আইজ্যাক নিউটন এবং আরেকজন গটফ্রেড লিবনিজ। এদের দুজনকে নিয়ে অনেক মজার ঘটনা আছে । ক্যালকুলাসের জনক হিসেবে দুজনকেই এখন মর্যাদা দেওয়া হয় ।
প্রথমে তাদের মধ্যে কে আগে সেটা আবিষ্কার করেছে তা নিয়ে বেশ বিবাদ – মনােমালিন্য হয়েছিল । এটা গণিতের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত কিংবা কুখ্যাত বিবাদগুলাের একটা । নিউটন দাবি করেন যে তিনিই আগে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছেন । নিউটনের নােট বই থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় তিনি ১৬৬৬ সালে আবিষ্কার করেন । কিন্তু তিনি প্রকাশ করেছিলেন ১৬৯৩ সালে । এদিকে লিবনিজের নােট বই বলে তিনি ১৬৭৪ সালে এটা আবিষ্কার করেন এবং প্রকাশ করেন ১৬৮৪ সালে । অর্থাৎ নিউটন থেকে লিবনিজ প্রায় আট বছর পরে আবিষ্কার করেছিলেন কিন্তু প্রকাশ করেছিলেন নিউটন থেকে নয় বছর আগে । তার মানে লিবনিজ দাবি করতেই পারেন তিনি আগে আবিষ্কার করেছেন । শেষ পর্যন্ত কে আবিষ্কার করেন , এটা নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় ।
ঘটনাক্রমে পদাধিকার বলে সে সময়ে রয়েল সােসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন নিউটন নিজেই ! তদন্ত শেষ করে নিউটন নিজেই স্বাক্ষর করলেন রিপাের্টে “ জনাব নিউটনই মনে হইতেছে পূর্বে আবিষ্কার করিয়াছে ‘! কী তামাশার ব্যাপার ! যাহােক এখন দুজনকেই আবিষ্কারকের মর্যাদা দেয়া হয় ।
একটা ব্যাপার এখানে বলা দরকার । গণিত কিংবা বিজ্ঞানে আবিষ্কারক ধারণাটাই আসলে বিভ্রান্তিকর । সত্যি বলতে কোনাে একজন কিংবা দুজন মানুষ মিলে কখনই একটা বড় আবিষ্কার করে ফেলতে পারে না। ক্যালকুলাসেও তাই ।
প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মেথড অফ ইন্ডিভিসিবলস ’ এর ধারণা দিয়ে গিয়েছিলেন ইউডক্সাস । তারপর মহান গণিতবিদ আর্কিমিডিস সেটার উপরে কাজ করে দারুণ সব সূত্র দেন জ্যামিতির। এই সব কিছুই আসলে ক্যালকুলাসের পূর্বসুরী । মাধবের ‘ যুক্তিভাষা ‘ বইতে ক্যালকুলাসের ধারণা ছিল । দে কার্তের স্থানাংক জ্যামিতির ধারণা , ফার্মার মেথড অফ এডেকোয়ালিটি এগুলাে না থাকলে নিউটন , লিবনিজের মাথায় ক্যালকুলাস জন্ম নিত কি না সন্দেহ । নিউটন এবং লিবনিজ যে ধারণা দিয়ে গিয়েছিলেন , ওখানেই থেমে থাকেনি ক্যালকুলাস । এরপর অয়লার , কশি , রাইমান , গাউসের মতাে মহান গণিতবিদেরা এটাকে করেছে আরও অনেক সমৃদ্ধ ও প্রাঞ্জল।
বিজ্ঞানীদের নাম ও আবিষ্কার, বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার
আবিষ্কার | আবিষ্কারক এর নাম | সাল | দেশ |
অণুবীক্ষণ যন্ত্র | জোহানেস জুপের | ১৫৯০ | জার্মান |
ইউরিয়া | ফ্রেডরিখ উহলার | ১৮২৮ | জার্মানি |
ইউরেনিয়াম | কেলারপ্লাস | ১৭৮৯ | জার্মানি |
উদ্ভিদের প্রাণের অস্তিত্ব | জগদীশচন্দ্র বসু | ১৯০০ | ভারত |
ইলেকট্রন | জে. জে. থমসন | ১৮৯৭ | ইংল্যান্ড |
এক্সরে | উইলহেম রন্টজেন | ১৮৯৫ | জার্মানি |
এন্টিসেপটিক চিকিত্সা | জোসেফ লিস্টার | ১৮৬৭ | ইংল্যান্ড |
এয়ার কন্ডিশনার | উইলিস ক্যারিয়ার | ১৯০২ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
এরোপ্লেন | অরভিল ও উইলবার রাইট | ১৯০৩ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ওজোন | চার্লস থোমাসন | ১৮৬৭ | ইংল্যান্ড |
কলেরা বেসিলাস | রবার্ট কচ | ১৮৮৩ | জার্মান |
কৃত্রিম জিন | হরগোবিন্দ খোরানা | ১৯৬১ | ভারত |
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌল | ইরেন কুরি | ১৯৩৪ | ফ্রান্স |
কোষ | রবার্ট হুক | ১৬৬৫ | ইংল্যান্ড |
কোষের নিউক্লিয়াস | রবার্ট ব্রাউন | ১৮৩১ | জার্মানি |
ক্যামেরা | জর্জ ইস্টম্যান | ১৮৮৮ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ক্রোমোজোম | স্টাসবুর্গার | ১৮৮৮ | জার্মানি |
ক্লোরিন | শীলে | ১৭৭৪ | ফ্রান্স |
ক্লোরোফরম | সিম্পসন ও হ্যারিসন | ১৮৩১ | যুক্তরাজ্য |
গতির সূত্র | আইজ্যাক নিউটন | ১৬৮৭ | ইংল্যান্ড |
গ্যালভানোমিটার | আন্দ্রে মেরি আম্পিয়ার | ১৮২১ | ফ্রান্স |
চলচ্চিত্র যন্ত্র | টমাস আলভা এডিসন | ১৮৯১ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা | লুই পাস্তুর | ১৮৮৫ | ফ্রান্স |
জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক | লুই পাস্তুর | ১৮৮৫ | ফ্রান্স |
টাচস্ক্রিন মোবাইল ফোন | স্টিভ জবস | ১৯৯৭ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
টেলিগ্রাফ | স্যামুয়েল মোর্স | ১৮৩৭ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
টেলিফোন | আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল | ১৮৭৬ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
টেলিভিশন | জন লজি বেয়ার্ড | ১৯২৬ | যুক্তরাজ্য |
টেলিস্কোপ | গ্যালিলিও গ্যালিলি | ১৬০৯ | ইতালি |
ডাবল হেলিক্স DNA | জেমস ডি. ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক | ১৯৫৩ | যুক্তরাজ্য |
ডায়নামো | মাইকেল ফ্যারাডে | ১৮৩১ | ইংল্যান্ড |
ডি ডি টি | ওটমার জিডলার | ১৯৩৯ | জার্মানি |
ডিজেল ইঞ্জিন | রুডলফ ডিজেল | ১৮৯২ | জার্মানি |
ডিনামাইট | আলফ্রেড নোবেল | ১৮৬৭ | সুই |
আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | ক্যালকুলাস
Q1. ক্যালকুলাসের জনক কে
Ans – Gottfried Leibniz কে ক্যালকুলাসের জনক বলা হয়।
Q2. ক্যালকুলাস কাকে বলে
Ans – কলনবিদ্যা বা ক্যালকুলাস হলো অবিচ্ছিন্ন পরিবর্তনের গাণিতিক অধ্যয়ন, ঠিক যেমন জ্যামিতি হলো আকৃতির এবং বীজগণিত হলো পাটিগণিতের ক্রিয়াকলাপ সমূহের সাধারণীকরণের অধ্যয়ন। ক্যালকুলাসের দুটি প্রধান শাখা রয়েছে যার একটি হলো অন্তরকলন এবং অপরটি হলো সমাকলন।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।