Site icon prosnouttor

পরিসংখ্যান কাকে বলে, পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ, পরিসংখ্যান সূত্র

পরিসংখ্যান কাকে বলে, পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ, পরিসংখ্যান সূত্র

পরিসংখ্যান কাকে বলে, পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ, পরিসংখ্যান সূত্র

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

পরিসংখ্যান কাকে বলে

প্রাথমিকভাবে পরিসংখ্যান বলতে বুঝায় কোন অনুসন্ধানের সংখ্যা ভিত্তিক তথ্য। অন্যভাবে বলা যায়, সংখ্যা ভিত্তিক উপাত্তের সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যা দানের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।

এ সত্বেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যানবিদ গবেষণা শ্রমলব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্নভাবে পরিসংখ্যানকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।

উপরিউক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা পরিসংখ্যান বিজ্ঞান হচ্ছে কোন সংখ্যাত্নক তথ্যাবলীর সংগ্রহ, সংঘবদ্ধকরণ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান করার বিজ্ঞান।

পরিসংখ্যান এর বৈশিষ্ট্য

পরিসংখ্যানের গুরুত্ব, পরিসংখ্যানের গুরুত্ব আলোচনা কর

জ্ঞান বিজ্ঞানের যে সব শাখায় সংখ্যা বিশ্লেষণ করে বা সংখ্যার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সে সব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম:

নীতি প্রণয়ন ও সুষ্ঠু সিদ্ধান্তে

নীতি প্রণয়ন সুষ্ঠ ও কার্যকরী হতে হলে আনুষঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট আকারে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা দরকার। পরিসংখ্যান কোন নির্দিষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান দান করে ও নীতি প্রণয়নে সাহায্যে করে।

মানব কল্যাণের ক্ষেত্রে

সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানব কল্যাণের সহিত সম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। পরিসংখ্যান প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে এবং সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে যে কোন সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়।

সমাজ সমীক্ষার ক্ষেত্রে

সমাজ সমীক্ষার ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। বহু জটিল ঘটনা সমাজ সমীক্ষার সাথে জড়িত থাকে এবং অসংখ্য প্রাসঙ্গিক অপ্রাসঙ্গিক অবস্থার কারণে সামাজিক ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়। এ সব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান অপরাধ, সামাজিক স্তরবিন্যাস প্রভৃতি সামাজিক ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক যাচাই করতে সাহায্য করে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে

বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগুলো হতে যে সব তথ্য পাওয়া যায় সেগুলোতে কিছু দৈব শান্তি থেকে যায়। পরিসংখ্যান পদ্ধতি এ ধরনের ভ্রাপ্তি কমানোর উপযুক্ত হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল বিভিন্ন কারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের পর্যালোচনা ও ফলাফলের পূর্বাভাস প্রদানে পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সরকারী প্রশাসনের ক্ষেত্রে

প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিচালনায় রাষ্ট্রের আয় ব্যয়, বাজেট ইত্যাদি প্রণয়নের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিসংখ্যান তথ্য সংগ্রহকে আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রয়োজনীয় দায়িত্ব বলে পরিগণিত হয়।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে

পরিসংখ্যানিক তথ্য ও পদ্ধতিগুলো অর্থনীতিবিদদের হাতে নীতি সিদ্ধতার পরিষ্কার হাতিয়ার।

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে

ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যবহার অপরিহার্য। বাণিজ্যিক চক্র যেমন মুদ্রাস্ফীতি জনিত পরিস্থিতির পূর্ণজ্ঞান লাভ করে সে ভাবে পরিসংখ্যানের ব্যবহার করে নিজেকে প্রস্তুত রাখা যায়। পরিসংখ্যান ব্যবসায়ে ভবিষ্যত কর্মপদ্ধতির মূল্যবান পথ প্রদর্শক।

বলতে গেলে পরিসংখ্যান মানব জীবণের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিসংখ্যান জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা মানুষের চলমান জীবনের হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে।

পরিসংখ্যানের ব্যবহার

পরিসংখ্যান বলতে শুধুমাত্র পরিসংখ্যানিক তথ্য সংগ্রহকে বুঝায় না, এ দ্বারা তথ্যাবলীর বিশ্লেষণের বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়। নিম্নে আমরা পরিসংখ্যানের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করব।

কৃষি পরিসংখ্যান

কৃষি ক্ষেত্রে কৃষি তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশনার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

পরিকল্পনা

সুস্থ অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য পরিসংখ্যান ব্যবহার করে বাস্তব পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব।

অর্থনীতি

পরিসংখ্যান অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও ফলিত অর্থশাস্ত্রের মধ্যে সেতুবন্ধন স্বরূপ। তাই অর্থনৈতিক তত্ত্ব বিকাশে পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়

ব্যবসা বাণিজ্য

নানারূপে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। এ সব ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য পরিসংখ্যানের ব্যবহার করা হয়।

শিল্প প্রতিষ্ঠান

আধুনিক বিশ্বে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান বিচারে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয়।

জীববিজ্ঞান

জন্ম ও বংশ বৃদ্ধি সম্পর্কিত এবং উদ্ভিদ প্রজ্ঞাপন বিজ্ঞানে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয়।

শিক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক

শিক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে নানা রূপে যথার্থতা যাচাইয়ের বৈধতা ও বিশ্বাস যোগ্যতা নির্ণয়ে পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়।

অন্যান্য রোগব্যাধি সম্পর্কিত নানা তথ্য

অন্যান্য রোগব্যাধি সম্পর্কিত নানা তথ্য বিশ্লেষণে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের বিভিন্ন বিশ্লেষাত্মক কার্যক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়। অন্যভাবে বলতে পারি, বর্তমানে প্রায় সকল বিষয়ে তথ্যাবলীর বিশ্লেষণে পরিসংখ্যানিক পদ্ধতির ব্যবহার অপরিহার্য।

পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ

পরিসংখ্যান উপাত্ত প্রধানত দুই প্রকার। যেমনঃ 

প্রাথমিক উপাত্ত বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত

যেকোনো উৎস থেকে সরাসরি ভাবে যে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় তাকে প্রাথমিক উপাত্ত বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত বলা হয়।

প্রাথমিক উপাত্তের সব সময় নির্ভরযোগ্যতা বেশি থাকে। তার কারণ হচ্ছে প্রাথমিক উপাত্ত উপর নির্ভর করে চূড়ান্ত পাওয়ার জন্য বিশ্লেষণ করে ফলাফল দেয়া হয়।

যেমনঃ কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে প্রাথমিক উপাত্ত।

মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত

যেকোনো উৎস হতে সরাসরিভাবে উপাত্ত সংগ্রহ না করে মাধ্যম ব্যবহার করে যে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় তাকে মাধ্যমিক উপাত্ত বা পরোক্ষ উপাত্ত বলা হয়। 

তবে মাধ্যমিক উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা থাকে না। কারণ মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করেন না।  মাধ্যমিক তথ্যের উপর নির্ভর করে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ণয় করা হয় তবে সেই ফলাফল প্রাথমিক উপাত্ত এতটা নির্ভরযোগ্যতা হয় না। 

যেমনঃ একের অধিক প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতন তালিকা তৈরি করা প্রয়োজন। কিন্তু সেই সকল একাধিক প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতন তালিকা তৈরি করার জন্য মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। নতুবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর এভাবে তথ্য সংগ্রহ করাকে মাধ্যমিক উপাত্ত বা পরোক্ষ উপাত্ত বলা হয়।

পরিসংখ্যানের শাখা

পরিসংখ্যানের জনক কে, পরিসংখ্যান এর জনক কে

পরিসংখ্যানের জনক হলেন রোনাল্ড আলমার ফিশার।

১৮৯০ সালে বিখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ রোনাল্ড ফিশার জন্ম নেন। তিনি আধুনিক পরিসংখ্যানের জনক বলে পরিচিত।

আরও পড়ুন :- মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, গুণিতক কাকে বলে, গুণনীয়ক কাকে বলে

পরিসংখ্যান এর সকল সূত্র

অবিন্যস্ত উপাত্তের ক্ষেত্রে : –

১. প্রথমে পরিসর বের করতে হবে

পরিসর = (সর্বোচ্চ সংখ্যা – সর্বনিম্ন সংখ্যা)+১

২. দ্বিতীয়ত, শ্রেণি সংখ্যা বের করতে হবে-

শ্রেণি সংখ্যা = পরিসর ÷ শ্রেণি ব্যবধান

শ্রেণী বিন্যাসকৃত উপাত্তের গড় নির্ণয়ের সূত্রঃ-

২। অবিন্যাস্ত উপাত্তের ক্ষেত্রেঃ প্রকৃত গড় = অনুমিত গড়+বিয়োগফল গুলোর গড়।

মধ্যকঃ প্রদত্ত উপাত্ত গুলোকে মানের ক্রমানুসারে (ঊর্ধ্বক্রমে নিম্নক্রমে) সাজালে যে মান উপাত্তগুলোকে সমান দুইভাগে করে তাকে উপাত্তগুলোর মধ্যক (Median) বলে।

পরিসংখ্যানে তথ্য ও উপাত্ত কাকে বলে

উপাত্ত বা ডাটা কি

নির্দিষ্ট কোন চলক বা একজাতীয় চলকের গুণগত এবং পরিমাণগত বৈশিষ্ট্য প্রকাশকারী তথ্যকেই বলা হয় উপাত্ত বা Data

সংজ্ঞা: পরিসংখ্যানে গণনা কিংবা পরিমাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যকেই বলা হয় data বা উপাত্ত। উপাত্তই হল পরিসংখ্যানের মূল উপজীব্য বিষয়। সংখ্যার সাহায্যে তথ্যের উপস্থাপন করাকে বলা হয় পরিসংখ্যান; আর পরিসংখ্যানে ব্যবহৃত সেই তথ্য নির্দেশক সংখ্যাগুলোই হল উপাত্ত বা ডাটা। 

যেমন – 

উপাত্তের প্রকারভেদ

তথ্য সংগ্রহের উৎসের ভিত্তিতে উপাত্ত ২ ধরণের হয়ে থাকে।

  1. প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত
  2. মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত 

প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত

উপাত্ত যদি উৎস থেকে সরাসরি সংগৃহীত হয়, তবে সেসব উপাত্তকে প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত বলা হয়। এধরণের উপাত্ত ব্যবহার করা হলে গবেষণা বা পরিসংখ্যানের প্রাপ্ত ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা বেশি থাকে।

যেমন – বার্ষিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত ফলাফল এর উপাত্ত 

মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত

সরাসরি উৎস থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে পরোক্ষ কোন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা থেকে সেসব সংগ্রহ করে কাজ করতে হয়, এধরণের উপাত্তকে মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত বলা হয়ে থাকে। পরিসংখ্যান বা গবেষণায় এধরণের তথ্য ব্যবহার করা হলে প্রাপ্ত ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

যেমন – বিশ্বের বিভিন্ন শহরের তাপমাত্রা বা বৃষ্টিপাত সংশ্লিষ্ট উপাত্ত

তথ্যের বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে পরিসংখ্যানে উপাত্ত ২ ধরণের হয়ে থাকে।

  1. বিন্যস্ত উপাত্ত
  2. অবিন্যস্ত উপাত্ত 

বিন্যস্ত উপাত্ত

সংগৃহীত উপাত্তকে কোন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিন্যাস করা হলে সেধরণের উপাত্তকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলা হয়ে থাকে। এই বিন্যাস মানের ভিত্তিতে উর্ধ্বক্রম বা অধক্রম, কিংবা অদ্যাক্ষর অনুসারে হতে পারে। বিন্যস্ত উপাদানের সাহায্যে কাজ করা সহজ হয়, ভুলের সম্ভাবনা কম থাকে।  

যেমন – ৫ জন শিক্ষার্থীদের ওজন যথাক্রমে, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৭, ৬১ কেজি।

অবিন্যস্ত উপাত্ত

সংগৃহীত উপাত্ত কোন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিন্যাস করা সম্ভব না করা হলে, অর্থাৎ এলোমেলো থাকলে সেসব উপাত্তকে  অবিন্যস্ত উপাত্ত বলা হয়ে থাকে।

যেমন – ৫ জন শিক্ষার্থীদের ওজন যথাক্রমে, ৫২, ৫৭, ৫৫, ৬১, ৪৯ কেজি।

কাজের সুবিদ্ধার্থে সাধারণত অবিন্যস্ত উপাত্তকে কোন না কোন বৈশিষ্টের উপর ভিত্তি করে বিন্যস্ত করে নেয়া হয়। 

উপাত্তের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে উপাত্তকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।

  1. গুণবাচক উপাত্ত
  2. পরিমাণবাচক উপাত্ত 

গুণবাচক উপাত্ত

কোন গবেষণা বা পর্যবেক্ষণে নির্দিষ্ট কোন বৈশিষ্ট্য বা গুণের উপস্থিতি, প্রকৃতি, অবস্থাকে পর্যবেক্ষণ করে উপাত্ত তৈরি করা হয়, সেসব উপাত্তকে বলা হয় গুণবাচক উপাত্ত।

যেমন – মানব দেহে ওষুধ, টীকা বা ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা।

পরিমাণবাচক উপাত্ত

পরিমাপযোগ্য তথ্যের সাহায্যে প্রাপ্ত পরিমাণ নির্দেশক উপাত্তকে বলা হয়, পরিমাণবাচক উপাত্ত।

যেমন –  জরিপ, মানুষের বয়স, আয়, নম্বর ইত্যাদি।

পরিসংখ্যান বহুভুজ কাকে বলে

ছক কাগজে বিভিন্ন চলরাশির মানসমূহকে অনুভূমিক X অক্ষে এবং চলরাশিসমূহের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিসংখ্যাকে উল্লম্ব Y অক্ষে যথােপযুক্ত স্কেলের সাহায্যে বিন্দুরূপে স্থাপন করার পর সেই বিন্দুগুলি সরলরেখার আকারে পরপর যােগ করলে যে বহুভুজ উৎপন্ন হয়, তাকে বলে পরিসংখ্যা বহুভুজ বা Freequency Polygon। এই বহুভূজের ক্ষেত্রফল দ্বারা মােট প্রাপ্ত তথ্যের পরিমাণ বােঝানাে হয়।

ফ্রিকোয়েন্সি পলিগনের বা পরিসংখ্যান বহুভুজ সুবিধা

(১) পরিসংখ্যা বিভাজন অনুধাবন: পরিসংখ্যা বিভাজনের কোথায় ও কীভাবে পরিসংখ্যাগুলি আছে তা ফ্রিকোয়েন্সি পলিগনের মাধ্যমে সহজে অনুধাবন করা যায়।

(২) তথ্য পরিবেশন: প্রাপ্ত তথ্যগুলি যখন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয় তখন ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে তথ্য পরিবেশন সুবিধাজনক।

(৩) পরিসংখ্যাসমূহের পারস্পরিক তুলনা: দুটি বা তার বেশি পরিসংখ্যান বন্টন এর পারস্পরিক তুলনা ফ্রিকোয়েন্সি পলিগন এর মাধ্যমে করা যায়।

(৪) সুস্পষ্ট ও অর্থপূর্ণ প্রকাশ: ফ্রিকোয়েন্সি পলিগন এর মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপন করলে পরিসংখ্যা বিভাজনের আকৃতি খুব সুস্পষ্ট ও অর্থপূর্ণভাবে প্রকাশ করা যায়।

(৫) পরীক্ষার্থীদের ফলাফল বিশ্লেষণ: পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর, ফলাফল ইত্যাদি পরিসংখ্যা বহুভুজ এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা সহজ হয়।

(৬) বণ্টন প্রকৃতি নির্ণয়: বণ্টনের হ্রাস বৃদ্ধি, গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করা সুবিধাজনক।

ফ্রিকোয়েন্সি পলিগণের বা পরিসংখ্যান বহুভুজ অসুবিধা

(১) বিস্তৃত বিবরণে অসুবিধা: ফ্রিকোয়েন্সি পলিগণের সাহায্যে রাশিতথ্যের বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া সম্ভব হয় না।

(২) সময়সাপেক্ষ অঙ্কন: পরিসংখ্যা বহুভুজ অঙ্কন যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ।

(৩) আকর্ষণহীন: পরিসংখ্যা বিভাজনের বণ্টন যদি বেশি বিক্ষিপ্ত হয় তাহলে এটি অঙ্কন করা অসুবিধাজনক হয়।

পরিসংখ্যানের সীমাবদ্ধতা

প্রতিটি বিষয়েরই যেমন কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে ঠিক তেমনি মানবজাতির প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিসংখ্যানের সার্থক প্রযোগ থাকলেও এর কিছু কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। নিম্নে পরিসংখ্যানের সীমাবদ্ধতা আলোচনা করা হলো

পরিসংখ্যান গুণবাচক তথ্য নিয়ে আলোচনা করে না

বিভিন্ন গুণবাচক তথ্য যেমনঃ সততা, বুদ্ধি, চিন্তাধারা ইত্যাদি উপাত্ত পরিসংখ্যান পদ্ধতি প্রয়োগের অনুপোযোগী। কিন্তু যদি তাকে জাকিং, স্কেলিং বা গ্রেডিং করে সংখ্যার বা ক্যাটাগরিতে পরিণত করা যায়, তবে সেগুলো পরিসংখ্যান পদ্ধতি প্রয়োগের উপযোগী হয়। যেমন: কোন ছাত্রের মেধা পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দিয়ে পরিমাপ করা যায়।

পরিসংখ্যান গড়ে সত্য এবং স্বতন্ত্র বিষয় নিয়ে আলোচনা করে না

পরিসংখ্যান সর্বদা সমষ্টি নিয়ে আলোচনা করে। এককের উপর কখনো পরিসংখ্যান পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ একজন লোকের মাসিক আয় পরিসংখ্যান নয় কিন্তু একদল লোকের মাথাপিছু গড় মাসিক আয় পরিসংখ্যান।

পরিসংখ্যানের ফলাফল পুরোপুরি সঠিক নয়

পরিসংখ্যান এক অর্থে সম্ভাব্যতার বা অনুমানের বিজ্ঞান। এটি কাছাকাছি মান অনুমান করে মাত্র যেমন পশ্চিমবঙ্গের লোকের গড় আয়ু ৭০ বছর বলতে এটি বুঝায় না যে সবাই ৭০ বছরে মারা যায়। তবে এটুকু বোঝায় যে ঐ লোক ৭০ বছরের জীবন প্রত্যাশা করতে পারে।

তথ্যসমূহ সমসত্ব না হলে এ পদ্ধতি অনুপোযোগী

সমসত্ব তথ্য পরিসংখ্যান পদ্ধতির তথ্য তুলনার জন্য উপযোগী নতুবা এটি প্রদান করতে পারে।

পরিসংখ্যান অপব্যবহৃত হতে পারে

পরিসংখ্যানের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো এর অপব্যবহার। পরিসংখ্যান পদ্ধতিগুলো অসম্পূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে কিংবা অদক্ষ পরিসংখ্যানবিদদের দ্বারা ব্যবহৃত হলে খুবই বিপদজনক হতে পারে।

পরিসংখ্যান সৃজনশীল প্রশ্ন

প্রশ্ন. পরিসংখ্যান কি?
উত্তর :
 পরিসংখ্যান হলো সংখ্যাভিত্তিক কোনো তথ্য বা ঘটনা।

প্রশ্ন. পরিসংখ্যানের উপাত্ত কী?
উত্তর :
 পরিসংখ্যানে বর্ণিত তথ্যসমূহ যেসকল সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ ও উপস্থাপন করা হয়, তা হলো পরিসংখ্যানের উপাত্ত।

প্রশ্ন. প্রচুরক কী?
উত্তর :
 উপাত্ত সমূহে যে মানটি সবচেয়ে বেশি বার থাকে তাই প্রচুরক।

প্রশ্ন. কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপগুলো কি কি?
উত্তর :
 কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপগুলো হলো গাণিতিক গড়, মধ্যক, প্রচুরক।

প্রশ্ন. মধ্যক কী?
উত্তর :
 উপাত্তের মানগুলো ঊর্ধ্বক্রম অনুসারে সাজানো হলে মধ্যম মানকে মধ্যক বলে।

প্রশ্ন. শ্রেণি মধ্যমান কি?

উত্তর : কোন শ্রেণীর ঊর্ধ্বমান ও নিম্নমানের গড় হলো শ্রেণি মধ্যমান।

প্রশ্ন. বিচ্ছিন্ন চলক কাকে বলে?
উত্তর :
 যে চলকের মান শুধুমাত্র পূর্ণ সংখ্যা হতে পারে তাকে বিচ্ছিন্ন চলক বলে।

প্রশ্ন. উদাহরণসহ কেন্দ্রিয় প্রবণতার সংজ্ঞা দাও।
উত্তর :
 কোনো পরিসংখ্যানে উপাত্তসমূহ মাঝামাঝি বা কেন্দ্রের মানের দিকে পুঞ্জিভূত হয়। মাঝামাঝি বা কেন্দ্রের মানের দিকে উপাত্তসমূহের পুঞ্জিভূত হওয়ার প্রবণতাকে কেন্দ্রিয় প্রবণতা বলে।
উদাহরণ : কোনো একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বয়সের গড় হলো কেন্দ্রিয় প্রবণতার উদাহরণ।

প্রশ্ন. অবিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে
উত্তর :
 উপাত্তগুলো মানের ক্রম অনুসারে সাজানো না থাকলে তাকে বলে অবিন্যস্ত উপাত্ত।

প্রশ্ন. গণসংখ্যা কি
উত্তর :
 কোনো শ্রেণীর ট্যালি হলো ঐ শ্রেণীর গণসংখ্যা।

প্রশ্ন. অবিচ্ছিন্ন চলক কাকে বলে
উত্তর :
 যে চলকের মান যে কোনো বাস্তব সংখ্যা হতে পারে তাকে অবিচ্ছিন্ন চলক বলে।

প্রশ্ন. কেন্দ্রীয় প্রবণতা কী
উত্তর :
 উপাত্ত সমূহের কেন্দ্রের দিকে পুঞ্জীভূত হওয়াকে কেন্দ্রীয় প্রবণতা বলে।

প্রশ্ন. বিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে
উত্তর :
 উপাত্তগুলো মানের ক্রম অনুসারে সাজানো থাকলে তাকে বলে বিন্যস্ত উপাত্ত।

প্রশ্ন. কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ কয়টি
উত্তর :
 কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ তিনটি।

প্রশ্ন. প্রাথমিক উপাত্ত ও মাধ্যমিক উপাত্ত কি
উত্তর :
 সরাসরি উৎস থেকে সংগৃহীত উপাত্ত হলো প্রাথমিক উপাত্ত ও পরোক্ষ উৎস থেকে সংগৃহীত উপাত্ত হলো মাধ্যমিক উপাত্ত। 

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | পরিসংখ্যান

Q1. পরিসংখ্যান কি

Ans – পরিসংখ্যান হলো তথ্য সংগ্রহ করা, সংগঠিত করা এবং বিশ্লেষণ করে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিজ্ঞান।

Q2. পরিসংখ্যানের ইংরেজি কি

Ans – পরিসংখ্যানের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Statistics

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে
Exit mobile version