Site icon prosnouttor

স্যাটেলাইট কি, স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে

স্যাটেলাইট কি, স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে

স্যাটেলাইট কি, স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

স্যাটেলাইট কি

সৌর জগতের প্রধান গ্রহ আটটি। তার মধ্যে বুধ আর শুক্র এর কোন উপগ্রহ নেই। পৃথিবীর ১টি, মঙ্গলের ২ টি, বৃহস্পতির ৭৯ টি, শনির ৮২ টি, ইউরেনাস এর ২৭টি, আর নেপচুনের ১৪ টি উপগ্রহ আছে। অর্থাৎ উপগ্রহ আমরা সবাই চিনি। তবে এই উপগ্রহ দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা-

আর এই কৃত্রিম উপগ্রহ-ই হল স্যাটেলাইট যা মানব সৃষ্ট। এ সকল স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ আমাদের পৃথিবী কে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘুরছে। চাঁদ ব্যতীত পৃথিবীর সকল উপগ্রহ-ই কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট। একটি স্যাটেলাইটের আমাদের পুরো পৃথিবী কে একবার প্রদক্ষিণ করতে 24 ঘন্টা সময় লাগে।

মূলত পৃথিবীপৃষ্ঠের উন্নত ম্যাপিং করার জন্য সর্বপ্রথম স্যাটেলাইটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাছাড়া তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ইমেজিং, ফটোগ্রাফি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বিভিন্ন দুর্গম এলাকার ম্যাপিং, দূরবর্তী টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ইন্টারনেট, টিভি চ্যানেল সম্প্রচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি‌ আমাদের ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।

স্যাটেলাইট এর সংজ্ঞা: নাসা বা ন্যাশনাল এইরোনোটিক্স এন্ড স্পেস এডমিনিস্ট্রেশনের মতে, একটি উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট হল এমন একধরণের মহাজাগতিক বস্তু বা কৃত্রিম বস্তু যা একটি গ্রহ বা নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে সর্বদাই প্রদক্ষিণ করে। 

এই সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, এই উপগ্রহ কোনো চাঁদ, গ্রহ এমনকি কোনো মেশিনও হতে পারে যা নির্দিষ্টভাবে কোনো নক্ষত্র বা গ্রহকে আবর্তন করবে।

তবে সাধারণত, “স্যাটেলাইট” শব্দটি এমন একটি মেশিনকে বোঝায় যা মানবজাতির দ্বারা সৃষ্টি করে তা মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে এবং যা পৃথিবী বা মহাকাশের অন্য কোনো বস্তুর চারপাশে ঘোরে। 

তাই স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ বলতে আমরা বুঝি, তথ্য সংগ্রহ বা যোগাযোগের জন্য পৃথিবী বা চাঁদ বা অন্য গ্রহের চারপাশে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করার জন্যে আমরা যেসব মেশিনগুলো মহাকাশে প্রেরণ করি তাইই হল এই স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ।

মানুষের দ্বারা প্রেরিত কৃত্রিম উপগ্রহ গুলো মূলত যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বেশির ভাগ সময়ই এই স্যাটেলাইট গুলো টিভির সিগন্যাল প্রেরণ এবং সারা বিশ্বে ফোন কলের সিগন্যাল প্রেরণের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

নাসার গণনা অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ২০-টারও বেশি উপগ্রহের একটি গ্রুপ গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।

স্যাটেলাইটের প্রকারভেদ

বিভিন্ন কাজের উপর এবং কক্ষপথের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট ডিজাইন করা হয়।কক্ষপথ এর ভিত্তি করে স্যাটেলাইট সিস্টেম কে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

নির্দিষ্ট কাজের উপর ভিত্তি করে স্যাটেলাইটকে আরো কয়েক ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা-

ওয়েদার স্যাটেলাইট

পৃথিবীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের কাজে সাধারণত এ ধরনের স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের স্যাটেলাইট পৃথিবীর আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন ছবি এবং তথ্য ধারণ করে। যেমন-

পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট

প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে এবং পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশের ছবি তুলতে এ ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।

মিলিটারী স্যাটেলাইট

রাডার ইমেজিং, ফটোগ্রাফি, নিউক্লিয়ার মনিটরিং এবং শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এ ধরনের সামরিক কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।

কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট

এইগুলো সাধারণত রেডিও টেলিকমুনিকেশন সিগন্যাল ট্রান্সপন্ডারের সাহায্যে পৃথিবীর এককোণ থেকে অন্যকোণে রীলে করে।

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত এবং সহজবোধ্য করতে কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের সিগন্যাল, তথ্য এবং ব্রডকাস্টিং সমূহ এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এসকল তথ্য আদান-প্রদান হয় বলে একে স্পেস কম্যুনিকেশনও বলা হয়। এই স্যাটেলাইট সিস্টেমে মূলত উচ্চ কম্পাংকের তরঙ্গকে স্যাটেলাইটে প্রেরণ করা হয় এবং স্যাটেলাইটে সকল তরঙ্গকে বিবর্ধিত করে পৃথিবীতে স্থাপিত গ্রাহক স্টেশনে পাঠায়।

রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট

রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট বা এয়ারক্রাফ্ট-ভিত্তিক সেন্সর প্রযুক্তি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের সাহায্যে কোনোরকম শারীরিক স্পর্শ ছাড়াই পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ, বায়ুমণ্ডল এবং মহাসাগরের বিভিন্ন অংশের রাডার ইমেজ তুলতে সক্ষম।

এই স্যাটেলাইট গুলো ভূগোলবিদ্যা, জলবিদ্যা, বাস্তুবিদ্যা, আবহাওয়া, সমুদ্রবিদ্যা, হিমবিদ্যা, ভূতত্ত্ব এমনকি সেনাবাহিনীর নানা কাজে লাগে।

গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম

জিপিএস স্যাটেলাইট প্রধানত হল একটি ন্যাভিগেশন সিস্টেম স্যাটেলাইট, যা রিসিভারের মাধ্যমে ও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম ব্যবহার করে আকাশ, সমুদ্র এবং স্থলে থাকা মানুষ, জীব কিংবা জড় পদার্থের সঠিক অবস্থান, বেগ এবং সময় সম্পর্কে তুলনামূলক সঠিক তথ্য দিতে পারে।

এ ধরনের স্যাটেলাইট বিমান ও সমুদ্রগামী জাহাজের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। GPSNAVSTAR স্যাটেলাইট হলো এ ধরনের স্যাটেলাইটের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাছাড়া আমরা জিপিএস সিস্টেম এর কথা শুনেছি। জিপিএস হলো এ ধরনের স্যাটেলাইটভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম। 24 টি স্যাটেলাইট নিয়ে একটি জিপিএস সিস্টেম গঠিত হয়। জিপিএস সিস্টেম এর মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে যেকোনো আবহাওয়ায় পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে তথ্য ও ছবি পাঠানো সম্ভব।

সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীরা সকলেই জিপিএস ব্যবহার করে থাকে।

বিভিন্ন স্মার্টওয়াচ কিংবা স্মার্টফোনে আমরা জিপিএস রিসিভার বা বাটন দেখে থাকি।

ড্রোন স্যাটেলাইট

এটি একধরণের রোবট দ্বারা চালিত চালকবিহীন বিমান বা মহাকাশযান।

এই ধরণের স্যাটেলাইটের মুখ্য সুবিধা হল যে এইগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য।

গ্রাউন্ড স্যাটেলাইট

এই ধরণের স্যাটেলাইট গুলো পৃথিবীর বুকেই থাকে এবং সিগন্যাল রিসিভার ও প্রেরক হিসেবে কাজ করে।

তাই স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন গুলো রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট থেকে আসা তথ্য গুলোকে সংগ্রহ ও স্ট্রিম করার জন্যে এই গ্রাউন্ড স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারী এবং অ্যাপ্লিকেশনে পাঠিয়ে থাকে। 

একটা স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনে বাধ্যতামূলকভাবে একটা রিসিভিং অ্যান্টেনা, একটি ফিড হর্ন, ওয়েভগাইড এবং রিসিভার থাকে।

আমরা বিভিন্ন রেডিও অফিস কিংবা টিভির অফিসের বাইরে এই ধরণের গ্রাউন্ড স্যাটেলাইট দেখে থাকি।

পোলার স্যাটেলাইট

এই ধরণের স্যাটেলাইট পৃথিবীর মেরু অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্যে পাঠানো হয়।

এগুলো মেরু অঞ্চল বরাবরই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে এবং পৃথিবীর চুম্বকীয় মন্ডল ও মেরুর আলু বা নর্থার্ন লাইটস-এর উপর নজর রাখে।

ন্যানো, স্মল ও স্মার্ট স্যাটেলাইট

ওজনের ভিত্তিতে নানা আকারের ছোট ও বড় স্যাটেলাইট হয়ে থাকে।

স্যাটেলাইট গুলো ১কেজির কম ওজনের থেকে শুরু করে ১০০০ কেজির উপর ওজনের হতে পারে। 

পৃথিবী থেকে দূরত্বের ভিত্তিতে স্যাটেলাইট বেশ অনেক রকমের হতে পারে। 

জিওসেন্ট্রিক অরবিট টাইপ বা জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট

যেসব স্যাটেলাইট পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির সাথে সমতা বজায় রেখে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, সেগুলোই হল জিওসেন্ট্রিক অরবিট টাইপ বা জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট। 

ভূ-স্থির উপগ্রহগুলোই হল মূলত জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইট। এ ধরনের স্যাটেলাইটসমূহ 24 ঘন্টায় পৃথিবী কে একবার ঘুরে আসে আর যেহেতু পৃথিবী তার নিজ অক্ষের চারদিকে ঘুরে আসতে 24 ঘন্টা সময় লাগে, তাই এদেরকে ভূ-স্থির উপগ্রহ বলা হয়। এ স্যাটেলাইটসমূহ 35,786 কি.মি উচ্চতা থেকে পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করে।

পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব অনুযায়ী এই স্যাটেলাইটগুলো আবার তিন ধরণের হয়ে থাকে। 

স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে

১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথমবারের মত সফলভাবে স্পুটনিক ১ স্যাটেলাইট মহাকাশে স্থাপন করেছিলো।

এরপর বিশ্বের অনেক দেশই মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণ করেছে। মহাকাশে বর্তমানে কয়েক হাজার স্যাটেলাইট বা কৃত্তিম উপগ্রহ রয়েছে।

স্যাটেলাইট মূলত তথ্য সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণের কাজ করে থাকে। কাজের ধরন অনুযায়ী এক এক স্যাটেলাইটে এক এক ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়।

তবে প্রত্যেক স্যাটেলাইটে দুটি কমন যন্ত্রাংশ হলো অ্যান্টেনা এবং পাওয়ার সোর্স।

এছাড়াও কাজের ধরন অনুযায়ী স্যাটেলাইট গুলোতে কমান্ড এন্ড ডাটা হ্যান্ডেলিং, গাইডেন্স এন্ড স্টাবিলাইজেশন, থার্মাল কন্ট্রোল, হাউজিং ও ট্রান্সপন্ডারের মত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়।

কিছু কিছু আবার ক্যামেরা ও সাইন্টিফিক সেন্সরও ব্যবহার করা হয়।

পৃথিবী থেকে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে স্যাটেলাইট গুলোতে তথ্য পাঠানো হয়। যেগুলো অ্যান্টেনার সাহায্যে গ্রহন করে স্যাটেলাইট গুলো এমপ্লিফাই করে আবার পৃথিবীতে প্রেরন করে।

তবে স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবীতে পাঠানো সিগন্যাল অনেক দূর্বল হয়ে থাকে। যার কারনে এগুলোকে ডিস অ্যান্টেনার সাহায্যে কেন্দ্রীভূত করে রিসিভার দিয়ে গ্রহন করে প্রয়োজনীয় কাজে লাগানো হয়।

রকেটের সাহায্যে স্যাটেলাইট গুলোকে নিদিষ্ট স্থানে স্থাপন করা হয়। সেখান থেকে এগুলো পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহ, নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো স্যাটেলাইট গুলো পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ছিটকে না গিয়ে কেনো প্রদক্ষিণ করতে থাকে?

সাধারণত যখন পৃথিবীর টান ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ভারসাম্য তৈরি হয় তখনই কোনো স্যাটেলাইট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে পারে।

তারমানে যখন গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স ও সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বিপরীতভাবে একটি স্যাটেলাইটের উপর কাজ করে তখন সেটি নিদিষ্ট কক্ষপথে চলে।

অন্যথায় স্যাটেলাইটটি মহাশূন্যে সরল রেখায় চলবে নয়তো পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে।

কাজের ধরন অনুযায়ী স্যাটেলাইট গুলোকে তিনটি কক্ষপথ বা অরবিটে ভাগ করা হয়। 

এগুলো হলো লোয়ার আর্থ অরবিট, মিডিয়াম আর্থ অরবিট এবং জিওসিনক্রোনাস অরবিট।

স্যাটেলাইটের কক্ষপথকে ভাগ করার অন্যতম কারন হলো আমাদের পৃথিবীকে ঘিরে থাকা ভ্যান অ্যালেন বেল্ট।

এটি একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড যা সূর্য থেকে আগত বিভিন্ন রশ্মিকে পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয়। এই ম্যাগনেটিক ফিল্ডে প্রচুর পরিমানে রেডিয়েশন থাকে।

যেগুলো স্যাটেলাইটের সেন্সরকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। এর থেকে বাঁচতে স্যাটেলাইট আলাদা আলাদা অরবিটে স্থাপন করা হয়।

কোনো স্যাটেলাইটকে যখন পৃথিবীর জলবায়ু সম্বন্ধীয় কোন তথ্য বা জিওগ্রাফিক্যাল তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয় তখন সেটাকে লোয়ার আর্থ অরবিটে স্থাপন করা হয়।

যা পৃথিবী থেকে ১৬০ কিলোমিটার থেকে ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। এখানে স্থাপন করা স্যাটেলাইট মাত্র দেড় ঘন্টার মত সময়ে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে ফেলতে পারে।

তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হলো এতে পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গা কাভার করতে পারে না।

আর এই সমস্যা দূর করতে স্থাপন করা হয় জিও সিনক্রোনাস অরবিটে। যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে।

পৃথিবীকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার স্যাটেলাইট প্রদক্ষিণ করছে। কিন্তু এদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়না।

এর কারন উৎক্ষেপনের সময়ই সেগুলো যাতে একটি আরেকটিকে এড়িয়ে চলতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হয়।

এছাড়াও নাসা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো প্রতিনিয়তই স্যাটেলাইট গুলোর উপর নজর রাখে যাতে সেগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ না হয়।

স্যাটেলাইটের কাজ কি

পৃথিবীতে মূলত তিনটি কাজের ক্ষেত্রে মানুষকে স্যাটেলাইটের ব্যবহারের উপর নির্ভর করতে হয়, সেগুলো হল –

আবহাওয়া

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট গুলো ক্রমাগত পৃথিবীর আবহাওয়ার সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে থাকে এবং সারা বিশ্বের অসংখ্য তথ্য আমাদের কাছে ২৪ঘন্টা অবিরামভাবে রিপোর্ট করে।

এই তথ্য গুলোর মধ্যে থাকে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বাতাসের গতি এবং মেঘের ধরণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

আবহাওয়াবিদরা এই তথ্য ব্যবহার করে তাদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন। 

বিশেষ করে উন্নতমানের স্যাটেলাইট ব্যবহার করে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটার অনেক আগে থেকেই মানুষজনকে সাবধান করে দেওয়া যাচ্ছে।

এর থেকে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই পৃথিবীর এক স্থান থেকে থেকে অন্য স্থানে তথ্য রিলে করা সম্ভব হচ্ছে।

এই স্যাটেলাইট গুলি সাধারণত জিওসিঙ্ক্রোনাস হয়। 

অর্থাৎ, এই কৃত্রিম উপগ্রহ গুলো তাদের কক্ষপথে এমনভাবে ঘোরে যে তারা সর্বদা পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলে এবং পৃথিবীর উপর বরাবর একই স্থানে অবস্থান করে। 

এই উপগ্রহগুলো টেলিফোন সংকেত, মোবাইল যোগাযোগ, এবং জাহাজ থেকে উপকূল রেডিও পরিচালনা করে।

এছাড়াও, যোগাযোগ স্যাটেলাইটগুলো টেলিভিশন এবং রেডিও সংকেত সম্প্রচার পয়েন্ট থেকে সারা দেশের স্টেশনগুলিতে রিলে করে।

অনুসন্ধান

স্যাটেলাইটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহের অন্বেষণ করা।

এছাড়া, মানচিত্র তৈরি করতেও এই উপগ্রহের উপর বিজ্ঞানীরা অনেকটাই নির্ভর করে থাকেন। 

অনেক স্যাটেলাইটে উন্নতমানের ক্যামেরা থাকে যা গ্রহের পৃষ্ঠের স্থির ও ভিডিও ছবি পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের পাঠাতে সক্ষম।

ইনফ্রারেড ইমেজ, একদম সঠিকভাবে পৃথিবীর তাপ এবং ঠান্ডার জায়গা খুঁজে দিতে সক্ষমও বটে। 

তাছাড়াও, বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে পোলার আইস ক্যাপগুলির মতো দুর্গম জায়গায়গুলো শারীরিকভাবে না পৌঁছতে পারলেও, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সেই অঞ্চলগুলো ট্র্যাক করতে পারছেন।

এখনকার অন্বেষণকারী স্যাটেলাইট গুলো তারামন্ডলী ও নক্ষত্রের স্পষ্ট ছবি পাঠাতে সক্ষম যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দ্বারা প্রভাবিত বা নষ্ট হয়ে যায় না।

কৃত্রিম উপগ্রহের অন্যান বেশ কতগুলো কাজ রয়েছে, সেগুলো হল –

স্যাটেলাইটের সুবিধা কি কি

স্যাটেলাইট কম্যুনিকেশনের বেশ কিছু সুবিধা আছে –

বিভিন্ন দেশের মোট স্যাটেলাইটের সংখ্যা

1957 সালে সর্বপ্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশে স্যাটেলাইটপ্রেরণ করার পর তাদের অনুসরণ করে বিভিন্ন দেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়।

বিশ্বের 57 তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়। বর্তমানে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার স্যাটেলাইট ঘুরছে।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও এর গতিবিধি নিয়ে কাজ করে এন২ওয়াইও.কম ওয়েবসাইটের তথ্য মতে,

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | স্যাটেলাইট

Q1. বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটের নাম কি

Ans – বাংলাদেশের স্যাটেলাইটটির নাম বঙ্গবন্ধু-১

Q2. স্যাটেলাইটের কাজ কি

Ans – এখন মনে করুন আপনি বন্যাকবলিত কোন এলাকায় রয়েছেন যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র টাওয়ারের উপর নির্ভরশীল হলে যোগাযোগ করতে পারবেন না।

অথবা মনে করুন আপনি বিশাল সমুদ্রের মধ্যে আছেন বা অ্যামাজন বন কিংবা সাহারা মরুভূমির মতো কোন নির্জন স্থানে আছেন। অর্থাৎ এই সকল জায়গা থেকে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে যাবে কিন্তু আপনার কাছে যদি একটি স্যাটেলাইট ফোন থাকে তবে আপনি অতি সহজেই আপনার কাঙ্খিত যে কোন জায়গার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।

Q3. স্যাটেলাইট কে আবিষ্কার করেন

Ans – প্রথম স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ, যার নাম স্পুটনিক 1 , সোভিয়েত ইউনিয়ন 4 অক্টোবর, 1957 সালে চালু করেছিল । এটি সের্গেই কোরোলেভের নেতৃত্বে সোভিয়েত বিজ্ঞানীদের একটি দল দ্বারা ডিজাইন এবং নির্মিত হয়েছিল, যাকে সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচির জনক বলে মনে করা হয়।

স্যাটেলাইট আবিষ্কার করেন Sergei Korolev

Q4. স্যাটেলাইট যুক্ত ক্রোমোজোম কে কি বলে

Ans – স্যাটেলাইট যুক্ত ক্রোমোজোমকে স্যাট -ক্রোমোজোম বলে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে
Exit mobile version