Site icon prosnouttor

চতুর্ভুজ কাকে বলে

চতুর্ভুজ কাকে বলে

চতুর্ভুজ কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

চতুর্ভুজ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, চতুর্ভুজ কয় প্রকার ও কি কি

চতুর্ভুজ হল এমন একটি সমতল চিত্র যার চারটি বাহু বা প্রান্ত রয়েছে । এছাড়াও চারটি কোণ বা শীর্ষবিন্দু রয়েছে। অর্থাৎ চারটি রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে চতুর্ভুজ বলে। 

চতুর্ভুজ কত প্রকার ও কি কি?

ছেদ বা ছেদকের ভিত্তিতে চতুর্ভুজকে সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা যায়ঃ

সরল চতুর্ভুজ কাকে বলে | Simple Quadrilateral

যে চতুর্ভুজের একটি বাহু অন্য বাহুর ছেদক হয় না বা অন্য বাহুকে শীর্ষ ব্যতীত অন্য কোন বিন্দুতে ছেদ করে না তাকে সরল চতুর্ভুজ বলে।

যে চতুর্ভুজের একটি বাহু অন্য বাহুর শীর্ষ ছাড়া আর কোন বিন্দুতে ছেদ করে না তাই সরল চতুর্ভুজ। সরল চতুর্ভুজের কোণগুলোর মান ৬০ ডিগ্রি।

সরল চতুর্ভুজ কত প্রকার ও কি কি | Types of Simple Quadrilateral

সরল চতুর্ভুজকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়ঃ

উত্তল চতুর্ভুজ কাকে বলে

যে চতুর্ভুজের প্রত্যেকটি অন্তঃস্থ কোণের পরিমাপ ১৮০° অপেক্ষা ছোট এবং উভয় কর্ণই চতুর্ভুজের অভ্যন্তরে অবস্থিত তাকে উত্তল চতুর্ভুজ বলে।

আরো পড়তেকোণ কাকে বলে

উত্তল চতুর্ভুজের বৈশিষ্ট্য

উত্তল চতুর্ভুজের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

অবতল চতুর্ভুজ কাকে বলে

যে চতুর্ভুজের একটি অন্তঃস্থ কোণের পরিমাপ ১৮০° হতে বড় ও ৩৬০° হতে ছোট (১৮০° < θ < ৩৬০°) এবং কর্ণ দুইটির একটি কর্ণ চতুর্ভুজের বাইরে অবস্থিত তাকে অবতল চতুর্ভুজ বলে।

জটিল চতুর্ভুজ | Complex Quadrilateral

যে চতুর্ভুজের একটি বাহু অন্য বাহুর ছেদক হয় অথবা একটি বাহু অন্য বাহুকে শীর্ষ ব্যতীত অন্য কোন বিন্দুতে ছেদ করে তাকে জটিল চতুর্ভুজ বলে।

জটিল চতুর্ভুজ অনেকক্ষেত্রে ক্রস চতুর্ভুজ (cross quadrilateral) বলে সুপরিচিত।

চতুর্ভুজ এর বৈশিষ্ট্য

সমতল জ্যামিতিতে বেশ কয়েক ধরণের চতুর্ভুজ বিদ্যমান।

আবার এই সব চতুর্ভুজগুলোর মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য সাধারণ (common) এবং কতকগুলো বৈশিষ্ট্য অনন্য (unique)।

চতুর্ভুজের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে

চতুর্ভুজের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে

চতুর্ভুজ এর প্রকারভেদ

চতুর্ভুজ মোট ৬ প্রকার। যথা –

  1. আয়তক্ষেত্র।
  2. বর্গক্ষেত্র।
  3. রম্বস।
  4. সামান্তরিক।
  5. ট্রাপিজিয়াম।
  6. ঘুঁড়ি।

আয়তক্ষেত্র

যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুদ্বয় সমান ও সমান্তরাল এবং চারটি কোন ই সমকোন তাকে আয়তক্ষেত্র বলে।

আয়তক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং সূত্রাবলী

  1. বিপরীত বাহুদ্বয় সমান।
  2. বিপরীত বাহুদ্বয় সমান্তরাল।
  3. প্রত্যেকটি কোণ সমকোণ।
  4. কর্ণদ্বয় সমান।
  5. কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমদিখন্ডিত করে।
  6. আয়তক্ষেত্রের একটি কর্ণ দুটি সমকোণী ত্রিভুজ উৎপন্ন করে।
  7. আয়তক্ষেত্রের পরিসীমা = ২ ( দৈর্ঘ্য + প্রস্থ ) একক।
  8. আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = ( দৈর্ঘ্য × প্রস্থ ) বর্গ একক।

সামান্তরিক

যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুদ্বয় সমান ও সমান্তরাল এবং কোনগুলো সমকোন নয় তাকে সামান্তরিক বলে।

সামান্তরিকের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং সূত্রাবলী

  1. বিপরীত বাহুদ্বয় সমান।
  2. বিপরীত বাহুদ্বয় সমান্তরাল।
  3. বিপরীত কোণদ্বয় সমান।
  4. কর্ণদ্বয় অসমান।
  5. কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমানভাবে সমদ্বিখন্ডিত করে।
  6. সামান্তরিকের ক্ষেত্রফল = ( ভূমি × উচ্চতা ) বর্গ একক।
  7. সামান্তরিকের ক্ষেত্রফল = ( একটি কর্ণের দৈর্ঘ্য × ঐ কর্ণের বিপরীত কৌণিক বিন্দু থেকে উক্ত কর্ণের উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য ) বর্গ একক।
  8. সামান্তরিকের পরিসীমা = ২ ( দৈর্ঘ্য + প্রস্থ ) একক।

আরো পড়তেকোণ কাকে বলে

বর্গক্ষেত্র

যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই সমান এবং প্রত্যেকটি কোন সমকোন ( ৯০° ) তাকে বর্গ ক্ষেত্র বলে।

বর্গক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং সূত্রাবলী

  1. প্রত্যেকটি বাহু সমান।
  2. প্রত্যেকটি কোণ সমকোণ।
  3. কর্ণদ্বয় সমান।
  4. কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমদিখন্ডিত করে।
  5. বর্গের একটি কর্ণ দুইটি সমকোণী সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ উৎপন্ন করে।
  6. বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = ( এক বাহুর দৈর্ঘ্য ) বর্গ একক।
  7. বর্গের পরিসীমা = ( ৪ × এক বাহুর দৈর্ঘ্য ) একক।

রম্বস

যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান‌ কিন্তু কোন চারটি একটি ও সমকোন নয় এই রূপ চতুর্ভুজকে রম্বস বলে।

রম্বসের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং সূত্রাবলী

  1. রম্বসের ক্ষেত্রফল = ১/২ × (কর্ণদ্বয়ের গুণফল ) বর্গ একক।
  2. প্রত্যেকটি বাহু সমান।
  3. বিপরীত কোণদ্বয় সমান।
  4. কর্ণদ্বয় অসমান।
  5. কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমানভাবে সমদ্বিখন্ডিত করে।
  6. রম্বসের পরিসীমা = ( ৪ × এক বাহুর দৈর্ঘ্য ) একক।

ট্রাপিজিয়াম

যে চতুর্ভুজের দুটি বিপরীত বাহু সমান্তরাল ও অসমান এবং অপর বাহুদ্বয় সমান্তরাল নয় এরূপ চর্তুভুজকে ট্রাপিজিয়াম।

ট্রাপিজিয়ামের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং সূত্রাবলী

  1. এক জোড়া বিপরীত বাহু সমান্তরাল।
  2. ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = ১/২ × ( সমান্তরাল বাহুদ্বয়ের যোগফল ) × সমান্তরাল বাহুদ্বয়ের দূরত্ব।

চতুর্ভুজের ক্ষেত্রফলের সূত্র

চতুর্ভুজটি যদি বর্গ, আয়তক্ষেত্র, রম্বস, সামান্তরিক বা ট্রাপিজিয়াম হয় তাহলে তার ক্ষেত্রফল সূত্রের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। কিন্তু একেবারেই অনিয়মিত হলে তার ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য সমাকলন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়।

নিয়মিত চতুর্ভুজগুলোর ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রগুলো নিম্নরূপ

বর্গের ক্ষেত্রফল = বাহুর দৈর্ঘ্য × বাহুর দৈর্ঘ্য

আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য × প্রস্থ

রম্বসের ক্ষেত্রফল = একটি কর্ণের দৈর্ঘ্য × অপর কর্ণের দৈর্ঘ্য

সামান্তরিকের ক্ষেত্রফল = ভূমি × উচ্চতা = যেকোনো একটি কর্ণের দৈর্ঘ্য × অপর যেকোনো কৌণিক বিন্দু থেকে ওই কর্ণের লম্ব দূরত্ব

ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = ১/২ (সমান্তরাল বাহু দুটির যোগফল × সমান্তরাল বাহু দুটির মধ্যবর্তী দূরত্ব)

কিভাবে চতুর্ভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের এসব সূত্র প্রয়োগ করা যায়, তার একটি উদাহরণ দেখা যাক।

সমস্যা

40 মিটার দৈর্ঘ্য এবং 30 মিটার প্রস্থবিশিষ্ট একটি আয়তাকার বাগানের ভেতরের চারদিকে সমান চওড়া একটি রাস্তা আছে।

রাস্তা বাদে বাগানের ক্ষেত্রফল ৯36 বর্গমিটার হলে, রাস্তাটি কত মিটার চওড়া?

সমাধান : ধরে নেওয়া যাক, রাস্তাটি x মিটার চওড়া।

সুতরাং রাস্তা বাদে বাগানটির দৈর্ঘ্য = (40-2x) মিটার

এবং প্রস্থ = (30-2x) মিটার

অর্থাৎ রাস্তা বাদে বাগানটির ক্ষেত্রফল = (40-2x) × (30-2x) বর্গমিটার

প্রশ্নমতে, (40-2x) (30-2x) = 936

বা, 1200 – 80x – 60x + 4×2 = 936

বা, 4×2 – 140x + 1200 – 936 = 0

বা, 4×2 – 140x + 264 = 0

বা, x2-35x + 66 = 0 [4 দিয়ে ভাগ করে]

বা, x2 – 2x – 33x + 66 = 0

বা, x(x – 2) – 33(x – 2) = 0

বা, (x – 2) (x – 33) = 0

তাহলে, x-2 = 0, অথবা x-33 = 0

x-2 =  0 হলে, x = 2

x-33 =  0 হলে, x = 33

কিন্তু রাস্তাটি বাগানটির প্রস্থ 30 মিটার অপেক্ষা চওড়া হতে পারে না।

অর্থাৎ x = 2

সুতরাং রাস্তাটি 2 মিটার চওড়া।

কুব্জ চতুর্ভুজ কি

যে চতুর্ভুজের বা বহুভুজ এর সব কর্ণ গুলি সেই বহুভুজ আকৃতির ক্ষেত্রের ভেতর থাকে তাকে কুব্জ চতুর্ভুজ বা কুব্জ বহুভুজ বলে।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | চতুর্ভুজ

Q1. চতুর্ভুজের চার কোণের সমষ্টি কত

Ans – চতুর্ভুজের চারটি বাহু আছে। চতুর্ভুজের চারটি কোণ আছে। চারটি কোণ এর সমষ্টি ৩৬০ ডিগ্রি।

Q2. চতুর্ভুজের শীর্ষবিন্দু কয়টি

Ans- চতুর্ভুজের শীর্ষবিন্দু চারটি।

Q3. বৃত্তস্থ চতুর্ভুজের বিপরীত কোণদ্বয়ের সমষ্টি কত

Ans – বৃত্তস্থ চতুর্ভুজের বিপরীত কোণ দুইটির যোগফল ১৮০ ডিগ্রি ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে
Exit mobile version