Site icon prosnouttor

তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে, তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে, তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে, তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে

তড়িৎ ঋণাত্মকতা শব্দটির ইংরেজি টার্ম হচ্ছে “Electro negativity”।এই ” Electronegativity ” কে কিছুটা এভাবে ডেফাইন করা য়ায় – “Relative tendency of attracting shared electron pair toward itself by a non-metal in covalent bond”।

তড়িৎ ঋণাত্মকতা সংজ্ঞা: কোনো অণুতে উপস্থিত দুটি পরমাণুর মধ্যে শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যুগলকে একটি পরমাণুর নিজের দিকে আকর্ষণ করার ক্ষমতাকে তার তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে

পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা, কেন্দ্র থেকে যোজন ইলেকট্রনের দুরত্ব ইত্যাদীর উপর নির্ভর করে। তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান যত বেশি হয় কোন রাসায়নিক সত্ত্বার (পরমাণু, অণু বা মূলক) নিজের দিকে ইলেকট্রন ঘনত্বকে টেনে নেয়ার ক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পায়।

উল্লেখ্য, ফ্লোরিন সবচেয়ে বেশি তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল।

উদাহরণঃ H-Cl অণুতে একটি ইলেকট্রন যুগল উভয় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের চারদিকে পরিভ্রমণ করে। একে শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যুগল বলে। কিন্তু গড়ে এ ইলেকট্রন হাইড্রোজেন পরমাণু অপেক্ষা ক্লোরিন পরমাণুর নিকটে অধিক আকৃষ্ট হয়। এর কারণ হচ্ছে, ক্লোরিন হাইড্রোজেন অপেক্ষা শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যুগলকে অধিকতর আকর্ষণ করে।

সমযোজী বন্ধনের ক্ষেত্রে বন্ধনে অংশগ্রহণকারী পরমাণুদ্বয় সমান সংখ্যক ইলেকট্রন শেয়ার করে বন্ধন গঠন করে । বন্ধন গঠন করে বন্ধনে থাকা ইলেকট্রনকে সমানভাবে ভোগ করে । একই পরমাণুর মধ্যে এই বন্ধন হলে সেক্ষেত্রে বন্ধনরত ইলেকট্রনকে উভয় পরমাণু সমান ভাবে আকর্ষন করে । কিন্তু যখন এই বন্ধ ভিন্ন পরমাণুর মধ্যে ঘটে, তখন বন্ধনরত ইলেকট্রনকে কোন একটি পরমাণু বেশি আকর্ষন করে । সমযোজী বন্ধনে শেয়ারকৃত ইলেকট্রনকে এই আকর্ষন করার ক্ষমতাকে বলা হয় তড়িৎ ঋণাত্মকতা ।

অর্থাৎ- সমযোজী বন্ধনে শেয়ারকৃত ইলেকট্রনকে আকর্ষন করার ক্ষমতাকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলা হয় ।

পোলার যৌগ যেহুতু দুটি ভিন্ন পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে হয় তাই শেয়ারকৃত ইলেকট্রনকে উভয় পরমাণু নিজেরা নিজেরা তাদের কেন্দ্রের দিকে আলাদা করে আকষর্ণ করে। এই আকর্ষণ ক্ষমতা যেই পরমানুর যত বেশী তাকে তত বেশী “electronegative” বলা হয়। শেয়ারকৃত ইলেকট্রনকে নিজের দিক এই আকর্ষণ করার ক্ষমতাকেই আসলে “তড়িৎ ঋণাত্মকতা” বলা হয়।

শেয়ারকৃত ইলেকট্রনের প্রতি এরূপ আকষর্ণ অর্থাৎ “electro negativity” থাকার কারনেই পোলার যৌগে দুই পরমানুর দিক আংশিক ধনাত্মক (ডেলটা +) ও আংশিক ঋণাত্মক চার্জ ( ডেলটা -) সৃষ্টি হয়।

তড়িৎ ঋণাত্মকতার পর্যায়বৃত্ততা

তড়িৎ ঋণাত্মকতা নির্ভর করে, কোন মৌল নিষ্ক্রিয় গ্যাস মৌলের কত কাছে অবস্থান করে ইলেকট্রনকে আকর্ষন করতে পারে তার উপর । যেসব মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে অধিক সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে কিন্তু পূর্ণ থাকেনা । ২-১টি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারলেই অরবিটাল পূর্ণ হবে, তারা ইলেকট্রনকে অধিক পরিমাণে নিজের দিকে টানে । যেমন সোডিয়ামের সর্বশেষ শক্তিস্তরে একটি মাত্র ইলেকট্রন থাকে । অষ্টক পূর্ণ হওয়ার জন্য এর আরও ৭টি ইলেকট্রনের প্রয়োজন । আর এতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ সম্ভব নয় । আর তাই সোডিয়াম সর্বশেষ শক্তিস্তরের এই ইলেকট্রনটি ত্যাগ করতেই চায় । অপর দিকে ক্লোরিনের সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৭টি ইলেকট্রন থাকে । আর একটি মাত্র ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারলে অষ্টক পূর্ণ হবে । তাই একটি ইলেকট্রনকে অধিক পরিমাণে আকর্ষন করে । এভাবে পর্যায় সারণির একই পর্যায়ের বাম থেকে ডান দিকে যেতে থাকলে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বাড়তে থাকে ।

এক্ষেত্রে ইলেকট্রনকে আকর্ষন করে মূলত মৌলটির নিউক্লিয়াস । পর্যায় সারণির একই গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে যেতে থাকলে পরমাণুর আকার বৃদ্ধির সাথে নিউক্লিয়াসের ইলেকট্রনকে আকর্ষন করার ক্ষমতা কমতে থাকে । ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতাও কমতে থাকে ।

ইলেকট্রন আসক্তি ও তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্য, ইলেকট্রন আসক্তি ও তড়িৎ ঋণাত্মকতার মধ্যে পার্থক্য

ইলেকট্রন আসক্তিতড়িৎ ঋণাত্মকতা
১. সর্বনিম্ন শক্তিস্তরে স্থিত কোনো বিচ্ছিন্ন গ্যাসীয় পরমাণুতে ১টি অতিরিক্ত ইলেকট্রন যুক্ত করার ফলে নির্গত শক্তির পরিমাণ কে ইলেকট্রন আসক্তি বলে।১. সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ অবস্থায় কোনো মৌলের পরমাণুর বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন জোড়কে আকর্ষণ করার প্রবণতাকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে।
২. এটি বিচ্ছিন্ন পরমাণুর ধর্ম।২. এটি সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ পরমাণুর ধর্ম ।
৩. ইলেকট্রন-ভোল্ট (পরমাণু প্রতি) বা কিলোক্যালরি/ মোল বা কিলোজুল মোল এককে প্রকাশ করা হয়।৩. এর কোনো একক নেই। বিভিন্ন স্কেলে সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।
৪. একটি নির্দিষ্ট মৌলের ইলেকট্রন-আসক্তির মান নির্দিষ্ট।৪. কোনো নির্দিষ্ট মৌলের পরমাণু কীরূপ জারণ অবস্থায় আছে বা কীরূপ সংকরায়ণ অবস্থায় আছে তার উপর তড়িৎ-ঋণাত্মকতার মান নির্ভর করে। যেমন, কার্বনের ক্ষেত্রে তড়িৎ-ঋণাত্মকতার ক্রম হলো: sp3-C> sp2-C> sp-C
৫. কোনো মৌলের পরমাণুর অ্যানায়ন গঠনের প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।. সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ দুটি পরমাণুর তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্য সংশ্লিষ্ট বন্ধনের পোলারিটি সম্পর্কে ধারণা দেয় ।
৬. পর্যায় বা গ্রুপ বরাবর ইলেকট্রন আসক্তির পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রেই অনিয়মিত (irregular)।৬. পর্যায় বা গ্রুপ বরাবর তড়িৎ-ঋণাত্মকতার পরিবর্তন প্রায় নিয়মিত (regular)।
ইলেকট্রন আসক্তি ও তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্য

তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান, বিভিন্ন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান, তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান চার্ট

No.ElementSymbolElectronegativity
1HydrogenH2.2
2HeliumHeno data
3LithiumLi0.98
4BerylliumBe1.57
5BoronB2.04
6CarbonC2.55
7NitrogenN3.04
8OxygenO3.44
9FluorineF3.98
10NeonNeno data
11SodiumNa0.93
12MagnesiumMg1.31
13AluminiumAl1.61
14SiliconSi1.9
15PhosphorusP2.19
16SulphurS2.58
17ChlorineCl3.16
18ArgonArno data
19PotassiumK0.82
20CalciumCa1
21ScandiumSc1.36
22TitaniumTi1.54
23VanadiumV1.63
24ChromiumCr1.66
25ManganeseMn1.55
26IronFe1.83
27CobaltCo1.88
28NickelNi1.91
29CopperCu1.9
30ZincZn1.65
31GalliumGa1.81
32GermaniumGe2.01
33ArsenicAs2.18
34SeleniumSe2.55
35BromineBr2.96
36KryptonKr3
37RubidiumRb0.82
38StrontiumSr0.95
39YttriumY1.22
40ZirconiumZr1.33
41NiobiumNb1.6
42MolybdenumMo2.16
43TechnetiumTc1.9
44RutheniumRu2.2
45RhodiumRh2.28
46PalladiumPd2.2
47SilverAg1.93
48CadmiumCd1.69
49IndiumIn1.78
50TinSn1.96
51AntimonySb2.05
52TelluriumTe2.1
53IodineI2.66
54XenonXe2.6
55CesiumCs0.79
56BariumBa0.89
57LanthanumLa1.1
58CeriumCe1.12
59PraseodymiumPr1.13
60NeodymiumNd1.14
61PromethiumPm1.13
62SamariumSm1.17
63EuropiumEu1.2
64GadoliniumGd1.2
65TerbiumTb1.22
66DysprosiumDy1.23
67HolmiumHo1.24
68ErbiumEr1.24
69ThuliumTm1.25
70YtterbiumYb1.1
71LutetiumLu1.27
72HafniumHf1.3
73TantalumTa1.5
74TungstenW2.36
75RheniumRe1.9
76OsmiumOs2.2
77IridiumIr2.2
78PlatinumPt2.28
79GoldAu2.54
80MercuryHg2
81ThalliumTl1.62
82LeadPb2.33
83BismuthBi2.02
84PoloniumPo2
85AstatineAt2.2
86RadonRnno data
87FranciumFr0.7
88RadiumRa0.89
89ActiniumAc1.1
90ThoriumTh1.3
91ProtactiniumPa1.5
92UraniumU1.38
93NeptuniumNp1.36
94PlutoniumPu1.28
95AmericiumAm1.3
96CuriumCm1.3
97BerkeliumBk1.3
98CaliforniumCf1.3
99EinsteiniumEs1.3
100FermiumFm1.3
101MendeleviumMd1.3
102NobeliumNo1.3
103LawrenciumLrno data
104RutherfordiumRfno data
105DubniumDbno data
106SeaborgiumSgno data
107BohriumBhno data
108HassiumHsno data
109MeitneriumMtno data
110DarmstadtiumDsno data
111RoentgeniumRgno data
112CoperniciumCnno data
113NihoniumNhno data
114FleroviumFlno data
115MoscoviumMcno data
116LivermoriumLvno data
117TennessineTsno data
118OganessonOgno data
তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | তড়িৎ ঋণাত্মকতা

Q1. মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে

Ans – তড়িৎ ঋনাত্মকতা হল এমন একটি রাসায়নিক ধর্ম যা কোন পরমাণু বা অন্য কোন রাসায়নিক পদার্থের ইলেকট্রন বা ইলেকট্রন ঘনত্বকে নিজের দিকে আকর্ষণ করার জন্য প্রকাশ করে।

তড়িৎ ঋণাত্মকতা মুলত পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা , কেন্দ্র থেকে যোজন ইলেকট্রনের দুরত্ব ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান যত বেশি হয় কোন রাসায়নিক পদার্থকে (পরমাণু, অণু বা মূলক) নিজের দিকে ইলেকট্রন ঘনত্বকে টেনে নেয়ার ক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পায়।

Q2. কোন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সবচেয়ে কম

Ans – সমস্ত ক্ষারীয় ধাতু এবং ভারী ক্ষারীয় আর্থ ধাতুর (Sr এবং Ba) ইলেক্ট্রোনেগেটিভিটির মান 1-এর নিচে রয়েছে।

Q3. কোন হ্যালোজেন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সবচেয়ে কম

Ans – আয়োডিনের সর্বনিম্ন বৈদ্যুতিক ঋণাত্মকতা রয়েছে।

Q4. কোন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সর্বাধিক

Ans – ফ্লুরিন (F) হল সবচেয়ে বেশি তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল।

Q5. সালফার এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

Ans – সালফারের প্রকৃত তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান ২.৫৮।

Q6. অক্সিজেনের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

Ans – পাউলিং স্কেলে অক্সিজেনের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান ৩.৫।

Q7. ক্লোরিনের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান, cl এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

Ans – ক্লোরিনের (Cl) এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান ৩.০।

Q8. নাইট্রোজেন এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান

Ans – লিনাস পলিং স্কেলে নাইট্রোজেনের মান 3.04।

Q9. তড়িৎ ঋণাত্মকতা কি

Ans – কোনো মৌলের অণুতে পরমাণু কর্তৃক শেয়ারকৃত ইলেক্ট্রনযুগলকে নিজের দিকে আকর্ষণ করার তুলনামূলক ক্ষমতাকে সেই মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে ।

Q10. f এর তড়িৎ ঋণাত্মকতা সবচেয়ে বেশি কেন

Ans – ফ্লোরিন প্রথমত পর্যায় সারণীর হ্যালোজেন গ্রুপের মৌল। এবং একই পর্যায়-২ এর সর্ব ডানের মৌল। দ্বিতীয়ত সারণীর একই পর্যায়ে যতই বাম থেকে ডান দিকে যাওয়া হয় পরমানুতে ইলেকট্রন ও প্রোটন সংখ্যা সমানভাবে বাড়তে থাকে৷ কিন্তু পরমানুতে স্তর সংখ্যা বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে ইলেকট্রন ও প্রোটনসমূহ সর্বাধিক নিকটে অবস্থান করে।

যেহেতু বিপরীতধর্মী চার্জসমূহ যতই নিকটে অবস্থা করে তাদের মধ্যে আকর্ষণ শক্তি ততই বেশি হয়৷ এই অতি আকর্ষনের দরুণ ফ্লোরিন থেকে এক মোল ইলেকট্রন মুক্ত করতে সবচেয়ে বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়৷ তাই এটি সর্বাধিক তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে
Exit mobile version