- অনুসর্গ কাকে বলে উদাহরণ দাও
- অনুসর্গ কয় প্রকার ও কি কি, অনুসর্গ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
- অনুসর্গের বৈশিষ্ট্য
- অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা
- অনুসর্গের অপর নাম কি, অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয় কেন
- বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য, অনুসর্গ ও বিভক্তির পার্থক্য, বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য
- উপসর্গ ও অনুসর্গ কাকে বলে
- উপসর্গ ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য
- শব্দজাত অনুসর্গ কাকে বলে
- FAQ | অনুসর্গ কাকে বলে
অনুসর্গ কাকে বলে উদাহরণ দাও
যে সমস্ত অব্যয় বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে পৃথকভাবে বসে শব্দ বিভক্তির মত কাজ করে বা কারক সম্বন্ধ নির্ণয় করে সেই সব অব্যয় গুলোকেই বলা হয় অনুসর্গ।
অনুসর্গ এর একটি নিজস্ব অর্থ আছে। বিভক্তির মত কারক-সম্বন্ধে নির্দেশ না করলে তাকে অনুসর্গ বলা যাবে না।
যেমন – পানে, তরে, মতো, প্রতি, বিনি, বিবদ, পাছে, সাথে, ভিন্ন, জন্য, দিয়ে ।
উদাহরণ: দড়ি দিয়ে বাঁধ , রামের চেয়ে শ্যাম ভালো।
অনুসর্গ কয় প্রকার ও কি কি, অনুসর্গ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
অনুসর্গকে মূলত প্রকৃতির বিচারে তিন ভাগে ভাগ করা যায় যথা-
- 1. বিশেষ্য অনুসর্গ
- 2. সর্বনাম অনুসর্গ
- 3. বিশেষণ অনুসর্গ
1. বিশেষ্য অনুসর্গ :
উদাহরণ – বই সহ বিদ্যালয়ে এসো , কুল দিয়ে আচার তৈরি করলাম, জসীম ছাড়া কেউ জানে না।
2. সর্বনাম অনুসর্গ :
উদাহরণ- আমার চেয়ে সে বুদ্ধিমান, তার কাছে টাকা আছে, ওদের পাশে থেকে সাহায্য করো।
3. বিশেষন অনুসর্গ :
উদাহরণ – মন্দের চেয়ে একটু ভালো, খারাপের মধ্যে খারাপ, দুঃগ বিনা সুখ লাভ হয় না ।
উৎস অনুসারে অনুসর্গের প্রকারভেদ :
উৎস অনুসারে অনুসর্গকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় যথা – 1. সংস্কৃত অনুসর্গ 2. সংস্কৃত বিবর্তিত অনুসর্গ 3. বিদেশি অনুসর্গ ।
1. সংস্কৃত অনুসর্গ :
যে সমস্ত শব্দ গুলি সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাকে সংস্কৃত অনুসর্গ বলে।যেমন- সহিত, কতৃক, অভিমুখে, অপেক্ষা, নিমিত্ত প্রভৃতি।
2. সংস্কৃত বিবর্তিত অনুসর্গ :
সংস্কৃত বিবর্তনের মাধ্যমে যেসব অনুসর্গগুলি বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাকে সংস্কৃতি বিবর্তন সম্ভব বলে। যেমন-অগ্ৰে >আগগে >আগে ।
3. বিদেশি অনুসর্গ :
যে সকল শব্দ বিদেশি ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় অনুসর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে বিদেশে অনুসর্গ বলে। যেমন- টাকার বদলে সম্পত্তি দাও, মজুরি বাবদ তোমাকে একশত টাকা দিলাম।
বিভক্তি ও সংযুক্তির বিচারে অনুসর্গের প্রকারভেদ :
বিভক্তি ও সংযুক্তির বিচারে অনুসর্গকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয় যথা
- 1. বিভক্তিহীন অনুসর্গ
- 2.বিভক্তিযুক্ত অনুসর্গ
উৎপন্নের বিচারে অনুসর্গের প্রকারভেদ :
উৎপন্নের বিচারে অনুসর্গকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয় যথা
- 1. ক্রিয়াজাত অনুসর্গ
- 2. নামজাত অনুসর্গ।
অনুসর্গের বৈশিষ্ট্য
- অনুসর্গগুলি মূলত একপ্রকার অব্যয় যার নিজস্ব অর্থ রয়েছে।
- অনুসর্গগুলি বিশেষ্য ও সর্বনামের পরে বসে অর্থবোধক সম্পর্ক তৈরি করে।
- অনুসর্গ হলো এক ধরনের ছদ্মবেশী বিভক্তি।
- পূর্ববর্তী পদের কারক নির্ণয়ে শব্দ বিভক্তির কাজ করে থাকে।
- পদের পরে বসে অন্য পদের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করে।
- বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে।
- অনুসর্গ দিয়ে কারকও চেনা যায়।
অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা
বাংলা ভাষায় অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। অনুসর্গ অব্যয় জাতীয় শ্বদ হলেও এটি বিভক্তির ন্যায় কাজ করে বাক্য গঠনে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে। এটি ছাড়া বাক্য গঠন অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটি ছাড়া কারক অর্থ প্রকাশ করতে পারেনা।
অনুসর্গের অপর নাম কি, অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয় কেন
যে সমস্ত অব্যয় ধাতুর সঙ্গে ব্যবহৃত না হয়ে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবহৃত হয়ে বিশেষ্যকে নিয়ন্ত্রিত করে তাদের কর্মপ্রবচনীয় বলে।অনুসর্গও একটি অব্যয় এবং স্বতন্ত্রভাবে বা আলাদাভাবে বসে বিশেষ্যকে নিয়ন্ত্রিত করে। তাই অনুসর্গের আর এক নাম কর্মপ্রবচনীয়।
বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য, অনুসর্গ ও বিভক্তির পার্থক্য, বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য
বিভক্তি | অনুসর্গ |
---|---|
বাক্যের বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে অন্বয় সাধনের জন্য নামপদ বা ক্রিয়াপদের সাথে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয় তাকে বিভক্তি বলে। | অপরদিকে বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলা হয়। |
বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই। | বিভক্তি ও অনুসর্গের প্রধান পার্থক্য হলো অনুসর্গের স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে। |
বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে। | অপরদিকে অনুসর্গ পদের পরে আলাদা ভাবে বসে। |
বিভক্তি কোনো পদ নয়। | অপরদিকে অনুসর্গ নিজে এক ধরনের অব্যয় পদ। |
বিভক্তি শব্দ ও ধাতু, উভয়ের সাথে যুক্ত হতে পারে। | অপরদিকে অনুসর্গ শুধুমাত্র পদের পরে বসে, ধাতুর পরে বসে না। |
বিভক্তি উদাহরণ হলো এ, তে, য়, র, এর, র, কে ইত্যাদি। | অনুসর্গের উদাহরণ হলো দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, থেকে, হইতে, বিনা প্রভৃতি। |
বিভক্তি ক্রিয়ার কালকে চিহ্নিত করে। | অনুসর্গ ক্রিয়ার কাল কে চিহ্নিত করে না। |
উপসর্গ ও অনুসর্গ কাকে বলে
উপসর্গ: যে সকল অব্যয় জাতীয় শব্দ ধাতু বা শব্দের (নামপদ)পূর্বে বসে ধাতুর অর্থে বৈচিত্র্য আনে অথবা নতুন শব্দ তৈরী করে সেই সব অব্যয় জাতীয় শব্দকে উপসর্গ বলে। অথাৎ যেসব অব্যয় শব্দের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, কিন্তু অন্য শব্দের আগে যুক্ত হয়ে সে শব্দের নতুন অর্থ সৃষ্টি করে, সেসব অব্যয় শব্দকেই উপসর্গ বলে। যেমন- যেমন— আ – কার = আকার, প্র – কার = প্রকার, উপ – কার = উপকার, অপ-কার = অপকার, প্রতি – কার = প্রতিকার ইত্যাদি।
তিন ধরনের উপসর্গ দেখা যায়।এরা হল–সংস্কৃত উপসর্গ ,বাংলা উপসর্গ এবং বিদেশী উপসর্গ।
অনুসর্গ: বাংলা ভাষায় দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, চেয়ে, থেকে, উপরে, পরে, প্রতি, মাঝে, বই, ব্যতীত, অবধি, হেতু, জন্য, কারণ, মতো, তবে ইত্যাদি শব্দ কখনো অন্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে স্বাধীনভাবে পদরূপে বাক্যে ব্যবহৃত হয় আবার কখনো কখনো শব্দবিভক্তির ন্যায় অন্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অর্থবৈচিত্র্য ঘটিয়ে থাকে। এদের অনুসর্গ বলা হয়। যেমন : কেবল আমার জন্য তোমার এ দুর্ভোগ। মনোযোগ দিয়ে শোন, শেষ পর্যন্ত সবার কাজে আসবে।
উপসর্গ ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য
উপসর্গ | অনুসর্গ |
---|---|
যেসব অব্যয় শব্দের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, কিন্তু অন্য শব্দের আগে যুক্ত হয়ে সে শব্দের নতুন অর্থ সৃষ্টি করে, সেসব অব্যয় শব্দকেই উপসর্গ বলে। | পক্ষান্তরে যেসব অব্যয় বিশেষ্য ও সর্বনামের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বলে। |
উপসর্গ নামবাচক বা কৃদন্ত শব্দের আগে বসে। | পক্ষান্তরে অনুসর্গ বিশেষ্য ও সর্বনাম শব্দের পরে বসে। |
উপসর্গ মূল শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে। | পক্ষান্তরে অনুসর্গ মূল শব্দের অর্থ ঠিক রাখে। |
উপসর্গ বিভক্তির কাজ করে না। | পক্ষান্তরে অনুসর্গ বিভক্তির কাজ করে। |
উপসর্গ কোনো শব্দের সঙ্গে পৃথকভাবে ব্যবহূত হতে পারে না। | পক্ষান্তরে অনুসর্গ পৃথকভাবে ব্যবহূত হয়। |
উপসর্গ নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে। | পক্ষান্তরে অনুসর্গ নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে না। |
শব্দজাত অনুসর্গ কাকে বলে
শব্দজাত বা নামজাত অনুসর্গ হল: দ্বারা, কর্তৃক, অপেক্ষা, বিনা, পাশে, উপরে, নিচে, মধ্যে, সাথে প্রভৃতি। — এই অনুসর্গগুলির মূলে বিভিন্ন শব্দ রয়েছে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | অনুসর্গ কাকে বলে
Q1. অনুসর্গ জোট কাকে বলে, অনুসর্গ জোট কি
Ans – এই জোটের শাসনকর্তা হল অনুসর্গ। যেমন- ‘সাদা দোতলা বাড়িটার সামনে’ জোটটিতে প্রধান হল ‘সামনে’ অনুসর্গটি।
Q2. অনুসর্গের অপর নাম পরসর্গ কেন
Ans – অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয়, সম্বন্ধীয় বা পরসর্গ।
Q3. অনুসর্গ প্রধান কারক কোনটি
উত্তর: করণ, নিমিত্ত ও অপাদান কারক হল অনুসর্গ প্রধান কারক।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।